অসাম্য এখন দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে বলে মোদী সরকারকে আক্রমণ করল কংগ্রেস। ভারতে দারিদ্র ও অসাম্য নিয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট তুলে ধরে বিরোধী দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের দাবি, কেন্দ্রের উচিত ‘কর্পোরেটকে সুবিধা করে দেওয়ার’ স্বভাব ত্যাগ করা, জিএসটিতে সংস্কার ও দরিদ্র পরিবারকে রোজগারে সাহায্য করা। এ ক্ষেত্রে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনা, সঞ্চয়ে উৎসাহ দেওয়ার সওয়াল করেছেন তিনি।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত এক দশকে ভারতে দারিদ্র উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অতি দারিদ্র (২.১৫ ডলার বা প্রায় ১৮৫ টাকার কমে দিন চালান) ২০১১-১২ সালের ১৬.২% থেকে ২০২২-২৩ সালে নেমেছে ২.৩ শতাংশে। ১৭.১ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার উপরে উঠে এসেছেন। রমেশের দাবি, বিশ্ব ব্যাঙ্কই বলছে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালের মাপকাঠিতে বিচার করলে দারিদ্র আরও বেশি হবে। তা ছাড়া, নোট বাতিলের পরের বছরে করা দেশে চাহিদার সমীক্ষায় গ্রামাঞ্চলে বিক্রি কমার রিপোর্টকেও অস্বীকার করেছিল কেন্দ্র। ২০২২-২৩ সালে প্রশ্ন ও মাপকাঠি পাল্টানো হয়।
কংগ্রেস নেতার দাবি, এই অবস্থায় বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুসারে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে ভারতের ক্ষেত্রে দারিদ্রের স্পষ্ট ছবি পেতে দিনে ৩.৬৫ ডলার বা প্রায় ৩১৪ টাকায় মানুষ দিন চালান ধরে হিসাব কষা জরুরি। সেই মাপকাঠিতে ২০২২-এ দেশে দারিদ্র
দাঁড়ায় ২৮.১%। তা আগের ৬১.৮ শতাংশের তুলনায় কম হলেও, এখনও বেশি। তার উপরে ২০২৩-২৪ সালে নীচু তলার ১০ শতাংশের তুলনায় উঁচু তলার ১০ শতাংশের আয় ছিল ১৩গুণ বেশি। যা অসাম্যেরই লক্ষণ।
উপরন্তু রমেশের বক্তব্য, মানুষের আয় বাড়াতে এবং দারিদ্র দূরীকরণে ইউপিএ জমানায় ২০০৪-২০১৪ পর্যন্ত নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। যেমন, একশো দিনের কাজের প্রকল্প, যা ২০০৫ সালে তৈরি। গরিবদের কাছে বিনামূল্যে রেশন পৌঁছতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনাও ইউপিএ সরকারের ২০১৩ সালের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে আনা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)