Advertisement
E-Paper

রাজ্যে গভীর সমুদ্র-বন্দর তৈরি আরও অনিশ্চিত

গভীর সমুদ্র-বন্দর ও সাবমেরিন গ্যাসলাইন প্রকল্পে আরও ঘোরালো হল আইনি জট। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দিলেন, ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ প্রকল্পে চাওয়া দরপত্রের কোনও শর্ত বদল করা হবে না। অর্থাৎ পাইপলাইন প্রকল্পটি স্থানান্তরিত করার দাবি তাঁরা মানবেন না।

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৫ ০২:০৪

গভীর সমুদ্র-বন্দর ও সাবমেরিন গ্যাসলাইন প্রকল্পে আরও ঘোরালো হল আইনি জট। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দিলেন, ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ প্রকল্পে চাওয়া দরপত্রের কোনও শর্ত বদল করা হবে না। অর্থাৎ পাইপলাইন প্রকল্পটি স্থানান্তরিত করার দাবি তাঁরা মানবেন না।

আর, এই সিদ্ধান্তের ফলেই নতন করে আইনি লড়াই শুরু হতে চলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। কারণ, প্রকল্প স্থানান্তরিত না-করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফের আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে মুম্বইয়ের বন্দর নির্মাতা সংস্থা আম্মালাইন্স। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ প্রকল্প স্থানান্তরিত করতে ইতিমধ্যেই রিট আবেদন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে আম্মালাইন্স। তাদের যুক্তি, গ্যাসের মতো দাহ্য পদার্থ প্রস্তাবিত বন্দর এলাকার মধ্যে দিয়ে নিয়ে গেলে বিপদের আশঙ্কা থেকে যাবে। সংস্থার দাবি, ওই পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রসুলপুরের বিচুনিয়ায় তাদের প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র-বন্দর প্রকল্প একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আম্মালাইন্সের এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রাজ্য ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চায়। গত ১৪ জুলাই বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ প্রকল্পের শর্ত স্পষ্ট করে জানানোর নির্দেশ দেন। অর্থাৎ প্রকল্প স্থানান্তরিত করা হবে কি না, তা আম্মা-লাইন্সকে জানিয়ে দিতে বলেন। এর উত্তরেই ১০ অগস্ট লেখা চিঠিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রকল্পে কোনও পরিবর্তন হবে না।

একই ভাবে রাজ্যের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন ছিল, প্রথমত, বিচুনিয়ায় গভীর সমুদ্র-বন্দর তৈরির ব্যাপারে রাজ্য এখনও দায়বদ্ধ কি না। দ্বিতীয়ত, অন্য কোথাও বন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিল্প সচিব এস কিশোর চিঠি দিয়ে আম্মালাইন্সকে জানিয়ে দিয়ে -ছেন, বন্দর তৈরিতে সরকার আগ্রহী। তবে উপযুক্ত জায়গা বাছাইয়ের বিষয়টি দেখবেন রাজ্য সরকার নিযুক্ত ট্রানজাকশন অ্যাডভাইজার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।

রাজ্য সরকারের গভীর সমুদ্র-বন্দর প্রকল্প আইনি জটে আগেই জড়িয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র-বন্দর গড়ার জন্য বাম আমলে দেওয়া লেটার অব ইনটেন্ট অযৌক্তিক ভাবে নাকচ করার অভিযোগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে যায় আম্মালাইন্স। সেই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র পাল নির্দেশ দেন, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও আদালতের অনুমতি ছাড়া ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিতে পারবে না রাজ্য সরকার।

ছ’হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্র-বন্দর প্রকল্প নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতা ও অসহযোগিতার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তার উপরে আইনি সমস্যার জেরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এই প্রকল্পের সঙ্গেই জড়িয়ে ৪০০০ কোটি টাকার এলএনজি (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল প্রকল্পও। আর এই জোড়া আইনি লড়াইয়ের কারণে রাজ্যে থমকে রয়েছে দশ হাজার কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ। এ বার আইনি তরজা আরও জটিল দিকে বাঁক নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

রাজ্যের শিল্পমহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নে অন্যতম বাধা বন্দর। কলকাতা ও হলদিয়া, দুই বন্দরেই নাব্যতার অভাবে জাহাজ আনাগোনায় চূড়ান্ত সমস্যা রয়েছে। সমাধানসূত্র হিসেবে গভীর সমুদ্র -বন্দরের প্রসঙ্গ বার বার উঠে আসে। এই পরিস্থিতিতে বন্দর তৈরির জন্য লগ্নিকারী পেয়েও রাজ্য কেন তা হেলায় হারাচ্ছে, তার কোনও যুক্তি খুঁজে পায়নি শিল্পমহল।

deep sea port submarine gasline project uncertainty gargi guha thakurata ammalines bichunia deep sea port abp business news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy