মোদী-বাইডেন ফাইল চিত্র।
এগারো দিন আগে অর্থাৎ চলতি মাসের ১৬ তারিখ সেই অসহায় টুইটটি করেছিলেন সিরাম ইনস্টিটিউট-এর কর্তা আদার পুনাওয়ালা। যার মর্মার্থ, দেশে প্রতিষেধক উৎপাদন স্তিমিত হয়ে আসছে। আমেরিকা যেন কাঁচামাল রফতানি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে ভারতকে প্রয়োজনীয় রসদ পাঠায়। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও কিন্তু ভারতের কৌশলগত মিত্র আমেরিকা তথা বাইডেন প্রশাসনের এ নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসতে সময় লাগল ন’টি দিন। আর এই ন’দিনে প্রতিষেধক না পেয়ে ফিরে যাওয়া মানুষের তালিকা দীর্ঘতর হল ভারতে। হু হু করে ছড়াল সংক্রমণ।
কূটনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠছে, যেখানে ভারতে এই পর্যায়ের নরমেধ যজ্ঞ চালাচ্ছে কোভিড, সেখানে এত সময় লাগল কেন বাইডেন প্রশাসনের? মোদী সরকারের কূটনীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে একইসঙ্গে। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এই এক সপ্তাহের চেয়ে সামান্য বেশি সময়ে লাগাতার দৌত্য করে যাওয়া হয়েছে ওয়াশিংটনের বিভিন্ন পর্যায়ে। তার পরে স্থায়ী সমাধান পাওয়া গিয়েছে। এই দৌত্যে যে দুই ব্যক্তিকে সামনে রেখে এগিয়েছে ভারত তাঁরা, বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তরণজিত সান্ধু। তাঁরা লাগাতার কথা বলে গিয়েছেন সে দেশের বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং আমেরিকার কোভিড সংক্রান্ত কমিটির কর্তাদের সঙ্গে। সূত্রের খবর, আমেরিকার ভারতীয় সংগঠনগুলি এবং বাইডেন সরকারে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূতরাও যথেষ্ট চাপ তৈরি করেছিলেন সে দেশের সরকারের উপরে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আমেরিকার সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হওয়ার কারণ, মূলত তিনটি। প্রথমত, বাইডেনের কুর্শিতে বসার প্রথম একশো দিনে তাঁর দেশে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু দেশ থেকে করোনা অন্তর্হিত হয়নি। ২৪ এপ্রিলও দেখা গিয়েছে ৫০ হাজার আমেরিকাবাসী করোনা পজ়িটিভ। ফলে সে দেশের সরকার তাদের কাঁচামাল উৎপাদন সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল, আমেরিকার প্রতিষেধক সংস্থাগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে। দ্বিতীয়ত, বহু বছর সেনেট সদস্য এবং আট বছর ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা বাইডেন বরাবরই কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম মেনে চলেন। অর্থাৎ দেশের সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করে বিদেশনীতির প্রশ্নে চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায় না তাঁকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক কর্তারা। তৃতীয়ত, অতিমারি চলাকালীন আমেরিকার ভিতরে কোনও বিতর্ক এড়াতে চেয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তাই সব দিক খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত। সাউথ ব্লক আপাতত মনে করছে, সব ভাল যার শেষ ভাল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy