তা হলে কি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্যই বেঁচে যাবে ভোডাফোন আইডিয়া?
অন্তত একাধিক সূত্রের খবরে তেমনই ইঙ্গিত। সূত্রগুলি জানাচ্ছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভারতের উপর পাহাড় প্রমাণ শুল্ক (৫০%) চাপিয়ে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ব্রিটেনকে আরও বেশি করে পাশে পেতে চাইছে নয়াদিল্লি। তাই আগামী সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের এ দেশ সফরের আগেই হয়তো সরকার ভোডাফোন আইডিয়া (ভি) নিয়ে রফাসূত্র বার করবে। কারণ, ভি একটি ব্রিটিশ এবং ভারতীয় সংস্থার যৌথ উদ্যোগ। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, কেন্দ্রের প্রাপ্য যে ৯৪৫০ কোটি টাকা বকেয়া নিয়ে ভি মামলা করেছে, তার বেশ কিছুটা মকুব করা হতে পারে। খবর, কেন্দ্র স্পেকট্রাম ব্যবহারের বকেয়ার উপর জরিমানা এবং তার উপরে সুদ মকুব করতে পারে। মোট বকেয়াতেও কিছু ছাড় মিলতে পারে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এটা হলে দেশ জুড়ে ভি-র অসংখ্য গ্রাহক নিশ্চিন্ত হবেন। সরকার সাহায্য না করলে সংস্থা বন্ধ করতে হবে, ভি-র তরফে এই বার্তা তাঁদের চিন্তায় ফেলেছিল।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সরকারি সাহায্যের খবর যে সত্যি হতে পারে, তার আভাস মিলেছে সুপ্রিম কোর্টেও। সোমবার এই নিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার এবং ভি, দু’পক্ষই শীর্ষ আদালতে শুনানি পিছনোর আর্জি জানায়। আদালত আগামী ১৩ তারিখ শুনানির দিন ধার্য করে। ওই মহলের মতে, সরকারের থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েই ভি-ও শুনানি পিছোতে বলে। ফলে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ভি মামলার শুনানি পিছলো সুপ্রিম কোর্টে। তবে আর এক সূত্র বলছে, কেন্দ্র শুধু ভি-কেই বকেয়া মকুবের সুবিধা দেবে না। টাকার অঙ্কে কম হলেও তা পাবে এয়ারটেল এবং টাটা টেলিকম। তারাও সরকারের কাছে বকেয়া মকুবের আর্জি জানিয়েছে।
সরকারি সূত্রের মতে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ভি-র কথা উঠতে পারে। সংস্থাটি সম্পর্কে কোনও নেতিবাচক সিদ্ধান্ত সামগ্রিক ভাবে ব্রিটেনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে যাতে প্রভাব না ফেলে, সে ব্যাপারে সতর্ক কেন্দ্র। তাই অনেকে মনে করছেন ওই বৈঠকের আগেই ভি-র নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। আবার টেলিকম মন্ত্রকের একাংশের বক্তব্য, সরকার চায় দেশে তিনটি বেসরকারি টেলিকম সংস্থা থাকুক। তা হলে প্রতিযোগিতার সুস্থ পরিবেশ থাকবে। দু’টি সংস্থা হয়ে গেলে সেটা আর থাকবে না, যা টেলিকম শিল্প এবং গ্রাহক, দু’পক্ষের জন্যই ক্ষতিকারক হতে পারে। সেই কারণেই কেন্দ্র বকেয়া ও সুদ মকুব করার কথা ভাবছে।
ভি-র দাবি ছিল, কেন্দ্র যে ভাবে স্পেকট্রামের বকেয়া হিসাব করেছে, তা ঠিক নয়। সেই বকেয়ার উপর জরিমানা ও সুদের হিসেবও ভুল। বিভিন্ন খাতে সরকার ভি-র থেকে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা পায়। এই বকেয়ার প্রায় ৯৪৫০ কোটি টাকা দেওয়া নিয়েই আপত্তি তুলে মামলা করেছে সংস্থা।বর্তমানে ভি-র প্রায় ৪৯% অংশীদারি কেন্দ্রের। তবে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি পিছনোয় সংস্থার শেয়ার দর প্রায় ৪% পড়ে হয় ৮.৪৭ টাকা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)