Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশের নির্বাচনী উৎসবে উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ দেখল গণতন্ত্র

ভোট এল, গেল, ফল বেরোল। অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠল না। শাসক বিরোধীরা একবাক্যে জানাল, সব ঠিক। কোথাও বেলাইন নেই। গোলমালে মানুষের মন চাপা পড়েনি। সদর্পে সবাই ভোট দিয়েছে। জিতিয়েছে পছন্দের প্রার্থীকে। যারা জিতেছে উল্লাস তাদের। পরাজিতরা খুঁজছে হেরে যাওয়ার কারণ। ঘর গুছিয়ে ফের লড়াইয়ের প্রস্তুতি। সুষ্ঠু অবাধ ভোটের চ্যালেঞ্জ ছিল নির্বাচন কমিশনের। কৃতিত্বের সঙ্গে তারা পাস। মার্কশিটে একশোয় একশো।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ১৫:৩০
ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

ভোট এল, গেল, ফল বেরোল। অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠল না। শাসক বিরোধীরা একবাক্যে জানাল, সব ঠিক। কোথাও বেলাইন নেই। গোলমালে মানুষের মন চাপা পড়েনি। সদর্পে সবাই ভোট দিয়েছে। জিতিয়েছে পছন্দের প্রার্থীকে। যারা জিতেছে উল্লাস তাদের। পরাজিতরা খুঁজছে হেরে যাওয়ার কারণ। ঘর গুছিয়ে ফের লড়াইয়ের প্রস্তুতি। সুষ্ঠু অবাধ ভোটের চ্যালেঞ্জ ছিল নির্বাচন কমিশনের। কৃতিত্বের সঙ্গে তারা পাস। মার্কশিটে একশোয় একশো।

সব গণতান্ত্রিক দেশেই তো নির্বাচন হয়। এমন নিখাদ ভোট কটা দেশে হতে পারে। গণতন্ত্রের বড়াই করে আমেরিকা। সেখানেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিতর্ক ঘুরপাক খেয়েছে। নতুন রাষ্ট্রপতিকে মানতে দ্বিধা। লজ্জায় গণতন্ত্র। ২০১৭-তে বিশ্ব নতুন বছরে পা দেওয়ার আগে ডিসেম্বরে বাংলাদেশে দুটো ভোট হয়েছে। একটা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন বা নাসিক-এ, অন্যটা জেলা পরিষদে। এতে সংসদীয় নির্বাচনের মতো সরকার অদল বদলের কথা না থাকলেও, গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণে এই দুটি নির্বাচনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। নাসিক-এর নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-র সংশয় ছিল। অবাধ ভোট না হওয়ার কারণ দেখিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ভোট মিটতেই তাদের মুখে কোনও কথা নেই। কোনও অভিযোগের আঙুল তোলেনি নির্বাচন কমিশনের দিকে। মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থী পরাজিত হলেও বলেনি, এ সব কমিশনের কারসাজি। কী করে বলবে! ভোট হয়েছে নির্বিঘ্নে। ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে শান্তিতে ভোট দিয়েছেন। ছিটেফোঁটা ত্রুটি বিচ্যুতির খবর কোথাও নেই। নির্বাচনী সংঘর্ষ দুঃস্বপ্নেও উঁকি মারেনি। শাসক দল আওয়ামি লিগের প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী ১,৭৫,৬১১ ভোট পেয়ে ফের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হারিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী সাথাওয়াত হোসেন খানকে। তাঁর ঝুলিতে ৯৬,০৪৪ ভোট। কল্যাণ পার্টি তাঁকে সমর্থন করলেও জয় থেকে অনেকটা দূরেই থেকেছেন। বিপ্লবী ওয়ার্কর্স পার্টি, এলডিপি, ইসলামি আন্দোলন, ইসলামি ঐক্য জোটও মেয়র পদে লড়েছে। লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছে হুসেইন মোহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি বা জাপা। লড়লে ভাল করত। জনসমর্থনটা যাচাই করতে পারত। তারা অবশ্য কাউন্সিলর পদে লড়েছে। সেখানে দলীয় প্রতীক লাঙল ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির শফিউদ্দিন প্রধান ঠেলাগাড়ি প্রতীকে জিতেছেন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির সইফুদ্দিন আহমেদ দালাল প্রধান লাটিম প্রতীকে জয়ী হয়েছেন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির আফজাল হোসেন ঘুড়ি চিহ্নে জয়ের মুখ দেখেছেন। ৫ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে শারমিন হাবিব বিন্নি বই প্রতীক নিয়ে জিতেছেন। কাউন্সিলর পদে আওয়ামি লিগের চেয়ে একটি আসন বেশি পেয়েছে বিএনপি। আওয়ামি লিগ ১১, বি এন পি ১২।

জেলা পরিষদ নির্বাচনটা একটু অন্য রকম। সর্বসাধারণ ভোট দেয় না। ভোট দানের অধিকার ৬৭ হাজার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির। সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা, পুরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়র, চেয়ারম্যান বা সদস্যরাই ভোটার। তাঁদেরই নির্বাচিত করার কথা, ৬৪ চেয়ারম্যান, ৯১৫ সাধারণ সদস্য, ৩০৫ সংরক্ষিত নারী সদস্য। আওয়ামি লিগ ছাড়া অন্য দল প্রার্থী দেয়নি। নির্বাচকমণ্ডলীতে আওয়ামি লিগই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই তারা সরে থেকেছে। জেলা পরিষদ গঠনের ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো নির্বাচন হল। পার্বত্য তিন জেলা বাদে আরও দুই জেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভোট হয় নি। ভোট হয়েছে ৬৪টির মধ্যে ৫৯ জেলার। অনেক জায়গাতেই লড়াই ছিল আওয়ামি লিগের মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে দলেরই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীর। ১৩ বিক্ষুব্ধ প্রার্থী জয় ছিনিয়েছেন। একমাত্র নীলফামারীতে জিতেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। ভোটের পর কাজ করার পালা। চলছে তারই প্রস্তুতি। নির্বাচন উৎসবের পর গণতন্ত্র মাথা তুলছে নতুন উদ্যমে।

আরও পড়ুন- বাংলাদেশে স্কুল পাঠ্য কাণ্ডে তদন্ত কমিটি, সাসপেন্ড দুই কর্তা

bangladesh Election in Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy