সরকার মতামত অবশ্যই চেয়েছিল। কিন্তু নোট নাকচে তাঁর বিন্দুমাত্র সায় ছিল না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন। একই সঙ্গে, ফের চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন মোদী সরকারের ওই ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্তকে।
তড়িঘড়ি জিএসটি চালু নিয়ে তবু কিছুটা নরম রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। তাঁর মতে, ওই কর বসানোর বিষয়টি যে ভাবে কার্যকর করা হয়েছে, তা আরও ভাল হতে পারত। কিন্তু তা বলে পরিস্থিতি এখনই একেবারে হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো নয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুল অব বিজনেসের অধ্যাপক রাজন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলে। সেখানেই এই নোটবন্দি আর জিএসটির প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। তাঁর মতে, নোটবন্দিতে পরিকল্পনার অভাব ছিল। ভাবনাচিন্তায় দৈন্যের ছাপ সেখানে স্পষ্ট। শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নরের কথায়, ‘‘অর্থনীতি থেকে রাতারাতি ৮৭.৫% মূল্যের নোট তুলে নিতে হলে, আগে থেকে তা ছেপে তৈরি রাখা জরুরি। যাতে দ্রুত সেই নগদ বাজারে ফেরানো যায়।’’ কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা ছিল না। সরকার যে ভাবে লুকিয়ে রাখা কালো টাকা হাতেনাতে ধরার কথা ভেবেছিল, তাকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতের মতো দেশে এ সমস্ত ক্ষেত্রে বিকল্প রাস্তা চট করে বেরিয়ে পড়ে।
রাজনের আক্ষেপ, নোটবন্দিতে ১.৫-২ শতাংশ বিন্দু ধাক্কা খেয়েছে বৃদ্ধি। কাজ হারিয়েছেন অসংগঠিত ক্ষেত্রের বহু কর্মী। যার সংখ্যা চট করে জানা যাবে না বলেই ধারণা তাঁর।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার আগে রাজন বলেছিলেন, সেখানে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নিতে তাঁর আপত্তি ছিল না। কিন্তু কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় ঐকমত্য হয়নি। বিপুল জল্পনা যে, নোটবন্দি নিয়ে মতানৈক্যেই সরেছেন তিনি। এ দিন রাজনের কথা সেই জল্পনা ফের কিছুটা উস্কে দিল বলে ধারণা অনেকের।