Advertisement
E-Paper

স্বাধীনতা দিবসে আক্রান্ত পাকিস্তান

আশঙ্কা ছিল সরকার-বিরোধী দু’টি মিছিল নিয়ে। সেখানে এখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না হলেও স্বাধীনতা দিবসের শেষ রাতে জঙ্গি হানার শিকার হল পাকিস্তান। স্বাধীনতা দিবসের দিনে লাহৌর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত সরকার-বিরোধী মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান এবং পাকিস্তান আওয়ামি তাহরিক (পিএটি) নেতা মৌলবি তাহির-উল-কাদরি। গোলমালের আশঙ্কায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে নওয়াজ শরিফ সরকার। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের শেষ রাতে বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় সামাঙ্গি বায়ুসেনা ঘাঁটি ও বিমানবন্দরে হামলা চালাল জঙ্গিরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১৩
মিছিলে ইমরান খান। বৃহস্পতিবার লাহৌর থেকে ইসলামাবাদের পথে। ছবি: এএফপি।

মিছিলে ইমরান খান। বৃহস্পতিবার লাহৌর থেকে ইসলামাবাদের পথে। ছবি: এএফপি।

আশঙ্কা ছিল সরকার-বিরোধী দু’টি মিছিল নিয়ে। সেখানে এখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না হলেও স্বাধীনতা দিবসের শেষ রাতে জঙ্গি হানার শিকার হল পাকিস্তান।

স্বাধীনতা দিবসের দিনে লাহৌর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত সরকার-বিরোধী মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান এবং পাকিস্তান আওয়ামি তাহরিক (পিএটি) নেতা মৌলবি তাহির-উল-কাদরি। গোলমালের আশঙ্কায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে নওয়াজ শরিফ সরকার। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের শেষ রাতে বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় সামাঙ্গি বায়ুসেনা ঘাঁটি ও বিমানবন্দরে হামলা চালাল জঙ্গিরা।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, সামাঙ্গি বায়ুসেনা ঘাঁটির কাছে একটি নালা থেকে হামলা রকেট ছোড়ে জঙ্গিরা। তার পরেই শুরু হয় গুলিবর্ষণ। গ্রেনেডও ছোড়ে হামলাকারীরা। সেনার দাবি, নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। লড়াইয়ে এক জঙ্গি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন তিন নিরাপত্তাকর্মী।

কোন জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। ইমরান ও কাদরির মিছিলকে ঘিরে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তপ্ত পাকিস্তান। তাঁদের দু’জনেরই দাবি, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত।

ইমরানের আরও দাবি, এখনই তদারকি সরকার গঠন করে ভোট করতে হবে। দু’জনের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দিন রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। হেঁটে, লরিতে-ম্যাটাডোরে তাঁরা এগোচ্ছেন লাহৌর থেকে ইসলামাবাদের দিকে।

এই কর্মসূচিকে ‘আজাদি যাত্রা’ আখ্যা দিয়ে মিছিল শুরুর আগে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়ে ইমরান বলেন, “যদি আপনাদের সন্তানদের জন্য সত্যিকারের স্বাধীনতা চান, তা হলে মিছিলে পা মেলান।” ইমরানের দলের নেতা-কর্মীদের এই ‘আজাদি পদযাত্রা’ শুরু হয় জামান পার্ক থেকে। যোগ দেন মহিলা এবং শিশুরাও। কাদরির অনুগামীরা ‘ইনকিলাব যাত্রা’ শুরু করেন মডেল টাউন থেকে। কাদরির কথায়, “সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের এই পদযাত্রা।”

দুই নেতাই আশ্বাস দিয়েছেন তাঁদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। তবু কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি সরকার। সকাল থেকেই রাজধানী ইসলামাবাদে মোতায়েন করা হয় সেনা। লাহৌর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত রাস্তা মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়ে। কিছু এলাকায় মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাঁচ এবং তার বেশি লোকের জমায়েত।

সম্প্রতি পঞ্জাব প্রদেশে কাদরির অনুগামীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কিছু পুলিশকর্মী। এই কারণে কাদরির বিরুদ্ধে খুনের মামলাও করা হয়েছে। তাই তাঁকে মিছিলের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সংশয়ে ছিল প্রশাসন। পরে অবশ্য ইমরান ও কাদরি-দু’জনেই অনুমতি পেয়েছেন।

পঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর চৌধুরি সারওয়ার বলেন, “তাঁর অনুগামীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে, এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই কাদরিকে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” সেই সঙ্গে সারওয়ারের বক্তব্য, “ইমরান ও কাদরিদু’জনকেই পদযাত্রার অনুমতি দিয়ে প্রশাসন বড় মনের পরিচয় দিয়েছে। তাঁদের অনুগামীদেরও সেই কথা মাথায় রেখে শান্তি রাখা উচিত।”

কিন্তু এত কিছুর পরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না প্রশাসন। কারণ পাক গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, কাদরির অনুগামীদের পুলিশ বা সেনা বাধা দিতে গেলে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শুরু হতে পারে। পুলিশি ঘেরাটোপ ভাঙতে শিশু এবং মহিলাদের কাজে লাগানোরও ছক রয়েছে কাদরির অনুগামীদের। ফলে সতর্ক প্রশাসন।

imran khan pakistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy