৫০ দিন পরেও ধ্বংসাবশেষের হদিস নেই। মেলেনি কোনও জোরদার সূত্রও। কিন্তু এ ব্যর্থতার মাঝেও উঠে আসছে নয়া জল্পনা। তা হলে কি কোথাও নির্বিঘ্নেই অবতরণ করেছিল এমএইচ ৩৭০? কারণ, যদি সেটি ভেঙে পড়ে থাকে, তা হলে বিমানের ‘আপৎকালীন বেকন’ থেকে সঙ্কেত বেরোনোর কথা। কিন্তু উপগ্রহে তো সে রকম কিছুই ধরা পড়েনি। তা হলে কি এখনও আশা আছে? সম্প্রতি বিমানের ‘বেকন’ সম্পর্কিত এই রকমই এক গুচ্ছ প্রশ্নের তালিকা মালয়েশীয় প্রশাসনকে দিয়েছেন নিখোঁজ যাত্রীদের পরিজনেরা।
বেকন জিনিসটা ঠিক কী? সহজ ভাষায় বলতে গেলে বিমানের দেহে যে আলো লাগানো থাকে তাকেই বলে বেকন। তবে পোশাকি ভাষায় এটি ‘এমার্জেন্সি লোকেটর ট্রান্সমিটার’ বা ইএলটি নামেও পরিচিত। যদি কখনও বিমান ভেঙে পড়ে, সে ক্ষেত্রে মাটি বা জলে আছড়ে পড়তেই জরুরি সঙ্কেত পাঠাতে শুরু করবে বেকন। পাইলট বা অন্য কেউ চাইলেও সে সঙ্কেত বন্ধ করতে পারবেন না। সেখান থেকে তিন ধরনের শব্দতরঙ্গ নির্গত হতে শুরু করবে যার মধ্যে একটি উপগ্রহগুলির ধরতে পারার কথা। কিন্তু গত ৫০ দিনে এমন কিছুই ধরতে পারেনি উপগ্রহগুলি। আর এর ভিত্তিতেই পরিজনদের ক্ষীণ আশা, হয়তো খারাপ কিছু না-ও হয়ে থাকতে পারে ওই বিমানযাত্রীদের সঙ্গে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, বিশেষ কিছু অবস্থায় অকেজো হয়ে যেতে পারে ইএলটি। প্রথমত, যদি সংঘর্ষের ফলে সেটি বিমানের দেহ থেকে খুলে বেরিয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সে ক্ষেত্রে সঙ্কেত না-ও বেরোতে পারে। দ্বিতীয়ত, জলে ভেঙে পড়ার ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে যদি বিমানের কাঠামো ডুবে যায়, সে ক্ষেত্রে সঙ্কেত বেরোলেও তা জলস্তর পেরিয়ে উপরে পৌঁছবে না। এমএইচ ৩৭০-র ক্ষেত্রে এমন কিছুও হয়ে থাকতে পারে, ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষই জানিয়েছিলেন, ওই বিমানে অন্তত চারটি ইএলটি লাগানো ছিল। তার কোনওটিই কাজ করল না, এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক। তবে যদি বিমানটি সরাসরি সমুদ্রের গভীরে চলে গিয়ে থাকে অথবা পড়ে যাওয়ার ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে ডুবে গিয়ে থাকে, তা হলে আলাদা কথা। পরিজনেরা অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন ইএলটিগুলোর অবস্থা নিয়েও। আদৌ কি সেগুলো ঠিকঠাক কাজ করত কি না, তা-ও মালয়েশীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন নিখোঁজ চিনা যাত্রীদের আত্মীয়রা।
৫০ দিন পরেও অবশ্য সম্ভাবনা আর তত্ত্বকথাকেই আঁকড়ে ধরে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। কারণ, ব্লুফিন ২১-র তল্লাশি প্রায় শেষের মুখে। তাতেও যদি কিছুর খোঁজ না মেলে, তা হলে আরও বড় এলাকা জুড়ে তল্লাশির কথা ভাবছেন তদন্তকারীরা। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ দিয়েছিল যে প্রযুক্তি, প্রয়োজনে সেটিও কাজে লাগানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। ঘটনাচক্রে শনিবারই মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বিষয়টি নিয়ে তিনিও সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পরিবহণ মন্ত্রী হিশামুদ্দিন হুসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy