ব্যাঙ্কের শাখায় নগদ লেনদেনে এক ধাক্কায় বাড়ানো চার্জ নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ছে গ্রাহকদের। এমনকী এ নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা টের পেয়েই এ বার ব্যাঙ্কগুলিকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বার্তা দিল কেন্দ্র। সেই সঙ্গে, সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স রাখার যে-নিয়ম স্টেট ব্যাঙ্ক দিন কয়েক আগে ঘোষণা করেছে, তা-ও ফিরে দেখার নির্দেশ দিল তারা।
নোট বাতিলের পর থেকে নগদের পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেনে জোর দিতে বলছে কেন্দ্র। তারপরেই শাখায় গিয়ে নিখরচায় নগদ লেনদেনের সংখ্যা কমানোর কথা ঘোষণা করে একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্ক। সেই সংখ্যা ছোঁয়ার পরে প্রতিটি নগদ লেনদেনে ফি এক ধাক্কায় ৫০% বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে তারা। একই পথে হেঁটে সম্প্রতি নিখরচার নগদ লেনদেনের সংখ্যা অনেকটা ছেঁটে ফেলেছে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্রের এই মন্তব্য।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর কে সি চক্রবর্তী সোমবার লন্ডন থেকে ফোনে বলেন, ‘‘গ্রাহক নগদে লেনদেন করবেন না কি ডিজিটালে, সে ব্যাপারে তাঁর পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা উচিত। চার্জ বাড়িয়ে তাতে কোপ বসাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘লেনদেনের জন্য ব্যাঙ্কের খরচ কত হচ্ছে, তার ভিত্তিতেই ফি ঠিক হওয়া উচিত। অনেক ব্যাঙ্ক চার্জ বাড়িয়েছে কিন্তু তার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেনি।’’
বহু ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ বলছেন, সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলে, তার থেকে ব্যাঙ্কের আয় হয়। সেখানকার টাকা তুলনায় অনেক বেশি সুদে ঋণ দেয় তারা। তাই তারপরেও কেন নগদ লেনদেনে এত ফি নিতে হচ্ছে, তা স্পষ্ট করা জরুরি। এ ছাড়া, অধিকাংশ এটিএমে টাকা জমা দেওয়ার সুবিধা বন্ধ করেছে ব্যাঙ্কগুলি। নিজের বা অন্য ব্যাঙ্কের এটিএমে ক’টি লেনদেন মাসে নিখরচায় করা যাবে, বেঁধে দিয়েছে তা-ও। তাই অনেকের প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে শাখায় গিয়ে নগদ লেনদেনেও কী যুক্তিতে রাশ টানছে ব্যাঙ্কগুলি?
এক দিকে সবার দরজায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছোনোয় জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। বলা হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও তাকে হাজির করার কথা। অথচ এটিএমে ও শাখায় গিয়ে নগদ লেনদেনে চার্জ বসাচ্ছে বা বাড়াচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। সেভিংস অ্যাকাউন্টে (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) ন্যূনতম ব্যালান্স রাখার নিয়ম বাঁধছে স্টেট ব্যাঙ্কের মতো সরকারি ব্যাঙ্কও। তারা জানিয়েছে, নইলে জরিমানা গুনতে হবে গ্রাহককে। অনেকের প্রশ্ন, ব্যাঙ্কিং লেনদেনের এই খরচ গ্রামের নগদ নির্ভর গরিবরা বইতে পারবেন কি? চক্রবর্তীর মতে, এ অবস্থায় সরব হওয়া উচিত ক্রেতা সুরক্ষা সংগঠনের। কেন্দ্রের নির্দেশে ব্যাঙ্কগুলি নড়ে বসে কি না, সে দিকেই এখন নজর সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy