Advertisement
E-Paper

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মাটি ছোঁয়ার আগেই! কী কী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে ইজ়রায়েলের ঝুলিতে

সংঘাতের মুখে ইজ়রায়েলের প্রতিরোধের স্তম্ভ হয়ে উঠেছে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। মূলত তিনটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইজ়রায়েল। যার মাধ্যমে ইরানের অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ১৮:৪৮
ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মূলত তিনটি।

ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মূলত তিনটি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত শুক্রবার থেকে ইরানের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়েছে ইজ়রায়েলের। ইরানের হামলা প্রতিহত করতে ইজ়রায়েল ব্যবহার করছে তাদের শক্তিশালী অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলির অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মাটি ছোঁয়ার আগে। বর্তমানে ইজ়রায়েল এবং ইরান— উভয়েই ক্ষেপণাস্ত্র হানায় জর্জরিত। ইজ়রায়েলের আক্রমণের জবাবে পর পর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। আবার তেহরানকে লক্ষ্য করে ইজ়রায়েল থেকে মুহুর্মুহু উড়ে যাচ্ছে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র। এই সংঘাত পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকার আলোচনা চলছিল। তাতে সম্মত না হওয়ার কারণে ইজ়রায়েল ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে ইরানের উপর। সেই হামলায় মৃত্যু হয় ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। আমেরিকার মদতেই এই হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, ইরানে ‘আরও ভয়ঙ্কর হামলা’ হবে। প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়ে পাল্টা আঘাত হানে তেহরানও। এখনও পর্যন্ত ইরানে ২২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সরকার। ইজ়রায়েলে নিহতের সংখ্যা ২৮। আহত অবশ্য শতাধিক।

সংঘাতের মুখে ইজ়রায়েলের প্রতিরোধের স্তম্ভ হয়ে উঠেছে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। মূলত তিনটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইজ়রায়েল। সেগুলি হল— আয়রন ডোম, ডেভিড্‌স স্লিং অ্যান্ড অ্যারো সিস্টেম এবং আমেরিকার ‘থাড’ সিস্টেম।

আয়রন ডোম

ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে চর্চিত নাম আয়রন ডোম। মূলত নিচুস্তরের ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামানোর উদ্দেশ্যে আয়রন ডোম তৈরি করা হয়েছে। এর রেডারটি প্রথমে রকেটগুলিকে চিহ্নিত করে। তার পর সক্রিয় হয় এর ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’। শত্রুর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি কোন দিকে এগোচ্ছে, কোনও জনবহুল এলাকায় তা যেতে পারে কি না, ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’ দ্রুত তা নির্ণয় করে ফেলে। যদি দেখা যায় জনবহুল এলাকার দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে যাচ্ছে, তবে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আয়রন ডোম আকাশেই তা ধ্বংস করে দেয়। ইজ়রায়েলের বিভিন্ন প্রান্তে ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি সক্রিয়। প্রতিটিতে রয়েছে তিন থেকে চারটি করে লঞ্চার। আয়রন ডোম সহজে পরিবহণযোগ্য এবং মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুরো ব্যবস্থাটি প্রস্তুত করে ফেলা যায়। আয়রন ডোমের ইন্টারসেপ্টরগুলিও অত্যন্ত কার্যকর। ১৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের এই ইন্টারসেপ্টরগুলি প্রায় ১০ ফুট লম্বা। ওজন অন্তত ৯০ কিলোগ্রাম। আয়রন ডোমের ইন্টারসেপ্টর অন্তত ১১ কিলোমিটার ভারী বিস্ফোরক পদার্থ বহন করে। এর বিস্তৃতি ৪ কিলোমিটার থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ২০০৭ সাল থেকে আয়রন ডোম তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। ২০১১ সালে তা প্রথম ইজ়রায়েলে কার্যকর করা হয়।

ডেভিড্‌স স্লিং অ্যান্ড অ্যারো সিস্টেম

ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টায় ডেভিড্‌স স্লিং তৈরি করা হয়েছে, যা ১৮৬ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে সক্ষম। ডেভিড্‌স স্লিং-এর উপরে রয়েছে অ্যারো-২ এবং অ্যারো-৩ সিস্টেম। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে একেবারে শেষ মুহূর্তে ধ্বংস করার জন্য ‘ফ্র্যাগমেন্টেশন ওয়ারহেড’ ব্যবহার করে অ্যারো-২। এর বিস্তৃতি প্রায় ৫৬ মাইল এবং এটি সর্বোচ্চ ৩২ মাইল পর্যন্ত উঠতে পারে। অ্যারো-৩ ব্যবহার করে অত্যাধুনিক ‘হিট-টু কিল’ প্রযুক্তি। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগেই বাধা দেয় এই অ্যারো-৩। এ ছাড়া, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের জন্য অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজও ব্যবহার করে ইজ়রায়েল।

আমেরিকার ‘থাড’ সিস্টেম

ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে আমেরিকান সেনাবাহিনীর টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স, সংক্ষেপে টিএইচএএডি বা থাড ইজ়রায়েলে পাঠানো হয়েছিল। ইরানের হামলার মুখে ইজ়রায়েলের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ‘থাড’ পাঠিয়েছিলেন। পেন্টাগনের তৎকালীন ডেপুটি প্রেসসচিব জানিয়েছিলেন, ‘থাড’-এর মাধ্যমে ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল গুলি করে নামিয়ে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে পারবে ইজ়রায়েল। সেখানে প্রবাসী আমেরিকানেরাও সুরক্ষিত থাকবেন। অ্যারো-৩-এর মতোই ‘থাড’ ব্যবহার করে ‘হিট-টু কিল’ প্রযুক্তি। ১৫০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে তা আঘাত করতে সক্ষম। ‘থাড’-এ থাকে ৯৫ জন সৈন্য, ছ’টি ট্রাকবাহিত লঞ্চার। প্রতি লঞ্চারে থাকে আটটি করে ইন্টারসেপ্টর। এ ছাড়া, একটি রেডার, একটি অগ্নি নির্বাপক এবং একটি যোগাযোগের ইউনিট এতে থাকে।

Iran israel Iran Israel war Air Defence System THAAD Air Defence Iron Dome
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy