Advertisement
E-Paper

ওসামার সঙ্গে দেখা করতে আফগানিস্তানের গুহায়

এক সময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড শ্বশুরের মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় এসে রাজসাক্ষী হলেন বিন লাদেনের জামাই। বুধবার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সুলিমান আবু ঘেথ জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ৯/১১-য় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হানার কয়েক ঘণ্টা পরে আফগানিস্তানের এক গুহায় কী ভাবে দেখা হয়েছিল ওসামা-বিন-লাদেনের সঙ্গে। ওসামা তখন বলেছিলেন, “শুনেছো কী হয়েছে... আমেরিকায় সন্ত্রাস। ওটা আমরাই করেছি।”

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫১

এক সময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড শ্বশুরের মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় এসে রাজসাক্ষী হলেন বিন লাদেনের জামাই। বুধবার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সুলিমান আবু ঘেথ জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ৯/১১-য় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হানার কয়েক ঘণ্টা পরে আফগানিস্তানের এক গুহায় কী ভাবে দেখা হয়েছিল ওসামা-বিন-লাদেনের সঙ্গে। ওসামা তখন বলেছিলেন, “শুনেছো কী হয়েছে... আমেরিকায় সন্ত্রাস। ওটা আমরাই করেছি।”

মার্কিন নাগরিকদের হত্যা এবং আল কায়দার মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই আবু ঘেথের বিরুদ্ধে বিচার চলছে আমেরিকায়। শুনানিতে এমন নাটকীয় মোড় বদল আচমকাই। কাল আদালতে এসে হঠাৎই আবু ঘেথের আইনজীবী স্ট্যানলি কোহেন জানান, তাঁর মক্কেল সাক্ষ্য দিতে চান। প্রায় ফাঁকা আদালতের ঘরটাতে তখন হাতে গোনা কয়েকটা লোকের ঘোর কাটছে না।

খবর ছড়াতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি। নিমেষে ছোটখাটো ভিড় জমে যায়। বলে চললেন আবু গেথ। বিন লাদেনের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় কন্দহরে। কুয়েতের ছেলে শুনে ২০০১ সালের জুন মাসে তাঁকে ডেকে আলাপ করেন আল কায়দা প্রধান। ৯/১১-র সময় তখনও শ্বশুর-জামাই সম্পর্ক হয়নি। ওসামার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় অনেক পরে। আবুর দাবি, ৯/১১-র ষড়যন্ত্রে তিনি জড়িত ছিলেন না। শুধু আল কায়দা ট্রেনিং ক্যাম্পের ভিতরে-বাইরে একটা গুঞ্জন শুনেছিলেন, বড় কোনও নাশকতা ঘটতে চলেছে। তাই কুয়েতে নিজের বাড়িতে ছয় মেয়ে ও এক ছেলে-সহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। নিজে চলে আসেন আফগানিস্তানে। এর পর আল কায়দার পরিকল্পনামাফিক যা ঘটার তাই ঘটে। গোটা বিশ্বের চোখ যখন টিভিতে, রাতের অন্ধকারে আবুর ডাক পড়ে আফগানিস্তানের এক গুহায়। সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বললেন, লাদেনকে সে দিন বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিল। আমেরিকা কী ভাবে পাল্টা জবাব দেবে, তাঁর দুশ্চিন্তা ছিল মূলত তা নিয়েই। আবু বলেছিলেন, “আপনাকে না মেরে আর তালিবান রাজত্ব উচ্ছেদ না করে ক্ষান্ত হবে না আমেরিকা।” আবুর কথা অনুযায়ী, বিন লাদেন তাতে বলেছিলেন, “তুমি বড় বেশি নৈরাশ্যবাদী।”

এর পরও বিন লাদেন তাঁকে প্রস্তাব দেন, গোটা বিশ্বের উদ্দেশে বার্তা দিতে যে ভিডিও বানানো হচ্ছে, তাতে আল কায়দার মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য রাখতে। ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদীর তালিকায় নাম উঠে যাবে জেনেও তা করেছিলেন আবু। বললেন, “বিন লাদেনকে সম্মান করতাম, তা-ই করেছিলাম।”

যদিও আদালতে দাঁড়িয়ে আবু বারবার বলে গেলেন, ৯/১১-র জঙ্গি হানার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। ধর্মগুরু হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল তাঁকে। ২০০১ সালের ১২ সেপ্টেম্বরের সেই ভিডিওতে অবশ্য ওসামার পাশেই বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল আবুকে। আর একটা ভিডিওতে দেখা যায় মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে হুমকি দিচ্ছেন আবু, “আমেরিকায় বিমান-হানার দাপট কমবে না।”

সে দিনের সেই ধর্মীয় গুরুকে গত কাল দেখা গেল নীল শার্টে। তার উপর একটা কালো জ্যাকেট চড়ানো। হাবেভাবে চিন্তার লেশমাত্র নেই। গা ঝাড়া দিয়ে এক আরবি দোভাষীর সাহায্যে বললেন, “১১ সেপ্টেম্বরের পর দু’সপ্তাহ ধরে লাদেনকে সাহায্য করেছিলাম। তখন আফগানিস্তানের খুব করুণ দশা ছিল। আর আমার যাওয়ার জায়গাও ছিল না।” সে কথায় খানিক ব্যঙ্গের সুরেই সরকারি অ্যাসিট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন, “আপনি তা হলে বলতে চান, নিজের কোনও গাড়ি ছিল না বলে লোকজনকে ভয় দেখানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন?”

“মানে?” চমকে ওঠেন আবু। জানালেন, বিন লাদেনকে কাছ থেকে চিনতে চেয়েছিলেন। আল কায়দা প্রধান তাঁকে বলেছিলেন, প্রশিক্ষণ শিবিরের জীবন খুব কঠিন, রুক্ষ্ম। তাই আল কায়দার সদস্যদের ক্ষমাশীল মানুষে বদলাতে ধর্মীয় গুরু হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন জঙ্গি গোষ্ঠীতে।

“শ’য়ে শ’য়ে মার্কিন নাগরিককে ওরা নির্দয় ভাবে মেরে ফেলেছে জেনেও?” এ বার নিরুত্তর বিন লাদেনের জামাই।

barack obama afganistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy