Advertisement
E-Paper

ছ’বছর পরেও সেই তিমিরে নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক

মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ছ-ছ’টি বছর। কিন্তু রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মানচিত্রে এখনও সেই ব্রাত্যই হয়ে আছে নোনাডাঙা আইটি পার্ক। জমি-জট নেই। টানাপড়েন নেই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের (সেজ) তকমা দেওয়া নিয়ে।

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪৫
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে শিলান্যাস। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর।– ফাইল চিত্র

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে শিলান্যাস। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর।– ফাইল চিত্র

মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ছ-ছ’টি বছর। কিন্তু রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মানচিত্রে এখনও সেই ব্রাত্যই হয়ে আছে নোনাডাঙা আইটি পার্ক।

জমি-জট নেই। টানাপড়েন নেই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের (সেজ) তকমা দেওয়া নিয়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কার্যত এক চুলও এগোয়নি নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার কাজ। ছ’বছর আগে জমি কিনেও এখানে কাজ শুরু করতে পারেনি এইচএসবিসি, রোল্টা ইন্ডিয়া ও এইচসিএল। কারণ, কাজ শুরু করার মতো ন্যূনতম পরিকাঠামোই নেই এখানে। ফলে আটকে রয়েছে ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং অন্তত ১২ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগও। খাস কলকাতার বুকে প্রস্তাবিত এই প্রকল্প এখনও বিশ বাঁও জলে।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি মাফিক নিকাশি, জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ সংযোগের মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখানে তৈরি করে দেয়নি কেএমডিএ। ফলে নিশ্চিত বিনিয়োগ হাতের কাছে মজুত থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প প্রায় হিমঘরে।

সম্প্রতি সেক্টর ফাইভের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেছেন সচিব ও পুলিশ কর্তারা। সেই আলোচনায় উঠে এসেছে সেক্টর ফাইভের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের হাল-হকিকৎ। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের এই সক্রিয় মনোভাব অবশ্যই স্বাগত। কিন্তু নোনাডাঙার দীর্ঘ দিনের ঝুলে থাকা সমস্যাগুলি নিয়েও একই রকম তৎপরতা দেখাক তারা।

২০১০ সালে নোনাডাঙায় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা মাথায় রেখে লিজে জমি নেয় এইচএসবিসি, রোল্টা ইন্ডিয়া ও এইচসিএল। স্রেফ ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবে এখনও তারা ওই তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে প্রকল্প শুরু করতে পারেনি। খোদ তথ্যপ্রযুক্তি দফতরেরই অভিযোগ, নিকাশি, জল, রাস্তা ও বিদ্যুৎ সংযোগের মতো পরিকাঠামো তৈরি করে দেয়নি কেএমডিএ। কেএমডিএ-র অবশ্য দাবি, এ বার শীঘ্রই ওই কাজ শুরু হবে।

নোনাডাঙা পার্কে রোল্টা-সহ তিন সংস্থা জমি নিয়েছিল রাজ্য সরকারের নির্ধারিত দামেই। প্রতি একরের জন্য গুনতে হয়েছিল ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। ২০০৮-’০৯ সালের মন্দা কাটিয়ে সে সময় ছন্দে ফিরছিল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। আগে স্থগিত থাকা সম্প্রসারণ পরিকল্পনা তখন ফের বাস্তবায়িত করতে চাইছিল তিন সংস্থা। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, জমি পাওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্প চালু করার কথা। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না-থাকায় তা করা কোনও ভাবেই সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ সংস্থাগুলির।

নোনাডাঙায় সাড়ে তিন একর জমিতে ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা এইচএসবিসি-র। জমি নেওয়ার সময় তারা জানিয়েছিল, চালু হওয়ার পরে এখানে তাদের কর্মী সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৪,০০০। ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে সাড়ে পাঁচ একরে ক্যাম্পাস গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে রোল্টা ইন্ডিয়ারও। সেখানেও পাঁচ হাজারের বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা। এইচসিএল চায় দেড় একরে নিজস্ব কেন্দ্র তৈরি করতে।

ছোট-ছোট জমিতে তথ্যপ্রযুক্তি হাব গড়ে তুলতে একাধিক মঞ্চ থেকে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ খাস কলকাতা শহরেই এ রকম একটি প্রকল্প ঝুলে রয়েছে বছরের পর বছর। বহু বার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কাজের কাজ হয়নি। এক সময় অন্য প্রকল্পের জন্য রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে নোনাডাঙায় অন্যতম লগ্নিকারী রোল্টা ইন্ডিয়ার জমি দখল পর্যন্ত করে ফেলেছিল কেএমডিএ। অভিযোগ ওঠার পরে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সেই রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ হয়। তখনও কেএমডিএ কথা দিয়েছিল যে, শীঘ্রই নোনাডাঙার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে দেবে তারা। কিন্তু তার পরেও কেটে গিয়েছে আরও দু’বছর। নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক এখনও সেই তিমিরেই।

Nonadanga IT Park Dark
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy