ফাইল চিত্র।
বাড়ির বৈঠকখানায় আদ্দিকালের পেট মোটা টিভি এখনও সারিয়ে নিয়ে দিব্যি চলছে। কিন্তু নতুন এইচডি টিভি দু’বছরের মাথায় খারাপ হয়ে গেলে কোম্পানির লোক এসে বলছে, এখন আর এই টিভির যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় না। শুধু টিভি নয়। মোবাইল থেকে ল্যাপটপ, রেফ্রিজ়ারেটর থেকে গাড়ি— সব ক্ষেত্রেই একই সমস্যা। বিশেষত চিনা সংস্থার জিনিসপত্র হলে তো আর কথাই নেই। কোথাও শুনতে হয়, আর সফটওয়্যার আপডেট করা সম্ভব নয়। কোথাও বলা হয়, এই মডেলের মোবাইল বাজার থেকে উঠে গিয়েছে। যন্ত্রপাতি আর মিলবে না। তখন নতুন মোবাইল বা টিভি কেনা ছাড়া আর উপায় থাকছে না। অথবা সারানোর যন্ত্রপাতি মিললেও তার জন্য গুনতে হচ্ছে চড়া দাম!
এই সমস্যার সমাধানে এ বার কেন্দ্রীয় সরকার নতুন আইনি ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছে। যেখানে মোবাইল, ট্যাবলেট, বৈদ্যুতিন পণ্য, গাড়ি, চাষবাসে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার পর খারাপ হয়ে গেলে তা সারিয়ে নেওয়াটা সাধারণ মানুষের অধিকারের তালিকায় পড়বে। অর্থাৎ এইসব যন্ত্র সারিয়ে দেওয়া, তার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জোগান দেওয়াটা মোবাইল বা গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থার দায়িত্বের মধ্যে পড়বে। আইনি ভাষায় একে সাধারণ মানুষের ‘রাইট টু রিপেয়ার’ বলা হয়। আমেরিকা, ব্রিটেনে এই আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, মেরামতির জন্য যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা বৈদ্যুতিন পণ্য প্রস্তুতকারী সংস্থারই দায়িত্ব।
এ দেশেও একই রকম ব্যবস্থা তৈরি করতে উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব নিধি খারের অধীনে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। কমিটিতে আমলাদের সঙ্গে রয়েছে আইনি বিশেষজ্ঞদেরও। বুধবার এই কমিটির প্রথম বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে চাষবাসের যন্ত্রপাতি, মোবাইল, ট্যাবলেট, গাড়ি, বৈদ্যুতিন পণ্যের মতো ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে নতুন আইনি ব্যবস্থা তৈরির চেষ্টা হবে।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, চিনা সংস্থাগুলিকে নিয়ে সমস্যা বেশি। তাদের পণ্য বেশি দিন টেকে না বলে অভিযোগ। সারাইয়েরও ব্যবস্থা বা যন্ত্রাংশ মেলে না। এ দেশে ওই সংস্থাগুলিকে সারাইয়ের যন্ত্রাংশ জোগানো ও মেরামতিতে বাধ্য করা হলে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। একই পণ্য সারাই করে বেশি দিন ব্যবহার করা হলে ‘ই-ওয়েস্ট’ বা বৈদ্যুতিন আবর্জনাও কমবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy