Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

ধার দিতে বাড়তি সতর্কতা, বহু ঋণই বাতিলের মুখে

প্রতিটি ব্যাঙ্ক তাঁদের কর্মী-অফিসারদের বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে, ঋণ বণ্টনের আগে যেন খুব খুঁটিয়ে যাচাই করা হয় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের টাকা শোধের ক্ষমতায় কোপ পড়েছে কি না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৩
Share: Save:

করোনা ও তাকে যুঝতে লকডাউন রুজি-রোজগারে কতটা ধাক্কা দিয়েছে, তার হিসেব-নিকেশে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রতি দিন। মাত্র কয়েক মাসে এই কঠোর বাস্তব যে অনেকের স্বপ্ন তছনছ করেছে, তা আরও স্পষ্ট হল ব্যাঙ্ক থেকে ব্যক্তিগত ধার বিলির প্রক্রিয়া আতসকাচের তলায় আসার পরে।

তথ্য বলছে, দীর্ঘ লকডাউনে ব্যবসা-পত্তর, বিক্রি-বাটা বন্ধ থাকায় বহু সংস্থাই কর্মী ছেঁটেছে। ফলে অনেকের চাকরি গিয়েছে। অনেকের কমেছে বেতন। সূত্রের দাবি, এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিটি ব্যাঙ্ক তাঁদের কর্মী-অফিসারদের বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে, ঋণ বণ্টনের আগে যেন খুব খুঁটিয়ে যাচাই করা হয় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের টাকা শোধের ক্ষমতায় কোপ পড়েছে কি না। সেটা হলে, ঋণ মঞ্জুর হলেও এখন তা বণ্টন হবে না। তবে চাকরির বাইরে অন্য সূত্র থেকে আয়ের বন্দোবস্ত থাকলে বিবেচনা করা যেতে পারে বলে জানাচ্ছে কেউ কেউ।

সূত্রের দাবি, এতেই বাতিলের মুখে বহু আবেদনকারীর ঋণ। অনেকেই ডাউনপেমেন্টের টাকা মিটিয়ে ধার নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অনেকের ঋণ বণ্টনের কথা ছিল লকডাউন শিথিলের পরেই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের একাংশের হাত কামড়ানো ছাড়া উপায় নেই। ব্যাঙ্ক সূত্রের দাবি, এই কড়াকড়ি বড় বিপদের হাত থেকে বাঁচাচ্ছে আর্থিক অনিশ্চয়তায় ডোবা গ্রাহকদের। কারণ, একবার ধারের ইএমআই শুরু হলে সঙ্কট আরও বাড়ত। বহু ব্যাঙ্ক কর্তারই দাবি, ঋণের অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হওয়া আটকানোই এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য। তবে এতে অনেকেরই যে শেষ মুহূর্তে এসে বাড়ি বা গাড়ি কেনার স্বপ্ন চুরমার হচ্ছে, তা মেনে নিচ্ছেন তাঁরা।

ব্যাঙ্কই যে শুধু ঋণ দিতে বেঁকে বসছে, তা নয়। করোনার আবহে এমন অনেক আবেদনকারী আছেন, যাঁদের ঋণ মঞ্জুর হয়ে পড়ে আছে। নিতে আসছেন না। ব্যাঙ্ক কর্তাদের ধারণা আয় কমা বা হারানোই এর কারণ।

বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, স্বাভাবিক অবস্থাতেও যে কোনও ঋণ বণ্টনের ঠিক আগে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তা শোধের ক্ষমতা কমেছে কি না দেখে নেওয়ার বিধি আছে। কমে থাকলে, গ্রাহকের সঙ্গে ফের কথা বলে তার পর ঋণ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক কর্তা জানান, তাঁদের নিয়ম, ঋণ মঞ্জুরের পরে তা এক মাসের মধ্যে বণ্টন করা না-হলে, গ্রাহকের থেকে তাঁর বার্ষিক আয়ের প্রমাণ-সহ আরও কিছু তথ্য ফের চাওয়া হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই নজরদারিই আরও কড়া ভাবে চলছে। অনেক ক্ষেত্রে ওই নির্দেশের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিড চেক’।

অন্য ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খুচরো ঋণ অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্ক সকলে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক নোটিস দিয়েছে, “কোনও গ্রাহক ঋণের অ্যাকাউন্ট অন্য ব্যাঙ্ক থেকে আমাদের কাছে সরাতে চাইলে, তাঁর ঋণ শোধের ক্ষমতা যাচাই করতে হবে। অনেক আর্থিক সংস্থা খারাপ অ্যাকাউন্ট ঘাড় থেকে নামানোর চেষ্টা করতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Bank Loan EMI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE