২০২০ সালের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিকল্প কর কাঠামোর প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। ফাইল ছবি।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হতে চলেছে। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই বর্তমান মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ঠিক সেই কারণে সরকার এবং জনসাধারণ উভয়ের কাছেই এ বারের বাজেট তাৎপর্যপূর্ণ। যা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কয়েক বছর আগে মোদী সরকার সংস্থাগুলির কর কমিয়েছিল। অনেকের আশা, এ দফায় হয়তো ব্যক্তিগত আয়করেরও কিছুটা সুরাহা হতে পারে। বাড়ানো হতে পারে করমুক্ত আয়ের সীমা। আবার কেউ কেউ আশা করছেন, বিভিন্ন ধারার অধীনে বাড়ানো হতে পারে করছাড়ের মাত্রা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বাজেটের দিকে তাকিয়ে শিল্প ক্ষেত্রও। বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের সময়ে যাদের উপরে বড় আঘাত এসেছে। আর এখন ধুঁকছে চড়া সুদের চাপে। এই সমস্ত আশা বাস্তবে কতটা পূরণ হবে তা বোঝা যাবে বাজেটের দিন।
বাজেট থেকে বিভিন্ন মহলের যা প্রত্যাশা, বাস্তবে কিন্তু কেন্দ্রের পক্ষে তা মেটানো দুরূহ কাজ। বিশেষত দেনার দায়ে যখন কোষাগারের অবস্থা বিশেষ স্বস্তিদায়ক নয়। ফলে বিভিন্ন মহল আশা করলেও এই পরিস্থিতিতে সরকার আদৌ কতটা উদার হতে পারবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
২০২০ সালের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিকল্প কর কাঠামোর প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। তাতে বেশিরভাগ ছাড় তুলে আয়ের স্তর এবং করের হার পুনর্বিন্যাস করা হয়। যদিও এখনও পর্যন্ত করদাতাদের কাছে তা বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। সরকার যদি সত্যিই এই কাঠামোটিকে গ্রহণযোগ্য করতে চায়, তা হলে পুরনো ব্যবস্থায় ছাড় বাড়ানো হবে এমন আশা করা উচিত নয়। বরং নতুন বিকল্পেই করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর কথা হয়তো ভেবে দেখতে পারে কেন্দ্র।
দিন কয়েক আগে থেকেই বিভিন্ন বণিকসভা বাজেট নিয়ে বিভিন্ন দাবি পেশ করতে শুরু করেছে কেন্দ্রের কাছে। বাজেটে কোন শিল্প কী পাচ্ছে সে দিকে বাজারের নজর থাকবে। সেই সঙ্গে চলতি সপ্তাহে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থার ফলাফল প্রকাশ হতে শুরু করবে। নজর থাকবে সে দিকেও।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষ শেষ হতে তিন মাসেরও কম সময় বাকি। অর্থাৎ, শুধু বাজেট সংক্রান্ত জল্পনা নিয়ে থাকলে চলবে না। ৩১ মার্চের মধ্যে সারতে হবে করের যাবতীয় কাজও। এর মধ্যে কী কী রয়েছে তা দেখে নেওয়া যাক।
১৫ মার্চের মধ্যে জমা করতে হবে আগাম করের চতুর্থ তথা শেষ কিস্তি। বেতনভোগীদের তা জমা দিতে হবে না। কারণ, উৎসে কর কেটে তা জমা দেন নিয়োগকর্তা। যাঁদের অন্যান্য সূত্র থেকে আয় থাকে এবং সেই আয় বাবদ মোট কর বছরে ১০,০০০ টাকা বা তার বেশি, তাঁদের আগাম কর দিতে হয়। পেশা বা ব্যবসা থেকে আয় না থাকলে প্রবীণ নাগরিকদেরও তা লাগে না।
প্যানের সঙ্গে আধার যোগের শেষ দিন ৩১ মার্চ। এর জন্য মাসুল গুনতে হবে ১০০০ টাকা। তা করা না হলে ১ এপ্রিল থেকে প্যান বৈধ থাকবে না। আর বৈধ প্যান না-থাকলে ১) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না। ২) পুরনো অ্যাকাউন্টের কেওয়াইসি বৈধ থাকবে না। ৩) ফলে লেনদেনে অসুবিধা হবে। আয়কর রিটার্ন দাখিল করা যাবে না। পুরনো রিটার্নের অ্যাসেসমেন্ট থমকে থাকবে। মিলবে না কর ফেরতও। ৪) উৎসে কর কাটা হবে দ্বিগুণ হারে। ৫) নতুন বিমা ক্রয় আটকে থাকবে। তবে অসম, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীরে বসবাসকারী, অনাবাসী ভারতীয়, ৮০ বছরের বেশি বয়সি ও অন্য দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য নয়।
কর সাশ্রয়ের জন্য লগ্নিও সেরে ফেলতে হবে ৩১ মার্চের মধ্যে। বিভিন্ন প্রকল্পে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লগ্নি ও খরচ করে সারচার্জ বাঁচানো যেতে পারে ৬২,৪০০ টাকা পর্যন্ত। ৮০সি ধারার অধীনে বিভিন্ন প্রকল্পে ১.৫ লক্ষ টাকা এবং এনপিএসে অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লগ্নি করা যেতে পারে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy