আমেরিকায় ভারতীয় প্রৌঢ় চন্দ্রমৌলি নাগামাল্লাইয়াকে নৃশংস ভাবে খুনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কিউবার এক যুবক, যিনি আমেরিকায় বেআইনি ভাবে থাকছিলেন। এই নিয়ে সোমবার সকালে মুখ খুলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কেন চন্দ্রমৌলিকে গলা কেটে খুন করেছিলেন, তার পরে তাঁর ধরহীন মাথায় লাথি মেরেছিলেন, তা তদন্ত করে দেখছেন আমেরিকার পুলিশ। এর মধ্যে অভিযুক্ত কোবোস মার্টিনেজকে গ্রেফতারির একটি হলফনামা প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় কোবোস দাবি করেছেন, বচসার সময়ে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলছিলেন না হোটেলের ম্যানেজার চন্দ্রমৌলি। অন্য এক কর্মীর মাধ্যমে কথা বলছিলেন। তাতে নাকি মাথা ঠিক রাখতে পারেননি। যদিও এই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক অপরাধের মামলা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (আনন্দবাজার ডট কম তার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, আমেরিকার ডালাসের ছোট হোটেলের করিডোরে চন্দ্রমৌলিকে তাড়া করছেন কিউবান যুবক। প্রৌঢ়ের পরিবার তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কোবোস তাঁকে ধরে ফেলে চাপাতি দিয়ে তাঁর গলায় কোপ দেন। এর পরে চন্দ্রমৌলির পকেট থেকে মোবাইল এবং চাবির কার্ড বার করে নেন। তার পরে প্রৌঢ়ের গলায় কোপ দিতেই থাকেন যত ক্ষণ না দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়। সেখানেই থামেননি অভিযুক্ত। অন্য একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় চন্দ্রমৌলির কাটা মাথায় লাথি মারতে মারতে হেঁটে চলেছেন যুবক। তার পরে সেই মুণ্ড তুলে নিয়ে ফেলে দেন আবর্জনার পাত্রে।
৫০ বছরের চন্দ্রমৌলি আদতে কর্নাটকের বাসিন্দা ছিলেন। বেঙ্গালুরুর স্কুল এবং কলেজে পড়াশোনা করেন। ২০১৮ সালে আমেরিকায় পাড়ি দেন। প্রথমে থাকতেন সান অ্যান্টনিয়োতে। গত পাঁচ বছর ধরে ডালাসের একটি ছোট হোটেলে ম্যানেজারের কাজ করতেন তিনি। বন্ধুমহলে বব বলেই বেশি পরিচিত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। তাঁর স্ত্রী নিশা এবং ১৮ বছরের পুত্র গৌরবও ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
আরও পড়ুন:
অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরে একটি হলফনামা প্রকাশ করেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, জেরায় কোবোস দাবি করেছেন, কাজের সময় ম্যানেজার চন্দ্রমৌলির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সে সময় চন্দ্রমৌলি সরাসরি তাঁকে নির্দেশ না দিয়ে অন্য এক কর্মীর মাধ্যমে কথা বলছিলেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, চন্দ্রমৌলি অন্য এক কর্মীকে তাঁর নির্দেশ অনুবাদ করে কোবোসকে জানাতে বলেছিলেন। ভাঙা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে বারণ করেছিলেন তাঁকে। তাতেই নাকি রেগে গিয়েছিলেন কোবোস। আর তার জেরে ওই কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন।
ট্রাম্প সোমবার সমাজমাধ্যমে এই হত্যা নিয়ে লিখেছেন, ‘‘চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার খুনের সাংঘাতিক খবরটা আমি শুনেছি। ডালাসে তিনি এক জন সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন। স্ত্রী এবং সন্তানের সামনে তাঁর মাথায় কেটে নেওয়া হয়েছে। কাজটা করেছেন এক অবৈধ অভিবাসী, যিনি কিউবা থেকে এখানে এসেছিলেন। কখনও তাঁর এখানে ঢুকতে পারার কথা ছিল না। এর আগেও এই ব্যক্তি শিশুনিগ্রহ, গাড়ি চুরির মতো অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জো বাইডেনের অপদার্থ সরকার তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি। কিউবাও এঁকে চায় না।’’