সাতসকালে তখন ফলের নিলামে ব্যস্ত ইসলামাবাদের বাজার। ঘড়িতে প্রায় ৮টা। আচমকা বিকট শব্দ। কালো ধোঁয়া আর ধুলোর আস্তরণ সরতেই চোখে পড়ল রক্তমাখা দেহের সারি। তাদের মাঝে তখনও কয়েক জন বেঁচে, বোঝা যাচ্ছে গোঙানির শব্দে। ট্রেন কামরায় বিস্ফোরণের পর দিন, বুধবার এ ভাবেই দিন শুরু করল পাকিস্তান।
পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময় বাজারে হাজির ছিলেন দেড়-দু’হাজার মানুষ। বিস্ফোরণের জেরে এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২৩। আহত শতাধিক। পুলিশের দাবি, বাজারে যেখানে ফলের নিলাম চলছিল তার কাছেই পেয়ারার একটি বাক্সে লুকিয়ে রাখা ছিল অন্তত ৫ কেজি ওজনের একটি বোমা। কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই ঘটনার দায় স্বীকার না করলেও সন্দেহের তির তালিবানের দিকেই। যদিও তালিবান মুখপাত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সংবাদ চ্যানেলের এক সাংবাদিক জুলকারনইন ইকবাল তখন ছিলেন বাজারের কাছেই। তাঁর কথায়, “চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চাপ চাপ রক্ত। একটি ভ্যানে দেখলাম ১২টি মৃতদেহ তুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছে। অথচ পুলিশ বা অ্যাম্বুল্যান্স, কেউ ধারে কাছে নেই।”
তাঁর মাত্র কয়েক হাত দূরে বিস্ফোরণ হলেও বেঁচে গিয়েছেন দিলওয়ার খান। সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “বিস্ফোরণের আওয়াজে কানে তালা লেগে গিয়েছিল। চোখের সামনে দেখলাম যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে হাত-পা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া লোকজন। অ্যাম্বুল্যান্স তখনও আসেনি। আমি নিজে ২০-২৫ জনকে গাড়ি ধরে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ট্যাক্সিগুলো সাহায্য না করলে যে কী হত কে জানে!”