পেরিয়ে গিয়েছে ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা। অথচ জমা পড়া বাতিল পুরনো নোটের একাংশ এখনও স্টেট ব্যাঙ্কের ঘরে পাঠাতে পারেনি জেলার বেশ কিছু ডাকঘর। বিষয়টি নিয়ে এসবিআইয়ের সঙ্গে চাপান-উতোরের মধ্যেই বল এখন পুরোপুরি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোর্টে। তারা আলাদা করে নির্দেশ দিলে তবেই জমা নেওয়া যাবে ওই বাতিল নোট, সাফ জানিয়ে দিয়েছে আরবিআই।
পুরনো নোট ব্যাঙ্কে নেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। কিন্তু এখনও রাজ্যের তিনটি প্রধান ডাকঘর (হেড পোস্ট অফিস) এবং একটি উপ-ডাকঘরে (সাব পোস্ট অফিস) বাতিল পাঁচশো, হাজারের নোটে প্রায় ১৮৬ কোটি টাকা জমা পড়ে। নিয়মের গেরোয় ডাকঘরগুলি তা জমা দিতে পারছে না স্টেট ব্যাঙ্কে। এসবিআই-ও নিজের থেকে তা জমা নিতে অপারগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে দু’পক্ষই তাকিয়ে আরবিআই-এর দিকে।
চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল) অরুন্ধতী ঘোষ জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক কর্তাদের পাশাপাশি বিষয়টি তাঁরা যোগাযোগ মন্ত্রককে জানিয়েছেন। মন্ত্রকও এ নিয়ে আরবিআই-এর সদর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। অন্য দিকে, স্টেট ব্যাঙ্কের সিজিএম (কলকাতা সার্কেল) পার্থপ্রতিম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘শীর্ষ ব্যাঙ্কের নির্দেশ ছাড়া ওই বাতিল নোট নিতে পারি না। তার অপেক্ষায় রয়েছি।’’ রফাসূত্র নিয়ে আরবিআই কী ভাবছে, কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, তা জানতে চেয়ে ই-মেল পাঠানো হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও জবাব মেলেনি।
সমস্যাটি প্রথম মাথাচাড়া দেয় নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার প্রধান ডাকঘরগুলিতে। যাদের আওতায় আছে বহু ছোট ডাকঘর। ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী পুরনো নোট নাকচের পরে ব্যাঙ্কের মতো ডাকঘরগুলিতেও চলছিল সেগুলি জমা ও বদল। সেই সূত্রে ছোট ডাকঘরে জমা পড়া বাতিল নোট চলে যায় সংশ্লিষ্ট প্রধান ডাকঘরে। তাদের আবার সেই টাকা স্টেট ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা করার কথা। চাপান-উতোর শুরু এখান থেকেই।
ডাক বিভাগের অভিযোগ, স্টেট ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলি গোড়ায় ‘চেস্ট’-এ জায়গার অভাব ও পরে বিপুল নোট গোনার মতো পরিস্থিতি না-থাকার যুক্তিতে গড়িমসি করাতেই ডাকঘরগুলি নির্দিষ্ট সময়ে ১৮৬ কোটি টাকা মূল্যের বাতিল নোট জমা দিতে পারেনি। সময়সীমা পেরোনোয় এখন আর তা হচ্ছে না। এসবিআই অবশ্য গোড়ায় কিছু সমস্যার কথা মানলেও তাদের দাবি, সময়ে পুরনো নোট জমা দিয়েছে রাজ্যের প্রায় ৯৯% ডাকঘর। যারা পারেনি তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও ছিল। অভিযোগ তোলা প্রধান ও উপ ডাকঘরগুলি সেই পথে না-হাঁটাতেই জট পাকিয়েছে। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের মধ্যে এ বার রফাসূত্র বাতলাতে পারে একমাত্র আরবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy