নাম না-করে নিশানা রাজনকে। ফাইল ছবি।
ভারতের জিডিপি-র ধারাবাহিক শ্লথ গতি নিয়ে দিন তিনেক আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। দাবি করেছিলেন, বিপজ্জনক ভাবে অতীতের ‘হিন্দু আর্থিক বৃদ্ধি’-র (যখন গড় বৃদ্ধির হার ছিল ৪%) কাছাকাছি দাঁড়িয়ে দেশ। রাজনের নাম না-করলেও বর্তমান আর্থিক অবস্থার সঙ্গে অতীতের তুলনা টানা ঠিক নয় বলে দাবি করল স্টেট ব্যাঙ্ক (এসবিআই)-এর গবেষণা শাখা ইকোর্যাপের রিপোর্ট। এক ধাপ এগিয়ে তাদের স্পষ্ট বার্তা, ওই সব যুক্তি দুরভিসন্ধিমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট ও আগাম ধারণার বশবর্তী হয়ে করা। বরং নানা মাপকাঠিতে দেশের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এপ্রিল-জুনের পর থেকে টানা কমেছে আর্থিক বৃদ্ধির হার। গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা নেমেছে৪.৪ শতাংশে। কেন্দ্র আগের অর্থবর্ষের চড়া বৃদ্ধির তুলনায় ওই হার কম হওয়ার যুক্তি দিলেও রাজনের মতে, ধারাবাহিক ভাবে বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া বিপজ্জনক। চিন্তা বাড়াচ্ছে বেসরকারি লগ্নিতে খরা, ঝিমিয়ে থাকা উৎপাদন এবং বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কাও।
এসবিআই-ইকোর্যাপের গবেষণা শাখার মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষের রিপোর্টে অবশ্য কারও নাম না করে ত্রৈমাসিকের আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে বক্তব্যের বিরোধিতাই করা হয়েছে। সেখানে দাবি, ২০২২-২৩ সালে ধারাবাহিক ভাবে হ্রাসের প্রেক্ষিতে ‘হিন্দু আর্থিক বৃদ্ধি’-র হারের উল্লেখ বিতর্ক তৈরি করছে। তাদের যুক্তি, ত্রৈমাসিকের পরিসংখ্যানকে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলাইভাল। বরং সঞ্চয়, লগ্নি ইত্যাদি মাপকাঠিতে ওই মন্তব্য দুরভিসন্ধিমূলক ও পক্ষপাতদুষ্ট।
দেশের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতির দাবি করে ইকোর্যাপ বলছে, সরকারের সার্বিক মূলধন ২০২০-২১ সালের ১০.৭% থেকে পরের বছরে বেড়ে হয়েছে ১১.৮%, যা বেসরকারি ক্ষেত্রেও গতি এনেছে। গত কয়েকটি বাজেটে বেড়েছে মূলধনী খরচও। একই সময়ে বেসরকারি লগ্নিও ১০% থেকে বেড়ে হয়েছে ১০.৮%।
অন্য দিকে, সার্বিক সঞ্চয়ের হার ২০২১-২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৩০%। ২০২০-২১ সালে যা ছিল ২১%। চলতি অর্থবর্ষে সেটি ৩১% ছাড়াবে বলে আশা। একই সঙ্গে বাড়তি উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত মূলধন জোগাড়ের পরিস্থিতিও উন্নত হয়েছে। উৎপাদনের খরচ কমেছে। এর পাশাপাশি বিশ্বের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে ভারতের বৃদ্ধির হার ৭% হলেও তা যে কোনও মাপকাঠিতেই সন্তোষজনক বলে দাবি ইকোর্যাপের।
গত ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির গতি কমা সাময়িক বলে দাবি করেছে মূল্যায়ন সংস্থা সংস্থা মুডি’জ়ও। তাদের মতে, বরং তা এক অর্থে মঙ্গলজনক। কারণ, এই গতি কমা চাহিদায় জোর দিতে সাহায্য করবে। বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দেশের বাজারই মূল চালিকাশক্তি। তাতে গতি আসার পাশাপাশি আমেরিকা-ইউরোপে চাহিদা ফিরলে বৃদ্ধির চাকায় আরও গতি আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy