ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় বিপুল সুদ বৃদ্ধির পর ভারতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ বৃদ্ধিও কার্যত অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। একাংশের বিশ্লেষণ, ধাপে ধাপে সুদ বাড়িয়ে সেই হারকে অতিমারির আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে। কেউ আবার মনে করছেন, অর্থবর্ষের শেষ দিকে ৬% ছুঁতে পারে রেপো রেট (যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেয়)।
জুনে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার সামান্য কমে ৭.০১% হয়েছে। যদিও টানা ছ’মাস তা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (৬%) উপরে। জিনিসপত্রের দামের উপর চাপ বাড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। সম্প্রতি জিএসটি বেড়েছে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে। দামের উপর তার প্রভাব পড়তে পারে। এই অবস্থায় আগামী ৩-৫ অগস্ট বৈঠকে বসছে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি।
আমেরিকার ব্রোকারেজ সংস্থা ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা সিকিউরিটিজ়ের বক্তব্য, এ দফায় রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হতে পারে। ফলে তা পৌঁছতে পারে ৫.২৫ শতাংশে। করোনার আগে যা ৫.১৫% ছিল। সেই সঙ্গে ঋণনীতির দৃষ্টিভঙ্গিকে ‘পর্যায়ক্রমে সুদ বৃদ্ধির’ দিকে নিয়ে যেতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এর আগে মে এবং জুনে দু’দফায় মোট ৯০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়ানো হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সুদ কমানোর রাস্তা খোলা রাখার অবস্থান থেকেও সরে আসার কথা জানিয়েছিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক অব বরোদার একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, চলতি বছরে আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভ মোট ২২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে। আর ভারতে বাড়ানো হয়েছে ৯০। ফলে মনে করা হচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও এ বার বোধ হয় সুদ বিপুল বাড়াবে। তবে ভারতে সেই বাস্তবতা আছে বলে মনে হয় না। বরং আপাতত ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়ে পরের দু’টি বৈঠকে ফের ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে তা বাড়ানো হতে পারে। একই বক্তব্য হাউসিং ডট কমের গ্রুপ সিইও ধ্রব আগরওয়ালার। তিনি মনে করছেন, এ দফায় সুদ বাড়তে পারে ২০-২৫ বেসিস পয়েন্ট।
আবার ডিবিএস গ্রুপ রিসার্চের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর এবং সিনিয়র ইকনমিস্ট রাধিকা রাও মনে করছেন, আগামী দু’টি ত্রৈমাসিকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক জিনিসপত্রের দামের স্থিতিশীলতার দিকেই জোর দেবে। এখনই সুদ বাড়তে পারে ৩৫ বেসিস পয়েন্ট। তার পর তিন দফায় আরও ২৫ করে বেড়ে পৌঁছে যেতে পারে ৬ শতাংশে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সম্প্রতি বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির হার আপাতত সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে ফেলেছে। তা আরও মাথা তোলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। বাজার বিশেষজ্ঞেরা তবু মনে করছেন, এখনই রাশ আলগা করতে চাইবে না ঋণনীতি কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy