E-Paper

বহু দেশের চেয়ে এখনও শেয়ারের দাম বেশি ভারতে, বাজার এত নামার পরেও তাই থাকছে চিন্তা

সপ্তাহের শেষ তিন দিনে নিফ্‌টি ৪৭০ উঠে হয়েছে ২২,৫৫২। উত্থান ধরে রাখা যাবে কি না, তা বলার সময় আসেনি।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০৭:৫৪
বাজার উঠলেও কাটেনি উদ্বেগ।

বাজার উঠলেও কাটেনি উদ্বেগ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অতলে তলিয়ে যাওয়া বাজারে কিছুটা প্রাণের স্পন্দন দেখা গিয়েছে গত সপ্তাহে। বহু দিন পরে সপ্তাহের হিসেবে সূচক উঠেছে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার সেনসেক্স এগিয়েছে মোট ১৩৫০ পয়েন্ট। ৭২,০০০ থেকে ফিরেছে ৭৪ হাজারে (৭৪,৩৩৩)। সপ্তাহের শেষ তিন দিনে নিফ্‌টি ৪৭০ উঠে হয়েছে ২২,৫৫২। উত্থান ধরে রাখা যাবে কি না, তা বলার সময় আসেনি। তবে আতঙ্ককে পিছনে ফেলে ভাল লাগার পরিবেশ তৈরি হওয়ার বাতাবরণ সৃষ্টি হলে লগ্নিকারীরা কিছুটা স্বস্তি পান।

বাজার ভাল খবর হাতড়াচ্ছে। ভারতে বিদেশি লগ্নি সংস্থার শেয়ার বিক্রি আগের থেকে কমেছে। শিল্পোৎপাদনের পিএমআই সূচক কমে ৫৬.৩-এ নামলেও, গত মাসে তা পরিষেবার ক্ষেত্রে ৫৬.৫ থেকে উঠে ৫৯ হয়েছে। এটি ৫০-এর বেশি মানে বৃদ্ধি। আমেরিকার শুল্ক নীতি বিশ্লেষণেও ব্যস্ত বাজার। খারাপের মধ্যে ভালর খোঁজ চলছে। তারা শুল্ক বাড়ালে বিভিন্ন শিল্পে তার প্রভাব অঙ্ক কষে দেখা হচ্ছে। সন্ধান চলছে, শুল্ক নীতির হাত ধরে নয়া সুযোগ তৈরির।

কানাডা, মেক্সিকো, চিনা পণ্যে আমেরিকা ২০%-২৫% শুল্ক বসানোয় সেখানে সেগুলির আমদানি কমবে। সেই শূন্যস্থান ভারত কতটা দখল করতে পারে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভারতে আমদানি শুল্ক কমলে, সেই হারই নেবে আমেরিকা। দ্বিপাক্ষিক শুল্ক নিয়ে বৈঠক সেরে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সে দেশ ঘুরে এসেছেন। আশা, সেখান থেকে ভাল কিছু বেরোতে পারে। অন্য দিকে, আমেরিকা থেকে পণ্য আমদানিতে চিন, মেক্সিকো, কানাডার বিধিনিষেধ এই তিন দেশে আমেরিকার পণ্য যাওয়া কমালে, তা ভারতের জন্যে লাভের হতে পারে। তবে চিন কানাডার কিছু পণ্যে শুল্ক বসানোর কথা বলেছে। অর্থাৎ শুল্ক যুদ্ধ আশু থামার লক্ষণ নেই। তবে অভিজ্ঞতা বলছে, ট্রাম্প যতটা গর্জান, সব ক্ষেত্রে ততটা বর্ষান না। বহু সিদ্ধান্ত ফেরান বা শিথিল করেন। আমেরিকায় কিছু শুল্ক সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২ এপ্রিল। সবার নজর সে দিকে।

এ দিকে, ফান্ডের নতুন ইসু (এনএফও) থেকে প্রাপ্ত তহবিল ৩০ দিনের মধ্যে লগ্নি করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সেবি। ফলে ইসু বন্ধ হলেই তার টাকা বাজারে ঢুকবে। শেয়ারের চাহিদা বাড়বে। এ ছাড়া, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের ব্যারেল নেমেছে ৭০.৩৬ ডলারে, যা গড় দামের থেকে বেশ কম। এর পরে ফেব্রুয়ারির মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কমলে তা বাজারের জন্য সদর্থক হবে। কিছু পণ্যে জিএসটি কমার ইঙ্গিতও মিলেছে। বহু ভাল শেয়ার ৩০%-৪০% কমে মিলছে। তার সুযোগ নিচ্ছেন কিছু সাধারণ লগ্নিকারী এবং ফান্ড। যে কারণে বিদেশি সংস্থাগুলি শেয়ার বেচলেও গত সপ্তাহে বাজার উঠেছে।

তবে উদ্বেগ কাটেনি। অনেক দেশের থেকে ভারতীয় শেয়ারের দাম ও আয়ের অনুপাত (পি ই রেশিয়ো) এখনও অনেক বেশি। যেমন, চিনের পি ই রেশিয়ো যখন ১০.০৬, তখন ভারতের ২৩.৩৮। অর্থাৎ চিনের থেকে এ দেশে শেয়ারের দাম অনেক বেশি। যে কারণে বহু বিদেশি লগ্নি সরছে চিনে। ওয়ার্ল্ডপিইরেশিয়ো.কম-এর তথ্য: আমেরিকার পি ই রেশিয়ো ২৫.১৩, জার্মানির ১৭.৮০, ব্রিটেনের ১৭.৮৪, হংকং-এর ১৪.৭৩। শেয়ারের বাজার দরকে শেয়ার পিছু আয় (ইপিএস) দিয়ে ভাগ করলে এই অনুপাত মেলে। এখন শুধু সূচকের দিকে না তাকিয়ে পছন্দের শেয়ারে চোখ রাখা উচিত। ভাল শেয়ার বা ফান্ড কম দামে পেলেই একটু করে কেনা যায়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Share Market Foreign investment Tariffs

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy