ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আমেরিকা যে ধরনের বাণিজ্য চুক্তি করেছে, ভারতের সঙ্গেও সেই রকম চুক্তি করতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরেই আশঙ্কার পারদ চড়েছে এ দেশের বাণিজ্য মহলে। কারণ, ইন্দোনেশিয়া আমেরিকার পণ্যের জন্য নিজেদের বাজার পুরোপুরি খুলে দিচ্ছে। কিন্তু আমেরিকায় নিজেদের রফতানি করা পণ্যে গুনবে শুল্ক। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান এস মহেন্দ্র দেবের বক্তব্য, ভারতের উচিত জাতীয় স্বার্থেই নিজেদের শর্তে আমেরিকার সঙ্গে দর কষে এগোনো। যা দিল্লি অন্যান্য দেশের সঙ্গে করেছে। জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করে তবেই চুক্তি করতে হবে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। ১ অগস্টের আগে আংশিক চুক্তির লক্ষ্যে ভারতের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল এখন আমেরিকায়।
আমেরিকা-ইন্দোনেশিয়া চুক্তি কার্যকর হলে ওয়াশিংটন অবাধে পণ্য পাঠাতে পারবে ইন্দোনেশিয়ার বাজারে। আমেরিকার থেকে ১৫০০ কোটি ডলারের জ্বালানি, ৪৫০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য এবং ৫০টি বোয়িং জেট কিনবে তারা। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ১৯% আমদানি শুল্ক বসাবে আমেরিকা। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের দাবি, ট্রাম্পের মন্তব্য এই কারণেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ভারতের সঙ্গে চুক্তিও কি আমেরিকাকেই আখেরে সুবিধা করে দেবে বিশ্বের এই সম্ভাবনাময় বাজারে ব্যবসা বাড়াতে, উঠেছে প্রশ্ন। আজ এক সাক্ষাৎকারে মহেন্দ্র দেব বলেন, ‘‘জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে সমস্ত দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই করা হচ্ছে। দু’পক্ষের স্বার্থ রক্ষার উপরেই চুক্তি নির্ভর করছে।’’ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘সরকারের প্রতিনিধিরা আমাদের উদ্বেগ এবং জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রাখবেন বলে আশা করি। চুক্তি নিশ্চয়ই তুল্যমূল্য হবে।’’ উল্লেখ্য, আমেরিকা চায় ভারত তাদের জন্য কৃষি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার খুলে দিক। নয়াদিল্লি তাতে নারাজ। এই জায়গায় দুই পক্ষই অনমনীয়।
আজ ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল অবশ্য বিষয়টি কিছুটা এড়িয়ে গিয়েছেন। শুধু বলেছেন, ‘‘বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। যখন তা শেষ হবে আমরা ঘোষণা করব।” ভারত-পাকিস্তান মধ্যস্থতায় ট্রাম্পের দাবির ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, “সংঘাত বিরতির প্রশ্নে আমাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করছি।”
চিন্তা যেখানে
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ার মতো চুক্তি হবে ভারতের সঙ্গে।
ইন্দোনেশিয়া আমেরিকার জন্য বাজার পুরোপুরি খুলে দিচ্ছে। নেবে না কোনও আমদানি শুল্ক।
আমেরিকা উল্টে ১৯% শুল্ক বসাবে তাদের পণ্যে।
জ্বালানি, কৃষিপণ্য ও বোয়িং জেট কিনবে আমেরিকার থেকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)