Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ বার ভুয়ো টাওয়ার সংস্থার রমরমায় মুশকিলে আসলরা

আমজনতার ধারণা, ইচ্ছে করলেই হয়তো বাড়ির ছাদে বা ফাঁকা জমিতে মোবাইল টেলিকম পরিষেবা টাওয়ার বসানো যায়। টাওয়ার শিল্পের দাবি, সেই ‘ভ্রান্ত’ ধারণার সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার চক্রে ফেঁদেছে কিছু ভুয়ো টাওয়ার সংস্থা। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে নিয়ম মেনে চলা টাওয়ার সংস্থাগুলিকে।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৯
Share: Save:

আমজনতার ধারণা, ইচ্ছে করলেই হয়তো বাড়ির ছাদে বা ফাঁকা জমিতে মোবাইল টেলিকম পরিষেবা টাওয়ার বসানো যায়। টাওয়ার শিল্পের দাবি, সেই ‘ভ্রান্ত’ ধারণার সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার চক্রে ফেঁদেছে কিছু ভুয়ো টাওয়ার সংস্থা। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে নিয়ম মেনে চলা টাওয়ার সংস্থাগুলিকে। প্রতারিতরা অনেক সময় তাদের কাজেও বাধা দেওয়ায় প্রভাব পড়ছে মোবাইল পরিষেবার উপর।

দু’পয়সা আয়ের লক্ষ্যে অনেকেই বাড়ি বা জমিতে মোবাইলের টাওয়ার বসাতে আগ্রহী হন। আর সেই চাহিদারই সুযোগ নেয় ভুয়ো টাওয়ার সংস্থাগুলি। তারা কখনও কর দেওয়ার জন্য বা টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি-র (ট্রাই) কাছ থেকে ‘নো অবজেকশান সার্টিফিকেট’ (এনওসি) জোগাড় করে দেওয়ার জন্য আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে টাকা চায়। এ ভাবে কয়েক লক্ষ টাকা হাতানোর পরে আর সেই সব সংস্থার হদিস মেলে না। এ নিয়ে পুলিস-প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানোর পরও এখনও প্রতারণা চক্র সক্রিয় বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

ইন্ডাস টাওয়ার্সের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সিইও বালাজী রামন জানান, ভুয়ো সংস্থাগুলি বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া দেওয়ার ‘অবাস্তব’ প্রলোভন দেয়। ফলে ইন্ডাস-এর মতো সংস্থার কাছেও সেই চড়া দরে ভাড়া হাঁকেন জমি বা বাড়ির মালিক। আবার আগে কেউ প্রতারিত হলে তার দায়ও এসে পড়ছে তাদের উপর। এ নিয়ে তাঁরা সংস্থাগত ভাবে ও টাওয়ার শিল্পের সংগঠনের পক্ষ থেকে পুলিসের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, দাবি ইন্ডাস-কর্তার। সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচিও নিচ্ছেন তাঁরা।

তাঁদের বক্তব্য, টাওয়ার বসানোর নিয়মকানুন সম্পর্কে অজ্ঞতারই সুযোগ নিচ্ছে প্রতারক সংস্থাগুলি। তিনি বলেন, সকলেরই ধারণা, টাওয়ার সংস্থা বা জমি-বাড়ির মালিক জায়গা নির্বাচন করে, যা একেবারেই ভ্রান্ত। কেউ আগ্রহী হলেই যেমন তাঁর বাড়ির ছাদে বা জমিতে টাওয়ার বসাতে পারেন না তেমনই টাওয়ার সংস্থাও তা স্থির করে না। জায়গা নির্বাচনের বিষয়টি পুরোপুরি প্রযুক্তিগত যুক্তি মেনে চলে। টেলিকম পরিষেবা দেওয়ার জন্য কোন জায়গাটি উপযুক্ত তার প্রযুক্তিগত মূল্যায়ণ করে বিভিন্ন টেলিকম সংস্থা। তারপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে জমি-বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে তা চূড়ান্ত করে টাওয়ার সংস্থা। এবং চুক্তিমতো জমি বা বাড়ির মালিক ভাড়া পেয়ে থাকেন। টাওয়ার বা টেলিকম সংস্থা কোনও কর নেয় না। পাশাপাশি যে ভাবে ভুয়ো টাওয়ার সংস্থাগুলি টাওয়ার বসানোর সরকারি নির্দেশের কথা বলে টাকা চায় তাও একেবারেই ভ্রান্ত বলে জানিয়েছে ট্রাই। তাদের বক্তব্য, ট্রাই এ রকম কোনও ছাড়পত্রও দেয় না। ফলে সেই বাবদ অর্থ নেওয়ারও কোনও প্রশ্ন নেই।

তবে বালাজী জানান, কোনও জায়গার আগ্রহী মালিক তাঁদের সংস্থার ওয়েবসাইটের পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করাতেই পারেন। প্রযুক্তি মুল্যায়ণে পরে যদি দেখা যায়, উপযুক্ত এলাকার মধ্যে সেটি পড়ছে, তখনই একমাত্র এ নিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE