E-Paper

জিএসটি আদায় বৃদ্ধির নিরিখে ‘লাস্ট বয়’ পশ্চিমবঙ্গ, বলছে এসবিআই রিপোর্ট

২০১৭ সালের ১ জুলাই দেশে চালু হয়েছিল জিএসটি। রিপোর্ট বলছে, তার পরে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মহারাষ্ট্রে পরোক্ষ কর আদায় হয়েছিল ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা।

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ০৫:১৬
সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধির মুখ দেখেছে ওড়িশা।

সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধির মুখ দেখেছে ওড়িশা। —প্রতীকী চিত্র।

জিএসটি-তে করের হার কমানো নিয়ে গত সপ্তাহেই বার্তা দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে এক মঞ্চে আনতে এই সপ্তাহে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। করের হার দু’টিতে নামলে রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতি হবে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। এই পরিস্থিতিতে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্ট জানাল, দেশে জিএসটি আদায়ের নিরিখে প্রথম সারির বড় ১০টি রাজ্যের মধ‍্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু এই পরোক্ষ কর ব্যবস্থা চালুর পরে রাজ্যগুলির মধ্যে তা আদায় বৃদ্ধির নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ এখনও সবচেয়ে শেষে। এখানে জিএসটি সংগ্রহ বেড়েছে ১৬.২% হারে। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধির মুখ দেখেছে ওড়িশা (২২.৩%)। তবে সামগ্রিক আদায়ের অঙ্কের দিক দিয়ে বিচার করলে আট বছর ধরেই প্রথম স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। বৃদ্ধির নিরিখে তারা তৃতীয়।

২০১৭ সালের ১ জুলাই দেশে চালু হয়েছিল জিএসটি। রিপোর্ট বলছে, তার পরে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মহারাষ্ট্রে পরোক্ষ কর আদায় হয়েছিল ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩.৬০ লক্ষ কোটি। অন‍্য দিকে, বাংলার ক্ষেত্রে প্রথম বছরে আদায়ের অঙ্ক ছিল ২৩,৩৩৩ কোটি টাকা। তা গত অর্থবর্ষে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৭,০০০ কোটি। ওড়িশার ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ১৪,৮৫০ কোটি এবং প্রায় ৬১,০০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ সালে সারা দেশে যে পরিমাণ জিএসটি আদায় হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের অংশীদারি মাত্র ৩%। মহারাষ্ট্রের সেখানে ১৬.৩%।

স্টেট ব্যাঙ্কের মতে, জিএসটি আদায় বৃদ্ধির হার দেখলেই স্পষ্ট কোন রাজ্যে আর্থিক কর্মকাণ্ড কত বেশি। শুধু প্রথমে থাকা মহারাষ্ট্র বা ওড়িশাই নয়। কর্নাটক ও গুজরাতও আট বছরে জিএসটি আদায় কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। ঝাড়খণ্ড, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের মতো চার-পাঁচটি রাজ‍্য বৃদ্ধির হারে বাংলার পিছনে রয়েছে। বাকি সবাই আগে। স্টেট ব‍্যাঙ্কের মুখ‍্য অর্থনীতিবিদ সৌম‍্যকান্তি ঘোষের দাবি, তথ্য বলছে, প্রথম পাঁচ রাজ‍্য থেকে মোট জিএসটি-র ৪১% আদায় হয়। জিএসটি চালুর পরে মাত্র ছ’টি রাজ‍্য বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি কর আদায়ে সক্ষম হয়েছে। জিএসটি-তে করের হার কমানোর সওয়ালও করেছেন তিনি।

মার্চেন্টস চেম্বারের অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র বলেন, “প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গে শিল্প-সহ আর্থিক কর্মকাণ্ড ওড়িশা, দিল্লি, হরিয়ানা, তেলঙ্গানার মতো রাজ‍্যের তুলনায় অনেক কম। ফলে কর আদায় বৃদ্ধির গতি কম। দ্বিতীয়ত, জিএসটি চালুর পরে প্রথম বছর তিনেক রাজ‍্য প্রশাসনের নজরদারি তেমন ছিল না। ফলে শুরুতেই সেই গতি রুদ্ধ হয়। পরে নিজেদের পরিবর্তন করে প্রশাসন। কিন্তু প্রাথমিক ধাক্কার প্রভাব রয়েই গিয়েছে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্প-কর্তার আবার দাবি, ‘‘বহু ছোট ও মাঝারি শিল্প সংস্থাই চলে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। তাঁদের অনেকেই ইচ্ছা করে জিএসটি জমা দেন না। সেই সংখ‍্যাটা খুব একটা কম নয়। তারও প্রভাব রয়েছে রাজ‍্যের পরোক্ষ কর আদায়ের উপর। সেই কারণেই মোট কর আদায় কম হলেও বিহার, রাজস্থান, অসমের মতো রাজ‍্যের কর আদায় বৃদ্ধির গতি অনেক বেশি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

GST Economy West Bengal government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy