—প্রতীকী চিত্র।
সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনে বাজারের যে দৌড় দেখা গিয়েছিল, এখনও তা পুরো মাত্রায় জারি। টানা ১১টি লেনদেনে সেনসেক্স উঠেছে ৩০০৮ পয়েন্ট। একগুচ্ছ আশঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে ৬৪,৮৩১ থেকে নাগাড়ে বেড়ে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবার তা পৌঁছেছে ৬৭,৮৩৯ অঙ্কে। নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে নিফ্টিও। ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম পার হয় ২০ হাজার। দু’দিন পরে সপ্তাহ শেষ করে ২০,১৯২ অঙ্কে।
বিএসইতে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট বাজারদর ছুঁয়েছে ৩২৩.৪১ লক্ষ কোটি টাকা। ১১ দিনে উত্থান ৪.৬৪%। নিফ্টি ১০ হাজার স্পর্শ করেছিল ২০১৭-র ২৫ জুলাই। মাত্র ছ’বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। বড় মেয়াদে এত ভাল রিটার্ন আর কোথাও পাওয়া হয়তো অসম্ভব। করও দিতে হয় কম। শেয়ার কেনার এক বছর পরে বিক্রি করে লাভ হলে, তার প্রথম ১ লক্ষ টাকায় (বছরে) কর বসে না। লাভ এর বেশি হলে কর ১০%। কেনার এক বছরের মধ্যে শেয়ার বেচে লাভ হলে ১৫%। শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডেও করের এই সুবিধা আছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শেয়ার-ফান্ডে লগ্নি বাড়ছে লাফিয়ে। বিএসই-তে লগ্নিকারী ১৪.২৮ কোটি। দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১০%। ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে সুদ বেড়েছে, লগ্নিও সুরক্ষিত। তবু ৩০% কর দেওয়ার পরে সেগুলির তেমন আকর্ষণ থাকে না।
স্বাভাবিক নিয়মেই উঁচু বাজারে সংশোধন হয়। বড় পতন হতে পারে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরে বিপর্যয় ঘটলে। যেমন, ২০০৮-এ বিশ্ব মন্দা ও ২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাবে হয়েছিল। কিন্তু দু’বারই বাজার তা কাটিয়ে ওঠে অল্প সময়ের মধ্যে। আর্থিক বৃদ্ধির গতির নিরিখে ভারতীয় অর্থনীতি এখন শীর্ষে। গত এপ্রিল-জুনে জিডিপি বেড়েছে ৭.৮%। বিরোধীরা বলছেন, এই হার বাড়িয়ে দেখানো। চড়া মূল্যবৃদ্ধির হিসাব ওতে নেই। ফলে তা বাস্তব পরিস্থিতিকে তুলে ধরছে না। তবে লগ্নিকারীদের প্রত্যাশা বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে, এখন অর্থনীতির এই মজবুত অবস্থা বহাল থাকবে। তাই সংশোধন হয়ে সূচক নামলেও, তা হবে সাময়িক।
বহু ভাল শেয়ারের দাম চড়ে থাকায় অনেকে সেগুলি ছুঁতে সাহস পাচ্ছেন না। তাই সম্প্রতি লগ্নিকারীদের নজর পড়েছে কম দামি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শেয়ারে। ফলে অনেকটা করে বেড়েছে ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শেয়ার দর। লগ্নি টানছে প্রতিরক্ষা, জি-২০ সম্মেলন থেকে উপকৃত, কৃত্রিম মেধা নিয়ে কাজ করা, বৈদ্যুতিক যান, ব্যাটারি নির্মাতা এবং ইথানল উৎপাদনকারী কিছু সংস্থা।
শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডেও রিটার্ন বেড়েছে। তবে উঁচু বাজারের ঝুঁকি এড়াতে এখানে এসআইপি পদ্ধতিতে প্রতি মাসে লগ্নি করা ভাল। বড় মেয়াদে রিটার্নের সম্ভাবনা বেশি। যাঁরা শুধু ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে টাকা রাখেন, তাঁরাও ছোট করে এসআইপি খুলতে পারেন।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy