Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
রাত-ভোর বৈঠক শেষে মিলল সমাধানসূত্র

অবশেষে সূত্র মিলল, গ্রিস থাকছে ইউরোজোনেই

অবশেষে রফা। ১৭ ঘণ্টার আলোচনা শেষে গ্রিসকে ত্রাণ দিতে সম্মত হল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এর জন্য আগের চেয়ে আরও কঠোর শর্ত রেখেছে তারা। সোমবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জুঙ্কার টুইট করে জানিয়ে দিলেন, অনেক খাটাখাটনির পর অবশেষে মিলেছে রফাসূত্র।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ছবি: এএফপি।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ব্রাসেলস শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ১৪:৩৫
Share: Save:

অবশেষে রফা।

১৭ ঘণ্টার আলোচনা শেষে গ্রিসকে ত্রাণ দিতে সম্মত হল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এর জন্য আগের চেয়ে আরও কঠোর শর্ত রেখেছে তারা। সোমবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জুঙ্কার টুইট করে জানিয়ে দিলেন, অনেক খাটাখাটনির পর অবশেষে মিলেছে রফাসূত্র। গ্রিস থাকছে ইউরোপেই।

সমাধানসূত্র অনুসারে, আগামী তিন বছরের জন্য ৮,৬০০ কোটি ইউরো দিতে রাজি হয়েছে ইউরোপ, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ) এবং ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক (ইসিবি)। তবে ত্রাণের অর্থ হাতে পেতে হলে সব শর্তই আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে গ্রিক পার্লামেন্টে পাশ করাতে হবে প্রধানমন্ত্রী অ্যালোক্সিস সিপ্রাসকে।

গ্রিসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ধরে রাখার শেষ চেষ্টা হিসেবে রবিবারই বৈঠকে বসেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু রাত পর্ষন্ত রফাসূত্র না-মেলায় এক সময়ে মনে হয়েছিল গ্রিসকে হয়তো ইউরোপীয় অঞ্চল ছাড়তে হবে। কিন্তু শেষ পর্ষন্ত জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের কঠোর মনোভাবই জয়ী হল। ত্রাণ পেতে দেশের সামনে রাখা সব শর্তই মেনে নিয়ে রাজি হলেন সিপ্রাস। যার মধ্যে শ্রম এবং পেনশন আইনে সংস্কার, কর বাড়ানো, খরচ কমানো তো রয়েছেই, তার সঙ্গেই আছে গ্রিসের ৫ হাজার কোটি ইউরোর সম্পত্তি ট্রাস্ট ফান্ডের হাতে তুলে দেওয়া। যাতে গ্রিক সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ থাকবে না। যা গ্রিসের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা শোধরাতে এবং ঋণ মেটাতে কাজে আসবে। একই সঙ্গে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ-এ ভূমিকা নিয়েও প্রথমে আপত্তি করেছিলেন সিপ্রাস। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও পিছু হটতে হয়েছে তাঁকে। এখন এই সব শর্ত গ্রিক পার্লামেন্টে পাশ করাতে হবে তাঁকে।

আর এখানেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, ঋণদাতাদের শর্ত মেনে কর বাড়ানো ও সরকারি খরচ আরও কমানোয় আপত্তির কারণেই গণভোট নিয়েছিল গ্রিস। সেখানে ইউরোপ, আইএমএফ এবং ইসিবি-র দেওয়া শর্তে নিজেদের অনাস্থা জানিয়েছেন গ্রিসের মানুষ। বিপুল পরিমাণ ‘না’-ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন সিপ্রাসকে। এখন নতুন করে আরও কঠোর কৃচ্ছসাধন তাঁরা মানতে রাজি হবেন কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পাশাপাশি, গত শুক্রবারই গ্রিক পার্লামেন্টে সরকারি খরচ কমানো এবং কর বাড়ানো নিয়ে ভোটাভুটিতে নিজের দলেরই বেশ কয়েকজন সিপ্রাসের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। উল্টে তিনি পাশে পেয়েছেন বিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে। এই অবস্থায় জার্মানি-সহ ঋণদাতাদের দেওয়া আরও কঠোর শর্ত বুধবারের মধ্যে পার্লামেন্টে তিনি পাশ করাতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। সে ক্ষেত্রে হয়তো নিজের দলের কয়েক জন মন্ত্রীকেই বদলাতে হতে পারে সিপ্রাসকে। গ্রিসের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে চলতি বছরেই ফের নতুন করে ভোটও হতে পারে দেশে।

তবে সোমবার ত্রাণ দিতে রাজি হলেও, গ্রিস নিয়ে কোনও ভাবেই সুর নরম করতে রাজি নন মর্কেল। বরং তাঁর দাবি, আগে গ্রিস পার্লামেন্ট বুধবারের মধ্যে এই প্রস্তাব পাশ করুক এবং কিছু কিছু শর্ত কার্যকর করুক, তার পরই পুরোপুরি বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় যেতে সায় দিতে রাজি হবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Euro Summit ESM Greece IMF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE