বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আপাতত পদত্যাগ করছেন না। এমনটাই জানালেন সে দেশের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। শনিবার ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ইউনূস। সেই বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের ওয়াহিদউদ্দিন জানিয়েছেন, ইউনূস এবং অন্য সকল উপদেষ্টাই স্বপদে বহাল থাকছেন। কেউ পদত্যাগ করছেন না। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো এ কথা জানিয়েছে।
ঢাকায় শনিবার বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির একটি সভা ছিল। তা শেষ হওয়ার পরেই উপদেষ্টাদের বৈঠক শুরু হয়। সূত্রের খবর, শনিবারের এই বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল না। বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী, বেলা ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ ঢাকার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। তা প্রায় দু’ঘণ্টা চলেছে। বেরিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন বলেছেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। পদত্যাগ করবেন বলেননি। অন্য উপদেষ্টারাও থাকবেন। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা তা পালন করতে এসেছি।’’
আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বৈঠক সম্পূর্ণ হওয়ার কিছু আগে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে কী কী সংস্কার প্রয়োজন, তা নিয়েও কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি ইউনূসের পদত্যাগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরে বৈঠক শেষ হলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ইউনূসের পদত্যাগ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। উড়িয়ে দেন যাবতীয় জল্পনা।
বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা তথা রাজনৈতিক দল এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন, ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’য় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন নাহিদ। জানান, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হতাশ ইউনূস। নানা ভাবে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে তাঁর মত মিলছে না। কাজ করতে পারছেন না। তাই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। নাহিদের এই বক্তব্যের পরেই জল্পনা বেড়ে যায়। সূত্র উল্লেখ করে প্রথম আলো জানায়, ইউনূস নতুন করে অন্তর্বর্তী সরকার গড়ে নিতে বলেছিলেন। নিজে থাকতে চাননি আর। তবে আপাতত সেই জল্পনায় জল ঢাললেন তাঁর পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
পরে শনিবার বিকেলে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচারপ্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।