Advertisement
০২ মে ২০২৪
Employee Provident Fund

পিএফ পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ, কেন্দ্রকে চিঠি

পিএফের ডিজিটাল ব্যবস্থায় বড়সড় ত্রুটির অভিযোগ তুলল সরকারি ওই দফতরেরই অফিসারদের সংগঠন এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইপিএফওএ)।

এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনে নিয়োগ। সংগৃহীত ছবি।

এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনে নিয়োগ। সংগৃহীত ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ০৯:১৮
Share: Save:

কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) সদস্যেরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, অনলাইনে পাসবুক দেখা যাচ্ছে না। পিএফ তহবিল থেকে অগ্রিম নেওয়ার আবেদন করতে বা টাকা তুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়ার নালিশ জমা পড়ে ভূরি ভূরি। বেশিরভাগ গ্রাহকেরই অভিযোগ, পোর্টালে ঢুকে কোনও কাজ একবারে সারা যায় না। টাকা তোলা গেল কি না, ধন্দে পড়তে হয়। হালে বেশি পেনশন পাওয়ার আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়েও নাজেহাল হতে হয়েছে বলে দাবি পিএফের বহু অবসরপ্রাপ্ত সদস্যের। দিনভর চেষ্টা করেও তা অনলাইনে জমা দিতে পারেননি অনেকে।

এই পরিস্থিতিতে পিএফের ডিজিটাল ব্যবস্থায় বড়সড় ত্রুটির অভিযোগ তুলল সরকারি ওই দফতরেরই অফিসারদের সংগঠন এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইপিএফওএ)। তাদের দাবি, সারা দেশে আঞ্চলিক দফতরগুলিতে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ছে এ নিয়ে। সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল সৌরভ স্বামী তাঁদের অভিযোগে জানিয়েছেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ডিজিটাল পরিষেবা আগামী বছরের গোড়ার দিকে সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়তে পারে। গ্রাহকের স্বার্থ ধাক্কা খাওয়ার কথা বলে অভিযোগগুলি লিখিত ভাবে চিঠির আকারে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের কাছে। পরিষেবার এই ঘাটতির জন্য পুরনো ডিজিটাল ব্যবস্থাকে উন্নত (আপগ্রেড) না করাকেই দায়ী করেছে তারা।

সংশ্লিষ্ট মহলের ক্ষোভ, মোদী সরকার যখন দেশ-বিদেশের মঞ্চ থেকে ভারতে ডিজিটাল পরিষেবার অগ্রগতিকে তুলে ধরছে, তখন তাদেরই নাকের ডগায় পিএফ পোর্টালের এমন ঘাটতি উদ্বেগজনক। বিশেষত সাধারণ মানুষের জন্য এমন গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা প্রকল্পের ক্ষেত্রে। যা তাঁদের স্বার্থে আঘাত দিতে পারে।

কর্মী পিএফ সংস্থা (ইপিএফও) সূত্রের দাবি, তহবিল থেকে আগাম টাকা তোলার আবেদনের প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াও ফি বছর পিএফের অ্যাকাউন্ট তৈরি করার মতো কাজগুলি ২০১০ থেকে পুরোপুরি অনলাইন ব্যবস্থায় সম্পন্ন করা শুরু হয়। পাশাপাশি অবসর নেওয়া বা অন্য কারণে চাকরি ছাড়ার পরে পিএফের টাকা তুলে নেওয়ার দাবি এবং আগাম টাকা তোলার আবেদন জমা দেওয়াও চালু হয় পোর্টালে। নিয়োগকারী পিএফের অ্যাকাউন্ট জমা এবং ওই খাতে দেয় টাকা মেটানোর কাজ অনলাইনে সারেন। পরবর্তীকালে চালু হয় সদস্যের অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা আছে, সেই তথ্য জানার জন্য অনলাইনে পাসবুক দেখার পরিষেবা। খোদ সরকারি সূত্রেরই অভিযোগ, ২০১০ সালে চালু হওয়ার পরে গত ১৩ বছর ধরে সেই পুরনো বৈদ্যুতিন ব্যবস্থাই চলছে। তা উন্নত করার কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ফলে অনেক সময়েই সার্ভার কাজ না করছে না। গোটা ব্যবস্থাটি শ্লথ হয়ে পড়েছে। গ্রাহকদের পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে। বদনাম হচ্ছে সংস্থার কর্মী এবং অফিসারদের। স্বামী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, “অনলাইনে পরিষেবা পাওয়া নিয়ে পিএফ সদস্যদের কাছ থেকে অজস্র অভিযোগ জমা পড়ছে। ইপিএফও-র টুইটার অ্যাকাউন্ট, হোয়টসঅ্যাপও ভরে উঠেছে অভিযোগে।’’

তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইপিএফও-র বার্ষিক বাজেট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অফিসারদের ওই সংগঠন। বলেছে, তথ্যপ্রযুক্তি পরিচালনার জন্য পিএফ কর্তৃপক্ষ গত অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) ১৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ, তার ভাড়া, কম্পিউটার সেট কেনা ইত্যাদিতেই বেশিরভাগ খরচ হয়ে যায়। স্বামী তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ইপিএফে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২৭.২৪ কোটি (২০২১-২২ সালের হিসাব মতো), সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭.৩ কোটি, এর আওতায় রয়েছে ৭.৫৫ লক্ষ সংস্থা এবং ৭৬.৫ লক্ষ পেনশনভোগী। এত বড় কর্মযজ্ঞ চালু রাখার ডিজিটাল ব্যবস্থা পরিচালনার ওই বরাদ্দ অত্যন্ত কম।

পিএফের অছি পরিষদ সংস্থার ডিজিটাল ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সুপারিশ করতে বেশ কিছু দিন আগেই শ্রম মন্ত্রকের সচিবের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। তারা স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘ মেয়াদে কিছু পদক্ষেপ করার প্রস্তাব দিয়েছে। চিঠিতে স্বামীর আর্জি, অবিলম্বে সুপারিশগুলি কার্যকর করা না হলে আগামী বছরের গোড়ার দিকেই সার্ভারগুলি বিকল হয়ে পুরো ব্যবস্থাটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Employee Provident Fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE