Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

উন্নতি যৎসামান্য, ফলে বাজারের দৌড়েও উদ্বেগ

পূর্ণ লকডাউনের সময়ের তুলনায় জুনে দেশের অর্থনীতির সূচকগুলির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও, তা স্বাভাবিক অবস্থার ধারে পাশে পৌঁছয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

অমিতাভ গুহ সরকার 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

অতিমারির সময়ে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগজনক খবর অব্যাহত থাকলেও এশিয়া এবং আমেরিকার শেয়ার বাজার তাকে উপেক্ষা করেই উঠে চলেছে। গত শুক্রবার ৩৬ হাজারের গণ্ডি পার করেছে সেনসেক্স। এই সূচকের সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল ৪২ হাজারের ঘরে। সেই জায়গা থেকে এখনকার অবস্থান মাত্র ১৪% নীচে। লকডাউন পর্বে যে সূচক ২৫ হাজারের ঘরে নেমে গিয়েছিল, তার এই উত্থানে খুশি শেয়ার তথা ফান্ডের লগ্নিকারীরা।

পূর্ণ লকডাউনের সময়ের তুলনায় জুনে দেশের অর্থনীতির সূচকগুলির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও, তা স্বাভাবিক অবস্থার ধারে পাশে পৌঁছয়নি। সে কারণেই অনেকের প্রশ্ন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যখন সর্বত্র খারাপ, তখন কিসের ভরসার বাজার এতটা উঠছে? অনেকের আশঙ্কা, উপযুক্ত কারণ ছাড়াই এতটা ওঠার পর হঠাৎ বড় পতন আসবে না তো!

তবে বাজারের সাম্প্রতিক উত্থানের পিছনে কয়েকটি কারণও রয়েছে। শীঘ্রই করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের সম্ভাবনা যার অন্যতম। এই প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চলছে অনেক দেশে। শুরু হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের উপর পরীক্ষাও। অনেকের আশা, আর কয়েক মাসের মধ্যেই চলে আসবে মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক। গবেষণা চলছে ভারতেও। পরীক্ষায় সাফল্যের আশায় কোনও কোনও সংস্থা উৎপাদনও শুরু করে দিয়েছে বড় আকারে। ভাইরাস প্রতিরোধ করা গেলে বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্রুত প্রাণ ফিরবে, এই আশাতেই গতি ফিরেছে শেয়ার বাজারে।

এর পাশাপাশি, অতিমারির বছরে ভারতকে বাড়তি আশা জোগাচ্ছে স্বাভাবিকের তুলনায় ভাল বর্ষা। এ বার বর্ষা সময় মতো এসেছে এবং জুনে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের ১৮% বেশি। কৃষিজমি সময় মতো জল পাওয়ায় বীজ বপনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। আশা, এ বছর ফসল ভাল হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

শিল্পেও শুরু হয়েছে উৎপাদন ও বিক্রি। যদিও করোনা মাঝেমধ্যেই বিঘ্ন ঘটাচ্ছে উৎপাদনে। যেমন, বজাজ অটোর মহারাষ্ট্রের ওয়ালুজ কারখানায় ২৫০ জন কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় শ্রমিকদের তরফে দাবি উঠেছে ওই কারখানা কিছু দিনের জন্য বন্ধ রাখার।

বিভিন্ন শিল্পে উৎপাদন শুরু হলেও অর্থনীতি যে এখনও ধুঁকছে, বিভিন্ন পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট—

• কারখানার উৎপাদন সূচক (পিএমআই) ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৫৪.৫। মাঝে তলানিতে পৌঁছনোর পর জুনে কিছুটা বেড়ে ৪৭.২ হলেও, তাকে ভাল বলা যায় না মোটেই।

• গত মাসে গাড়ি বিক্রি শুরু হলেও বেশিরভাগ সংস্থার বিক্রিই আগের বছরের জুনের ৫০ শতাংশে পৌঁছতে পারেনি।

• প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলিতে মে মাসে উৎপাদন কমেছে ২৩.৪%।

• এপ্রিল, মে মাসে জিএসটি সংগ্রহ ছিল ৩২,২৯৪ কোটি এবং ৬২,০০৯ কোটি টাকা। জুনে ৯০,৯১৭ কোটি হলেও লক্ষ্যমাত্রার অনেক নীচে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Indian Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE