Advertisement
E-Paper

দিল্লি থেকে কোথায় যেতে পারেন শেখ হাসিনা? কী কী বিকল্প পথ খোলা আছে তাঁর জন্য? কী করবে ভারত

হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য হিসাবে একাধিক নাম উঠে এসেছে। কেউ বলছেন, তিনি ব্রিটেনে যাবেন। কেউ বলছেন, তিনি আমেরিকায় যেতে পারেন। আবার ফিনল্যান্ড কিংবা দুবাইয়ের মতো বিকল্পের নামও উঠছে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৩১
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছেন শেখ হাসিনা। আপাতত রয়েছেন দিল্লির কোনও গোপন আশ্রয়ে। ভারতে সাময়িক ভাবে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ভারত সরকারও জানিয়েছে, হাসিনাকে আপাতত কিছু দিন সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পর কী হবে? কোথায় যাবেন হাসিনা? তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? নানা জল্পনা রয়েছে তা নিয়ে। কোনও তরফেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

হাসিনা ঢাকা ছাড়ার পর অনেকে বলেছিলেন, তিনি লন্ডনে যেতে চান। বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে এসেছিলেন হাসিনা। সেই রেহানা নিজে ব্রিটিশ নাগরিক। তাঁর কন্যা টিউলিপ ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাংসদ। সেই কারণেই হাসিনাও ব্রিটেনে যাবেন বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ব্রিটেন সবুজ সঙ্কেত দেয়নি হাসিনাকে। তাই আপাতত ভারতেই আছেন তিনি।

হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য হিসাবে এর পর একাধিক নাম উঠে এসেছে। কেউ বলেছেন, তিনি আমেরিকায় যেতে পারেন। সেখানে থাকেন হাসিনার পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয়। কেউ কেউ আবার বলেছেন, ফিনল্যান্ড কিংবা দুবাইয়ের মতো বিকল্পও হাসিনার হাতে রয়েছে।

হাসিনা প্রসঙ্গে সরকারি ভাবে কিছু না জানালেও এনডিটিভিকে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জানানো হয়, ব্রিটেনে পৌঁছে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার অনুমতি কোনও ব্যক্তিবিশেষকে দেওয়া হয় না। ব্রিটেনের অভিবাসন আইনে সেই নিয়ম নেই। বরং কোনও ব্যক্তিবিশেষ দেশ ছাড়লে তাঁর নিকটবর্তী সবচেয়ে নিরাপদ দেশেই আশ্রয় চাওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে, হাসিনা ভারতের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন।

কয়েকটি অসমর্থিত সূত্রে দাবি করেছিল, হাসিনার ভিসার আবেদন বাতিল করে দিয়েছে আমেরিকা। সেই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তবে হাসিনা-পুত্র জয় জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটেন বা আমেরিকা, কোনও দেশেই রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি তাঁর মা। বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা তাঁর আগে থেকেই ছিল। তিনি চলতি শাসনের মেয়াদ শেষ হলেই অবসর নিতেন।

হাসিনার পুত্র যা-ই বলুন, বাংলাদেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে আমেরিকা আশ্রয় দেবে বলে মনে করছেন না অনেকেই। কারণ, হাসিনার আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খুব ‘মধুর’ ছিল না। এমনকি, কিছু দিন আগে বাংলাদেশে নির্বাচনে জিতে হাসিনার দল যখন ক্ষমতায় এল, সে সময়ে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরোধীদের অনুপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা।

ভারত কী করবে? হাসিনা অন্য দেশে যেতে না পারলে কি ভারতই স্থায়ী ভাবে তাঁকে আশ্রয় দেবে? উঠছে তেমন প্রশ্নও। তবে এ বিষয়ে ভারত দোটানায় রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা। হাসিনাকে স্থায়ী ভাবে আশ্রয় দিলে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে। পড়শি দেশ হিসাবে যা নয়াদিল্লির কাম্য নয়। ইতিমধ্যে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। ফলে নতুন সরকার গড়ে উঠলে তার সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনই ভারতের লক্ষ্য হবে। কিন্তু হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। অতীতে মুজিবুর রহমানের হত্যার সময় হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছিল নয়াদিল্লি। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ বার ভারত কী করবে, তা সময়ই বলবে।

হাসিনা ভারতে আসার পর মঙ্গলবার জয়শঙ্কর সংসদে জানিয়েছেন, হাসিনা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তাই তাঁকে আপাতত কিছু দিন সময় দিচ্ছে ভারত। তিনি পরবর্তী পরিকল্পনা স্থির করলে ভারত সরকারকে তা জানাবেন। নয়াদিল্লি সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে। উল্লেখ্য, হাসিনার কন্যা সাইমা ওয়াজেদ পুতুল কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, এখনও মায়ের সঙ্গে তিনি দেখা করেননি।

Sheikh Hasina Bangladesh Bangladesh Crisis Bangladesh Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy