Advertisement
E-Paper

হিন্দমোটরের বাড়তি জমিতে বেঙ্গল শ্রীরাম-এর প্রকল্পে সায়

দীর্ঘ টালবাহানার পরে অবশেষে রফা। উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্তান মোটরস কারখানার বাড়তি জমিতে বেঙ্গল শ্রীরাম-এর ৬০০০ কোটি টাকার প্রকল্প রাজ্য সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেল। আর সেই সঙ্গেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ৩০ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হল। চলতি সপ্তাহেই নবান্নে মন্ত্রিসভার শিল্প ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে বেঙ্গল শ্রীরাম হাইটেক সিটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির এক সদস্যের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকা এই প্রকল্প চালু করার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫০

দীর্ঘ টালবাহানার পরে অবশেষে রফা। উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্তান মোটরস কারখানার বাড়তি জমিতে বেঙ্গল শ্রীরাম-এর ৬০০০ কোটি টাকার প্রকল্প রাজ্য সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেল। আর সেই সঙ্গেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ৩০ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হল।

চলতি সপ্তাহেই নবান্নে মন্ত্রিসভার শিল্প ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে বেঙ্গল শ্রীরাম হাইটেক সিটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির এক সদস্যের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকা এই প্রকল্প চালু করার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। ৬০ একরের একটি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক-সহ প্রকল্পে আবাসন ও অন্যান্য বাণিজ্যিক পরিকাঠামো তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য সরকার ও দুই বেসরকারি সংস্থার বিবাদের জেরে প্রকল্পের কাজ এক পা-ও এগোয়নি। কাজ শুরু না-হওয়ায় গত বছরেই হাতছাড়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের জন্য বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ-এর তকমা।

২০০৬ সালে সি কে বিড়লা গোষ্ঠীর সংস্থা হিন্দমোটরকে ৩১৪ একর জমি বিক্রি করার অনুমতি দেয় তদানীন্তন বাম সরকার। সংস্থার আর্থিক হাল ফেরাতেই এই অনুমতি দেওয়া হয়। পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে ৮৫ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছিল হিন্দুস্তান মোটরস। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার শর্ত দেয়, জমি বিক্রি করে ওই পরিমাণ টাকাই তুলতে পারবে সংস্থাটি। যদিও বেঙ্গালুরুর সংস্থা শ্রীরাম প্রপার্টিজকে জমি বিক্রি করে ২৮৫ কোটি টাকা পায় হিন্দুস্তান মোটরস। এই প্রকল্প তৈরির জন্যই আমেরিকার দু’টি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে শ্রীরাম প্রপার্টিজ তৈরি করে বেঙ্গল শ্রীরাম। পরে অবশ্য প্রকল্প নিয়ে টানাপড়েন চলায় মার্কিন সংস্থা দু’টি বেরিয়ে যায়।

প্রকল্পে সমস্যার সূত্রপাত হয় ওই বাড়তি ২০০ কোটি টাকা নিয়েই। বর্তমান রাজ্য সরকার এই টাকা দাবি করে। হিন্দমোটর টাকা ফেরত দেওয়ার কথা নীতিগত ভাবে মেনে নিলেও জানায়, বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির কারণে টাকা দিতে অপারগ তারা। দফায় দফায় বৈঠক হয়। শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের অগস্ট মাসে তিন পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। ঠিক হয়, পাঁচ কিস্তিতে ২৫ কোটি টাকা ফেরত দেবে হিন্দুস্তান মোটরস। সেটাও না-দিতে পারলে বেঙ্গল শ্রীরাম-এর প্রকল্প থেকে লভ্যাংশ বাবদ প্রাপ্য টাকা রাজ্য সরকারকে দেবে হিন্দমোটর। উল্লেখ্য, লভ্যাংশের ৪ শতাংশ টাকা হিন্দুস্তান মোটরস-এর প্রাপ্য। এ ছাড়াও, বেঙ্গল শ্রীরামের তরফ থেকে ৪০ একর জমি রাজ্য সরকারের কাছে জমা রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। লভ্যাংশ ও জমি মিলিয়ে নিজেদের পাওনা বুঝে নেবে রাজ্য। সমঝোতাসূূত্রের এই ফাইল অবশ্য এতদিন অর্থ দফতরে আটকে ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।

রাজ্য সরকারি সূত্রে খবর, এই সমঝোতার ভিত্তিতেই এ বার ছাড়পত্র পেয়েছে প্রকল্প। তবে ছাড়পত্র নিয়ে মুখ খোলেনি বেঙ্গল শ্রীরাম ও হিন্দুস্তান মোটরস।

প্রসঙ্গত, হিন্দুস্তান মোটরসের তরফ থেকে একাধিক বার জানানো হয়েছে, ওই টাকা ফেরত দিতে অপারগ তারা। বিশেষ করে যেখানে মাস ছ’য়েক ধরে কারখানাটি বন্ধ। কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য প্রাপ্যও বাকি পড়েছে। রাজের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সংস্থাটি জানিয়েছিল, সম্পত্তি বেচে অর্থের সংস্থান হলেই কর্মীদের বকেয়া মেটানো হবে। পাশাপাশি, কারখানা খোলার জন্য নতুন লগ্নিকারী ও অন্যান্য পদক্ষেপের কথাও ভাবা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কারখানা পুনরুজ্জীবনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বেঙ্গল শ্রীরামকে জমি বিক্রির টাকা কী ভাবে সংস্থা রাজ্যকে ফেরত দেবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

পাশাপাশি হিন্দুস্তান মোটরসের কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে বেঙ্গল শ্রীরামও। এই সংশয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হিন্দমোটরের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। ২০১৩ সালের গোড়ায় সংস্থার পরিচালন পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, মূল সংস্থা থেকে চেন্নাইয়ের কারখানা পৃথক করা হবে। বেঙ্গল শ্রীরামের মতে, চেন্নাইয়ের চালু কারখানা পৃথক হয়ে যাওয়ার পরে সংস্থাটির আর্থিক সঙ্গতি আরও সঙ্গীন হয়েছে।

hindmotor bengal shriram new project
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy