রাষ্ট্রপুঞ্জ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় তৈরি বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ সমীক্ষা বলছে, স্বামীর হাতে নির্যাতিত হলেও ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ স্ত্রী তাঁদের উপর নির্যাতনের কথা কখনওই অন্য কাউকে জানান না।
অন্য দিকে ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ মহিলা স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নির্যাতনের কথা প্রথমত জানিয়েছেন নিজের পরিবার, শ্বশুরবাড়ির লোকজন বা প্রতিবেশীদের কাছে। এর পর পুলিশ, চিকিৎসক, ধর্মীয় বা এলাকার মুরব্বি পর্যায়ে যাঁরা জানান, তাঁদের সংখ্যা খুবই নগন্য।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১৫’ শীর্ষক দ্বিতীয় সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: গুলশন হামলার অস্ত্র সরবরাহকারী বড় মিজান ঢাকায় গ্রেফতার
রিপোর্ট বলছে, নির্যাতনের পর আইনি সহায়তা নিয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। বর্তমানে বিবাহিত নারীদের ৮০ দশমিক ২ শতাংশ জীবনের কোনেও না কোনেও সময় স্বামীর হাতে কোনেও না কোনেও ধরনের নির্যাতনের শিকার। ২০১১ সালে প্রথম সমীক্ষায় এ সংখ্যা ছিল ৮৭ দশমিক ১ শতাংশ।
নির্যাতনের কথা গোপন করার দিক থেকে বরিশাল এগিয়ে। বরিশালের প্রায় ৭৬ শতাংশ নারী কাউকে জানাননি নির্যাতনের কথা।
৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ নারী কাউকে জানানোর প্রয়োজন বলেই মনে করেননি নির্যাতনের কথা। নির্যাতনের পর পুলিশের কাছে যান ১ দশমিক ১ শতাংশ নারী। স্থানীয় নেতাদের কাছে যান ২ দশমিক ১ শতাংশ আর এনজিওর সহায়তা চেয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
নির্যাতনের কথা গোপন করার কারণগুলোও তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে। নির্যাতনের পর পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ, স্বামীর কাছে আরও বেশি নির্যাতনের ভয়ে ১২ শতাংশ, সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ এবং লজ্জায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী প্রকাশ করেননি নির্যাতনের কথা।
২০১৫ সালের ১৩ থেকে ২২ আগস্ট মাঠপর্যায়ে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাধান্য দেয়া হয়েছে শারীরিক, যৌন, অর্থনৈতিক, স্বামীর নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ বা মনোভাব এবং আবেগজনিত নির্যাতনকে। ১৫ বছরের বেশি বয়সী ২১ হাজার ৬৮৮ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।