লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে সোনার দাম। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে জনপ্রিয় ক্রিপ্টো মুদ্রা বিটকয়েন এবং শেয়ার বাজারের সূচকেও ছাপিয়ে যেতে পারে হলুদ ধাতু। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে আউন্স প্রতি সোনার দর ৩,০৮০ ডলারে পৌঁছবে বলে দাবি করেছে ব্রোকারেজ ফার্ম ‘ভেনচুরা সিকিউরিটিজ়’। এর জেরে হলুদ ধাতুর লগ্নিকারীরা যে যথেষ্টই লাভবান হচ্ছেন, তা বলাই বাহুল্য।
এ বছর এখনও পর্যন্ত ভারতের সবচেয়ে বড় শেয়ারের বাজার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) সূচক নিফটি তিন শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্য দিকে জনপ্রিয় ক্রিপ্টো মুদ্রা বিটকয়েনের দাম বেড়েছে প্রায় চার শতাংশ। সেখানে বছর থেকে তারিখের হিসাবে সোনার দাম ১১ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বছর শেষে হলুদ ধাতুর দরের সূচক ৩০ শতাংশ পেরোতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায় সোনার দাম। গত বছর আরও বেড়ে সূচক পৌঁছোয় ২৭ শতাংশে। এ বছরও দামের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল হলুদ ধাতুর দর। ওই দিন আউন্স প্রতি সোনা বিক্রি হয় ২,৯৪৩ ডলারে।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতার খুচরো বাজারে ১০ গ্রাম পাকা সোনা (পড়ুন ২৪ ক্যারেট) বিক্রি হচ্ছে ৮৫,৪৫০ টাকায়। আর হলমার্কযুক্ত সোনার (পড়ুন ২২ ক্যারেট) দাম দাঁড়িয়েছে ৮১,২৫০ টাকা। হলুদ ধাতু কেনার সময় অবশ্য এর সঙ্গে যুক্ত হবে পণ্য ও পরিষেবা কর (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বা জিএসটি)। সোনায় তিন শতাংশ জিএসটি ধার্য করেছে কেন্দ্র।
হলুদ ধাতুর দর হু-হু করে বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আর তাই টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হলেও সোনাতে বিনিয়োগ অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করছেন লগ্নিকারীরা। ভারতের বাইরে ইউরোপ এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশেও সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
সোনার দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির হলুদ ধাতু ক্রয়কে দায়ী করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। গত বছর কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি কিনেছিল ১,০৪৫ টন সোনা। টানা তিন বছর ধরে হাজার টনের বেশি হলুদ ধাতু কিনে চলেছে বিশ্বের তাবড় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। রাজস্ব ঘাটতি মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এতে চাহিদা বৃদ্ধির জেরে দামি হচ্ছে হলুদ ধাতু।