E-Paper

ছ'টি সংস্থাকে জমি, রঘুনাথপুরে শিল্প ঘোষণা ঘিরে প্রশ্ন

রঘুনাথপুরে শিল্পতালুকের উদ্যোগ বাম আমলে হয়েছিল। সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে যখন রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল, তখন রঘুনাথপুরে প্রায় নির্বিঘ্নে তা নেয় রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ০৮:৩৫
ছ’টি শিল্প সংস্থাকে জমি দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ছ’টি শিল্প সংস্থাকে জমি দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শিল্পতালুক গড়ার ঘোষণা বার বার হয়েছে। তবে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে এ পর্যন্ত লগ্নি করেছে হাতেগোনা সংস্থা। সম্প্রতি সেখানে ছ’টি শিল্প সংস্থাকে জমি দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও কি সব ঘোষণার স্তরে আটকে থাকবে, উঠছে প্রশ্ন।

রঘুনাথপুরে শিল্পতালুকের উদ্যোগ বাম আমলে হয়েছিল। সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে যখন রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল, তখন রঘুনাথপুরে প্রায় নির্বিঘ্নে তা নেয় রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। রঘুনাথপুর ১, রঘুনাথপুর ২ ও নিতুড়িয়া ব্লকে অধিগৃহীত জমির একাংশ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে দেওয়া হয় ডিভিসি-কে। তবে জমি পেয়েও ইস্পাত কারখানা গড়েনি জয় বালাজি, শ্যাম স্টিল ও আধুনিক-এর মতো সংস্থা। বরং রাজ্যকে ফিরিয়ে দেয়। তৃণমূল জমানায় ‘জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী’ তৈরির ঘোষণা ও পরিকাঠামো গড়তে ১০০ কোটি টাকা লগ্নির পরে অবশ্য উৎসাহ বেড়েছে। ৬০০ একর জমিতে ইস্পাত কারখানা গড়েছে শ্যাম স্টিল। নিতুড়িয়ায় বড় সিমেন্ট কারখানা গড়েছে শ্রী সিমেন্ট। ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণ করছে ‘শাকম্ভরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ়’।

তবে বাম আমলে অধিগৃহীত জমির অনেকটা পড়ে। তৃণমূল আমলে নতুন করে অধিগ্রহণ হয়নি। সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের নতুনডি ও খাজুরা পঞ্চায়েতের দুরমুট, নতুনডি, লায়েকডি, শিউলিবাড়ি, ঝাড়ুখামার, লছমনপুর ও হুড়রা মৌজায় ফাঁকা ২০৫৮.৪১ একর ছ’টি সংস্থার জন্য চিহ্নিত করেছে রাজ্য। এর মধ্যে জয় বালাজির ফেরানো ১০০০ একরের বেশি জমিও রয়েছে।পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা জানান, বিশদ তথ্য আসেনি। তবে সূত্রের খবর, বাম আমলে রঘুনাথপুর-১ ও নিতুড়িয়ায় শিল্পের জন্য ৫৫০০ একরের বেশি নেওয়া হয়। ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ৩২০০। বাকিটা পড়ে। ‘সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কর্মাস’-এর সহ-সভাপতি মনোজ ফোগলা বলেন, “জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরীতে আরও নতুন শিল্প হলে জেলার অর্থনীতি মজবুত হবে।”

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় অবশ্য আশ্বস্ত নন বাম আমলে জমিদাতারা। ‘নতুনডি কৃষি কমিটি’ সংগঠনের সম্পাদক বাণেশ্বর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “হয় দ্রুত শিল্প হোক, না হলে জমি ফেরত দিক রাজ্য।” রঘুনাথপুরের বিজেপি বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউরির কটাক্ষ, “তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে সিঙ্গুর থেকে শিল্প তাড়িয়ে। তারা কী ভাবে শিল্প গড়বে!” সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়েরও দাবি, রাজ্যের ‘ল্যান্ড ব্যাঙ্ক’ বাম আমলে অধিগৃহীত জমিই। শিল্প আসছে না। তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার পাল্টা বার্তা, “বাম আমল শিল্পবান্ধব ছিল না বলে সংস্থাগুলি জমি ফেরায়। রঘুনাথপুরে ১০,০০০ কোটি টাকার লগ্নি এসেছে। আরও আসছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Industrial Area Lands

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy