বিশ্ব বাজারে ব্যারেল প্রতি অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দর ঘোরাফেরা করছে ৬০-৬২ ডলারের মধ্যে। ফলে ভারতের তেল আমদানির খরচ কমেছে। মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার হিসাব, অশোধিত তেলের দাম এ ভাবে কমতে থাকলে চলতি অর্থবর্ষে আমদানি খাতে ভারতের মোট ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা খরচ কমবে। এই প্রসঙ্গে অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত বছরের মার্চে লোকসভা ভোট ঘোষণার ঠিক আগে লিটার প্রতি পেট্রল ও ডিজ়েলের দাম ২ টাকা করে কমিয়েছিল কেন্দ্র। সেই সময়ে ব্রেন্ট ক্রুড ছিল ৭৭ ডলার। এখন দাম তার থেকে অনেক কম। অথচ সেই তেল ভারতে আমদানির খরচ কমার সুবিধা পৌঁছচ্ছে না দেশবাসীর কাছে। উল্টে কম দামের সুযোগ নিয়ে উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়ে সেই রোজগার রাজকোষে তুলছে সরকার।
আমেরিকা চিন বাদে ভারত-সহ অন্যান্য দেশের উপরে চড়া আমদানি শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখলেও শুল্ক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কাটেনি। অর্থনীতি শ্লথ হবে আঁচ করে বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিভিন্ন দেশের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থাগুলি। আর চাহিদায় ভাটা সত্ত্বেও অশোধিত তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির পথে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেক এবং তাদের সহযোগীরা। ফলে চাহিদার থেকে জোগান বাড়বে। এই ত্র্যহস্পর্শেই ব্রেন্ট সম্প্রতি ৬০ ডলারের কাছে নামে। অশোধিত তেল ডব্লিউটিআই ঠেকে ৫৬ ডলারে। দু’টিই প্রায় চার বছরে সর্বনিম্ন। বুধবার রাতে ব্রেন্টের ব্যারেল ছিল ৬০.৯২ ডলার।
ইক্রার বক্তব্য, ভারত অশোধিত তেলের সামগ্রিক চাহিদার ৮৫% আমদানি করে। তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ক্ষেত্রে তা প্রায় ৫০%। বাকিটা উৎপাদন করে নিজে। গত অর্থবর্ষে ওই দুই পণ্যের আমদানিতে খরচ হয়েছিল যথাক্রমে ২৪,২৪০ কোটি ডলার (বর্তমান বিনিময় মূল্যে প্রায় ২০,৫৪,৮২৪ কোটি টাকা) এবং ১৫২০ কোটি ডলার (প্রায় ১,২৮,৮৫০ কোটি টাকা)। ইক্রার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘চলতি অর্থবর্ষে ব্রেন্ট ৬০-৭০ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারতের অশোধিত তেল কেনার খরচ কমতে পারে ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা। এলএনজি-র ক্ষেত্রে তা ৬০০০ কোটি টাকা।’’ তবে একই সঙ্গে ইক্রা জানিয়েছে, তেলের দাম কমায় উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির আয় কমবে। আমদানি খরচ কমায় আয় বাড়বে পেট্রল-ডিজ়েল বিক্রেতাদের কিন্তু সাধারণ মানুষ একটু স্বস্তি পাবেন কি?
সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)