Advertisement
E-Paper

গাড়ি তৈরি করতে চাইছে বাংলাদেশ, লক্ষ্য রফতানিও

গ্যাস, তেলে গাড়ি চলে। জ্বালানি অফুরন্ত হলে রাস্তা না ফুরোলেও ক্ষতি নেই। গাড়ি আছে, রাস্তা নেই, বিপদটা তখন। যান যাবে কোথায়। বাহন স্তব্ধ। যাতায়াত বন্ধ। সড়ক থেকেও না থাকার মতো হলেও সংকট। এবড়ো খেবড়ো, উঁচু নিচু খানা খন্দে ভরা বিপজ্জনক সরণী।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ১৬:০৯

গ্যাস, তেলে গাড়ি চলে। জ্বালানি অফুরন্ত হলে রাস্তা না ফুরোলেও ক্ষতি নেই। গাড়ি আছে, রাস্তা নেই, বিপদটা তখন। যান যাবে কোথায়। বাহন স্তব্ধ। যাতায়াত বন্ধ। সড়ক থেকেও না থাকার মতো হলেও সংকট। এবড়ো খেবড়ো, উঁচু নিচু খানা খন্দে ভরা বিপজ্জনক সরণী। ঢিমেতালে গেলেও দুর্ঘটনা এড়ানো দায়। এসব ঝঞ্ঝাটের ধকল বহু কাল পেরিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে অন্য শহরে যোগাযোগের রাস্তা কোনওটাই সরু নয়। বেশির ভাগই চার লেনের। চাকা গড়ায় অবাধে। বাধায় ঠেকে না। ড্রাইভারকে সাবধান হতে হয়। এমার্জেন্সি ব্রেক কষলেও হড়কে অনেকটা দূর চলে যেতে পারে। পদ্মা সেতুটা তৈরি হলে কথাই নেই। নতুন রাস্তা সংযোজিত হবে অতিরিক্ত ধমনীর মতো। পরিবহণের চালচিত্রে উজ্জ্বলতায় ঝলসাবে। আলোয় ভাসবে আড়ালে থাকা শহরগুলো। যারা অবহেলায় অভিমানে দূরে পড়েছিল তারাও জোর গলায় বলবে ঢাকা একা নয়, আমরাও আছি। পাল্লা দিতে পারি যে কোনও আন্তর্জাতিক নগরীর সঙ্গে।

রাস্তার অলঙ্কার গাড়ি। না থাকলে পথ খালি। আগে যখন গাড়ি ছিল না, মানুষ দূরদূরান্তে যেত হেঁটে হেঁটে, তখন কোথায় রাজপথ। তার দরকারই বা কী। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত হাঁটতে হাঁটতে দেশ থেকে দেশান্তরে যাতায়াত। দুর্গম পথে দুর্গতির শেষ নেই। বিপদের উঁকি পদে পদে। রাস্তা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হলে জন্তু জানোয়ার। জনপদ ছুঁয়ে গেলে চোরডাকাত। যাত্রা শুরু করে গন্তব্যে পৌঁছনোর গ্যারান্টি ছিল না। বাঁচলে তবে না যথাস্থানে যাওয়া। সে সব দিন আর নেই। বিলম্বিত লয়ের বাহন পাল্কি, গোরুরগাড়ি, রিক্সার পালা শেষ। ঘোড়াও উধাও। দু'পা দূরত্বে যেতেও মোটরকার। রূপে গুণে গতিতে নজর কাড়া। এ ওকে টেক্কা দিতে তৈরি। নতুন নতুন মডেলের লাইন। একটা অন্যটাকে টপকাচ্ছে। নতুন পুরোন হতে সময় নিচ্ছে না। গাড়ির গতির হিসেব সেই ঘোড়াতেই। যে কেনে সে আগেই জেনে নেয় গাড়িটার হর্স পাওয়ার কত।

আরও খবর: হাসিনা-টেরেসার সখ্যে বাংলাদেশ-ব্রিটেনে নব সমন্বয়ের সেতু

গাড়ির কদর বিশ্ববাজারে যথেষ্ট। ইউরোপ-আমেরিকায় গাড়ির প্রতিযোগিতা তীব্র। গুণে মানে একে অন্যকে বাজার থেকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে চাইছে। পোশাক পাল্টানোর মতো লোকে গাড়ি বদলাছে। কী করবে গাড়ি শুধু যাতায়াতেরই বাহন নয়। শৌখিনতা বা সখই শুধু নয়। স্ট্যাটাস সিম্বলও। অনেকের কাছে জীবনভর একই গাড়ি চড়াটা অসম্মানের। কেনার দু'দিনেই পুরোন। চাই নিত্য নতুন। গাড়ির চাহিদা বাড়ছে হু হু করে। কথাটা মাথাই রেখেই গাড়ি শিল্পে নবদিগন্ত উন্মোচন করতে চাইছে বাংলাদেশ। গাড়ি তৈরিতে নজর দেবে বেশি। এমন গাড়ি হবে যা দেখে চমকাবে সবাই। যেমন গুণ তেমন গতি। এক বার নজরে এলে চোখ ফেরান যাবে না। বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোশারা হোসেন জানিয়েছেন, দেশেই গাড়ি তৈরি হবে। যা স্বদেশি চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রফতানি করা যাবে। মায়ানমার, ভুটানে ভাল মার্কেট পাওয়া যাবে। আস্তে আস্তে অন্য প্রতিবেশী দেশের বাজার ধরা হবে।

বিদেশ থেকে রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানি করেই বাংলাদেশের গাড়ির চাহিদা মেটান হয়। তার আর দরকার হবে না। এখন ৯০ শতাংশ গাড়ি আসে ভারত থেকে। আগে আসত ব্রিটেন, জাপান বা অন্য দেশের তৈরি গাড়ি। বাংলাদেশের বাজারে অশোক লেল্যান্ড, বাজাজ অটো, হিরো, হন্ডা, মাহিন্দ্রা, মারুতি-সুজুকি, টাটা মোটরস, ইয়ামহা, টিভি এস মোটর সাইকেল ভালই চলে। বাংলাদেশ গাড়ি তৈরি শুরু করলে ছবিটা বদলাবে। নিজেরাই নির্মাণ করবে, নিজেরাই চড়বে। রফতানি করে মোটা অঙ্কের ডলারও ঘরে আসবে।

Automobile Industry Cars Export Import Development
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy