Advertisement
E-Paper

ঘোষণা হল না বৈদ্যুতিক গাড়ি নীতি

শিল্পের সঙ্গে সরকারের তো বটেই। মতপার্থক্য রয়েছে কেন্দ্রের অন্দরেও। মূলত সে জন্যই শুক্রবার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকেও ঘোষণা করা গেল না বৈদ্যুতিক ও বিকল্প জ্বালানির গাড়ির জন্য নতুন নীতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৫
প্রত্যাশা: নীতি আয়োগ আয়োজিত ‘মুভ গ্লোবাল মোবিলিটি সামিট’-এ মোদী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

প্রত্যাশা: নীতি আয়োগ আয়োজিত ‘মুভ গ্লোবাল মোবিলিটি সামিট’-এ মোদী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

শিল্পের সঙ্গে সরকারের তো বটেই। মতপার্থক্য রয়েছে কেন্দ্রের অন্দরেও। মূলত সে জন্যই শুক্রবার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকেও ঘোষণা করা গেল না বৈদ্যুতিক ও বিকল্প জ্বালানির গাড়ির জন্য নতুন নীতি।

অনেক দিন ধরেই এ নিয়ে সার্বিক নীতি ঘোষণার দাবি কর সংশ্লিষ্ট শিল্প। এমনও শোনা যাচ্ছিল যে, তা হতে পারে এ দিনই। কিন্তু তার বদলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুধু ‘মুভ’-এর মঞ্চ থেকে আশ্বাস দিলেন, ভারত যাতে বিকল্প জ্বালানির গাড়িতে পথিকৃৎ হয়ে উঠতে পারে, তার জন্য খুব শীঘ্রই নতুন নীতি ঘোষণা হবে।

ভারতে বৈদ্যুতিক ও বিকল্প জ্বালানির গাড়ি এনেছে সুজুকি, টয়োটা, হোন্ডা, মহীন্দ্রার মতো বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু তা সত্ত্বেও, এই সংক্রান্ত নীতি নিয়ে মতের ফারাক বিস্তর। যেমন, সরকার আগেভাগেই বলেছে ২০৩০ সালে রাস্তায় নামা সব নতুন গাড়িই হবে বৈদ্যুতিক। কিন্তু গাড়ি শিল্প সময়সীমা চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে নয়।

তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র কখনও বলছে, নতুন নীতি প্রয়োজন নেই। কারণ বিভিন্ন দিক থেকে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কখনও আবার বলা হচ্ছে, পেট্রল-ডিজেল গাড়িও খারাপ নয়। সবার আগে তাই সার্বিক নীতি তৈরির দাবি তুলছে শিল্প।

সরকারের একাংশের মত, এত দিন বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এ বার ওই গাড়ির ব্যাটারি তৈরিতে তা দেওয়া হোক। কারণ, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরির চড়া খরচের ফলেই বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম বাড়ে। চলে যায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। কিন্তু শিল্প মহল এতে কতটা রাজি হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। সেই কারণেই ঠিক হয়, প্রধানমন্ত্রী নিজে সিইও-দের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে দু’চাকা, তিন চাকার গাড়ি তথা গণ পরিবহণে ভর্তুকি দিতে কেন্দ্রের সমস্যা নেই।

স্বপ্ন ফেরি

• বিকল্প জ্বালানির গাড়ি তৈরিতে পথিকৃৎ হতে পারে ভারত।

• ২০৩০ সাল নাগাদ পথে নামা সমস্ত গাড়িই হতে পারে বৈদ্যুতিক।

• প্রথম লক্ষ্য, পাঁচ বছরের মধ্যে ওই গাড়ির সংখ্যাকে নতুন গাড়ির ১৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া।

• ব্যাটারি থেকে ওই গাড়ি তৈরি— লগ্নি টানার সুযোগ প্রতিটি স্তরে।

• এর হাতে ধরে আসবে পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।

• সম্ভাবনা বিপুল কর্মসংস্থানেরও।

• এই শিল্পকে উৎসাহ দিতে শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে পাকাপাকি নীতি।

শিল্পের দাবি

• জোর করে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে লাভ নেই। ক্ষতি কোনও নীতি জবরদস্তি চাপিয়ে দিলেও। তার থেকে বরং সংস্থাগুলির কাছে তাদের সুবিধা-অসুবিধা মন দিয়ে শুনুক কেন্দ্রীয় সরকার।

• দ্রুত ঘোষিত হোক সার্বিক নীতি। বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য পরিকাঠামো তৈরি থেকে শুরু করে করছাড়— সবই স্পষ্ট করা হোক সেখানে।

• বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সঙ্গে শিল্পের মতপার্থক্য রয়েছে। নানা রকম মত রয়েছে সরকারের অন্দরমহলেও। দ্রুত সেই সমস্যা মেটাক সরকার।

• পেট্রল, ডিজেলের মতো প্রথাগত জ্বালানির বদলে পুরোপুরি বৈদ্যুতিক এবং আংশিক বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড (যেখানে প্রথাগত এবং বিদ্যুৎ দু’টিই ব্যবহারের বন্দোবস্ত থাকে) গাড়িতে জোর দেওয়া হচ্ছে সারা বিশ্বেই। তাতে তেল নির্ভরতা যেমন কমবে, তেমনই কমবে দূষণও। সে রকম জোর দেওয়া হোক এ দেশেও।

• গত বছরে সারা দেশে এই গাড়ি বিক্রি হয়েছে মাত্র দু’হাজার।

• বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির জন্য গবেষণা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে
মোটা অঙ্কের লগ্নির পরিকল্পনা নিয়েছে বিভিন্ন দেশ। ওই তালিকায় রয়েছে আমেরিকা, চিন, জাপান, ফ্রান্স প্রভৃতি।

সম্মেলন থেকে কি তা হলে এ দিন খালি হাতেই ফিরল শিল্প মহল? বিভিন্ন তরফে এই প্রশ্ন উঠলেও সুজুকি মোটর কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ওসামু সুজুকি ঘোষণা করেন, আগামী মাস থেকেই বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রোটোটাইপের ‘রোড টেস্ট’ শুরু হবে। যাতে টয়োটোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা ব্যাটারিচালিত গাড়ি বাজারে আনতে পারে। বড় বাজার হিসেবে ভারতই যে তাদের প্রধান লক্ষ্য, তা বুঝিয়ে ওসামু জানান, গুজরাতের কারখানায় ২০২০ থেকে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরি হবে।

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দ্রুত বৈদ্যুতিক গাড়ির পথে হাঁটতে ভারী শিল্প মন্ত্রক ফেম প্রকল্প চালু করে। গত বছরের মার্চে তার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে একাধিক বার তা বাড়ানো হয়েছে।

Economy Alternative Energy Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy