শহরে ঢোকার মুখেই চোখে পড়ছে বিজয়নিশান! শাসককে পিছু হটিয়ে জঙ্গিরাই যে শহর দখল করেছে, তা বোঝাতে এ বার রাজপথে সেনাদের দেহ ঝুলিয়ে সেই ছবি প্রকাশ করল জঙ্গিরা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শহরে ঢোকার রাজপথে ঝুলছে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত আটটা মৃতদেহ। লোহার রডে উল্টো করে বাঁধা। পোশাক দেখে আঁচ করা যায়, দেহগুলো ইরাকের সেনাদের। আর তার পাশেই উড়ছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নামাঙ্কিত পতাকা। পথচলতি মানুষ অবশ্য সে দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না। স্বচ্ছন্দে সন্তানের হাত ধরে রাস্তা পেরোচ্ছেন অভিভাবক, স্বাভাবিক গতিতে চলছে গাড়ি। ব্যস্ত রাস্তার এই ছবি যেন আর পাঁচটা দেশের মতোই স্বাভাবিক!
ইরাকের বাগদাদ ও মসুলের মধ্যবর্তী সুন্নি অধ্যুষিত কিরকুক প্রদেশের হাইজা শহরের প্রবেশপথে আইএসআইএস-এর বিজয়নিশানের ছবি আর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, শুধু ভয় দেখাতে নয়, ধর্মরাজ্য স্থাপনের যুদ্ধে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই জঙ্গিগোষ্ঠীর এই পদক্ষেপ।
হাইজার এই ছবিগুলির সঙ্গেই পোস্ট করা হয়েছে আবু আল-রহমান নামে এক জঙ্গির ছবি। রক্তাক্ত মৃতদেহের সামনে হাসিমুখে বসে রয়েছে সে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই জঙ্গিকে আগেও বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে। সাধারণত জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা মুখ ঢেকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বেশির ভাগ সময়েই আবু আল-রহমান মুখ না ঢেকেই সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রাজপথের উপর এই ভাবে মৃতদেহ ঝুলিয়ে রেখে আসলে প্রশাসনকেই বার্তা দিচ্ছে জঙ্গিরা। গত ফেব্রুয়ারির শেষ এবং মার্চের শুরুতে যে ভাবে কুর্দ সেনা ইরাকে আইএস-এর বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের কোণঠাসা করেছে, এটা তারই প্রত্যুত্তর।
তবে হাইজায়ে ঝুলিয়ে রাখা মৃতদেহগুলি এখনও শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। কয়েকটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নিহতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তথ্য বলছে, আগেও হাইজায়ে হত্যালীলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে সেনাও। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বাগদাদ ও মসুলের মধ্যবর্তী এই শহর ক্রমশ জঙ্গিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইরাকে আইএস-এর ঘোষিত রাজধানী মসুলে মার্কিন যুদ্ধবিমান হামলা চালানোর পরে হাইজা শহরটিকেই দ্বিতীয় ঘাঁটি বানাতে চাইছে জঙ্গিগোষ্ঠী। একের পর এক আগ্রাসন এবং ক্ষমতা জাহির করতেই তাই রাজপথে মৃতদেহ ঝুলিয়ে এই জয়-পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy