চতুর্দশ অর্থ কমিশন বিনা শর্তে অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮৭ শতাংশে নিয়ে যায়। প্রতীকী ছবি।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা রাজ্যের হাতে এলেও, তার অর্ধেক খরচ না হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্তাদের অভিযোগ, পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির অনুদানের ক্ষেত্রে অর্থ কমিশন এমন শর্ত বেঁধে দিয়েছে যে, অনুদান মেলাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় সরকার পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির জন্য বিশেষ অনুদানের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের শীর্ষ-কর্তাদের অভিযোগ, অতীতে এই অনুদানের অর্থ পুরোটাই সরাসরি পঞ্চায়েত-পুরসভাগুলি পেত। তাতে কোনও শর্ত ছিল না। ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন প্রথম শর্ত আরোপ করে। তার পরেও ৬৫ ভাগ অনুদান বিনা শর্তে পাওয়া যেত। বাকি ৩৫% নির্ভর করত কাজের সাফল্যের উপরে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন বিনা শর্তে অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮৭ শতাংশে নিয়ে যায়। বাকি ১৩% অনুদান পুরসভাগুলির নিজস্ব আয় বাড়ানো, পরীক্ষা করা হিসেব-নিকেশ জমা দেওয়ার মতো কাজের মাপকাঠির উপর নির্ভর করছিল। তাতেই দেখা যায়, এই শর্তও পুরোপুরি মানতে না পারায় চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সময়কাল, ২০১৫ থেকে ২০২০-র মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাগুলি মাত্র দু’বছর শর্তাধীন অনুদানের অর্থ পেয়েছে। তা-ও অর্ধেক।
নবান্নের কর্তাদের অভিযোগ, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন আরও কঠিন শর্ত আরোপ করেছে। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৬, এই সময়কালে পুরসভা-পঞ্চায়েতের অনুদান পেতে গেলে গোড়াতেই কিছু শর্ত মানতে হবে। তার পরে অনুদানের ৮৪% মিলবে। বাকিটা আবার কাজের সাফল্যের উপরে নির্ভর করবে। রাজ্য অর্থ কমিশন গঠন, অনলাইনে পরীক্ষা করা হিসেব-নিকেশ রাখা, সম্পত্তি করের ন্যূনতম হার বেঁধে দেওয়া, রাজ্যের জিডিপি-র বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সম্পত্তি কর বাবদ আয় বৃদ্ধির শর্ত রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি একটি অর্থনীতি বিষয়ক পত্রিকায় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, অর্থ দফতরের কর্তা সুদীপ কুমার সিংহ এবং কলকাতার ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ়-এর অধিকর্তা অচিন চক্রবর্তী এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। নবান্নের কর্তাদের মতে, রাজ্যের জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্পত্তি কর বাবদ আয় বৃদ্ধির শর্ত পূরণ করা কার্যত অসম্ভব। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই রাজ্যগুলির কোষাগারে টান পড়েছে। কোভিডের পরে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে গিয়ে খরচ বেড়েছে। তার উপরে অর্থ কমিশনের শর্ত মানতে গিয়ে টাকা না মিললে আরও বিপদ।
অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য যুক্তি, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই সুপারিশ করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার সেই পরামর্শমেনে নিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy