অগস্টে ভারতের উপরে ২৫% পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে আপত্তি তুলে ওই মাসের শেষে আরও ২৫% শুল্ক বসিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও মস্কো থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি নয়াদিল্লি। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশ্লেষক সংস্থাগুলির মতে, এখনও পর্যন্ত পশ্চিমী দুনিয়া রাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা চাপায়নি। এ দেশে কেন্দ্র বা তেল সংস্থাগুলি আমদানি বন্ধের কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। ফলে আগামী দিনেও রাশিয়া ভারতে তেল রফতানিকারী হিসেবে প্রথম স্থানেই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে পশ্চিমী দেশগুলি মস্কো থেকে তেল কেনা কমিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে কম দামে বিশ্ব বাজারে তেল বিক্রি শুরু করে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। সেই সুযোগে তা বেশি করে কিনতে থাকে ভারতীয় সংস্থাগুলি। যার হাত ধরে এ দেশে রফতানিকারী হিসেবে রাশিয়ার অংশীদারি ১% থেকে পৌঁছেছে প্রায় ৪০ শতাংশে। বিশ্লেষক সংস্থা কেপলারের তথ্য জানাচ্ছে, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন যে ৪৭ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করেছে ভারত, তার মধ্যে প্রায় ১৬ লক্ষ ব্যারেল বা ৩৮ শতাংশই এসেছে রাশিয়া থেকে। যা অগস্টের থেকে প্রায় ২.২ লক্ষ ব্যারেল বেশি ঠিকই। তবে বছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় প্রায় ১.৬ লক্ষ কম এবং গত বছরের সেপ্টেম্বরের প্রায় সমান।
এ দিকে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পরে জুলাইয়ে প্রথম ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, এর মাধ্যমে আসলে ইউক্রেনের উপরে মস্কোর হামলায় মদত দিচ্ছে ভারত। যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার তেল কিনছে, তাদের উপরে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে শুল্ক চাপাতেও বলে তাঁর প্রশাসন। এই চাপ সত্ত্বেও মোদী সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, দেশের জন্য যেখান থেকে সুবিধা, সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত।
কেপলারের প্রধান বিশ্লেষক সুমিতরিটোলিয়ার দাবি, গত মাসে রাশিয়া থেকে তেল কম এলেও, ভাল দর মেলায় ভারতের কাছে তাদের পণ্যের কদর বেশি। ফলে সেখান থেকে তেল কেনা চলবে। তাঁর বক্তব্য, অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা দাঁড়াতে পারে দিনে ১৬-১৮ লক্ষ ব্যারেল। একমাত্র ইরাকের তেল হাতে এলে যদি তুরস্ক রাশিয়া থেকে কেনা কমায়, তা হলে ওই বাড়তি তেল এশিয়ায় আসবে। অধিকাংশ যাবে চিন ও ভারতে। তবে তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক নভেম্বর থেকে উত্তোলন বাড়াবে বলে রবিবার জানিয়েছে। ফলেপশ্চিম এশিয়া থেকে আমদানি বাড়তে পারে, মত সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)