Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চাই বিনিয়োগ, এআই ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৩
Share: Save:

এয়ার ইন্ডিয়ার (এআই) বেসরকারিকরণ করা না-গেলে সংস্থাটিকে বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলে মাসখানেক আগেই জানিয়েছিলেন বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। এ বার একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সংস্থার কর্মী ও অফিসারদের মধ্যে। সোমবার সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ছ’মাসের মধ্যে ক্রেতা পাওয়া না-গেলে এয়ার ইন্ডিয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কেন্দ্র মাঝেমধ্যে যে পুঁজি ঢালছে, তা সংস্থা চালানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। দরকার একলপ্তে বড় পুঁজি। এখন সংস্থাটির দেনার অঙ্ক ৬০,০০০ কোটি টাকা।

১৯৩২ সালে টাটাদের হাত ধরে এয়ার ইন্ডিয়ার আত্মপ্রকাশের পর থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তারা একাধিপত্য চালিয়েছে ভারতের আকাশে। তখন বায়ুদূত, ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ইন্ডিয়া— তিন ভাগে বিভক্ত ছিল সংস্থাটি। প্রথম দু’টি দেশের অভ্যন্তরে এবং এয়ার ইন্ডিয়া আন্তর্জাতিক রুটে উড়ান চালাচ্ছিল। কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, সমস্যার সূত্রপাত ২০০৫ সালে। সেই সময়ে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ২৮টি বিমানের প্রয়োজন ছিল। অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপে সেই সময়ে ৬৮টি বিমান কিনতে বাধ্য করা হয় সংস্থাকে।

এক কর্তার কথায়, ‘‘বিশাল অঙ্কের ধারের বোঝা চেপে বসে সরকারি উড়ান সংস্থাটির মাথায়। এর পরে ২০০৭ সালে কর্মী-অফিসারদের আপত্তি সত্ত্বেও মিশিয়ে দেওয়া হয় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ও এয়ার ইন্ডিয়াকে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সংস্থা।’’

আশঙ্কা

• এয়ার ইন্ডিয়ার দেনার অঙ্ক ছুঁয়েছে ৬০,০০০ কোটি টাকা।
• একাধিক বার সংস্থা বিক্রির চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
• বিক্রি করা না-গেলে সংস্থায় তালা পড়তে পারে
বলে জানান বিমানমন্ত্রী। এ বার সেই আশঙ্কা উচচপদস্থ কর্তারও।

উড়ান শিল্পের অবস্থা

• সার্বিক ভাবে দেশের বিমান পরিবহণের বৃদ্ধি সন্তোষজনক নয়।
• জানুয়ারি-নভেম্বর বৃদ্ধি ৩.৮৬%। এক বছর আগে ছিল ১৮.৬০%।
• গত ২৮ বছরে ভারতের আকাশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে জেট এয়ার, কিংফিশার-সহ ২১টি বেসরকারি উড়ান সংস্থা।

বেগতিক দেখে কেন্দ্র বিভিন্ন সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মোট ৩০,৫০০ কোটি টাকা এয়ার ইন্ডিয়ায় ঢেলেছে। সম্প্রতি তারা জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি কোষাগার থেকে আর টাকা ঢালা হবে না। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে সংস্থার লোকসানের বহর ৮৫০০ কোটি টাকারও বেশি। ন’টি এয়ারবাস-৩২০ বিমানের ইঞ্জিন সারানো বা বদলানোর জন্য ১১০০ কোটি টাকার প্রয়োজন। সেই টাকা নেই বলে বিমানগুলি বসে রয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কর্মীরা মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পেয়ে যাচ্ছেন।

এই অবস্থায় খরচ সাশ্রয়ের চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা তোলার চেষ্টা হচ্ছে। কর্মী নিয়োগ বন্ধ। লাভজনক রুটে বেশি উড়ান চালানো হচ্ছে। টিকিটের দাম বাবদ যে সব সংস্থার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে, তাদের আর ধারে টিকিট দেওয়া হবে না বলেও সম্প্রতি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়ার কর্তাদের অবশ্য বক্তব্য, এই সব ছোটখাট খরচ কমিয়ে এখন আর লাভ নেই। বড়সড় বিনিয়োগ দরকার। এবং তা দরকার অবিলম্বেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Business Air India Investment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE