অফিসের দেওয়া ল্যাপটপ-কম্পিউটারে কী কী কাজ করছেন কর্মীরা? সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন না করে নিরন্তর চলছে গান শোনা, ওয়েব সিরিজ় দেখা বা অন্যত্র চাকরির সন্ধান? সেই ফাঁকফোকর ঢাকতে এ বার নজরদারির সিদ্ধান্ত নিল বহুজাতিক টেক জায়ান্ট সংস্থা ‘কগনিজেন্ট’। সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় ‘অলস’ কর্মীদের চিহ্নিত করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি।
সম্প্রতি, ‘মাইক্রো-লেভেল প্রোডাক্টিভিটি ট্র্যাকিং’ প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ঘোষণা করে কগনিজেন্ট টেকনোলজি সলিউশন। বহুজাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, এতে কর্মীদের উপর নজরদারির জন্য প্রো-হ্যান্সের মতো বিশেষ টুল ব্যবহার করছে তারা। এর প্রশিক্ষণ পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট টেক জায়ান্টটির নির্বাচিত বেশ কয়েক জন এক্জ়িকিউটিভ পদের আধিকারিক।
আরও পড়ুন:
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির প্রায় সমস্ত কাজই হয় কম্পিউটার-ল্যাপটপে। ফলে সমস্ত সময় কিবোর্ড এবং মাউস ব্যবহার করতে থাকেন কর্মীরা। সূত্রের খবর, সেই তথ্য পরিমাপ করে অফিসের দেওয়া ল্যাপটপ-কম্পিউটারে কোন ব্যক্তি কত ক্ষণ কাজ করছেন, তা বলে দিতে পারবে প্রো-হ্যান্সের মতো টুল। আইটি শিল্পে এরই পোশাকি নাম ‘মাইক্রো-মনিটরিং’।
এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই অভ্যন্তরীণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কগনিজেন্ট। সেখানে বলা হয়েছে, অফিসের দেওয়া কোনও কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ৫ মিনিট মাউস বা কিবোর্ড না নড়লেই সংশ্লিষ্ট কর্মীকে ‘নিষ্ক্রিয়’ বলে চিহ্নিত করবে প্রো-হ্যান্স টুল। টানা ১৫ মিনিট ওই নিষ্ক্রিয়তা বজায় থাকলে ওই ব্যক্তি সিস্টেম থেকে দূরে রয়েছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। তবে কাজের প্রকারভেদে এই সময়সীমার তারতম্য থাকছে।
আরও পড়ুন:
কম্পিউটার-ল্যাপটপে নজরদারি অবশ্য কোনও কর্মীর ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স মূল্যায়নে ব্যবহার হবে না বলে জানিয়েছে কগনিজেন্ট। টেক জায়ান্টটির কর্তা-ব্যক্তিদের দাবি, এর মাধ্যমে শুধুমাত্র ‘প্রকল্পভিত্তিক দক্ষতা’ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে। তার পরেও অবশ্য কর্মীদের মন থেকে আতঙ্ক দূর হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, প্রো-হ্যান্সের মতো টুল ব্যবহার করে বছরে ৮০ লক্ষ ডলার সাশ্রয় করতে পেরেছে কগনিজেন্ট। আগামী দিনে এই ধরনের টুল আইটি শিল্পক্ষেত্রের নতুন মানদণ্ড হবে বলে মনে করেন তাঁরা। কর্মীদের আস্থা বজায় রেখে এর পরিধি আগামী দিনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কী ভাবে বাড়ায়, সেটাই এখন দেখার।