Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
লগ্নি ৬,৩০০ কোটি টাকা

সানন্দে ফোর্ডের নয়া কারখানা চালু

প্রায় সাড়ে ছ’বছর আগে সিঙ্গুর থেকে ‘বিতাড়িত’ টাটা মোটরস যখন ন্যানো-র নতুন ঘর খুঁজতে ব্যস্ত, গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি রতন টাটাকে এসএমএস করে বলেছিলেন, “গুজরাতে আপনারা স্বাগত’। বলা বাহুল্য, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কয়েক দিনের মধ্যেই আমদাবাদের অদূরে সানন্দে নতুন কারখানা গড়ার জায়গা দিয়েছিল গুজরাত সরকার।

অ্যাস্পায়ার প্রদর্শনে আনন্দীবেন পটেল ও মার্ক ফিল্ডস (ডান দিকে)।

অ্যাস্পায়ার প্রদর্শনে আনন্দীবেন পটেল ও মার্ক ফিল্ডস (ডান দিকে)।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
সানন্দ শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৭
Share: Save:

প্রায় সাড়ে ছ’বছর আগে সিঙ্গুর থেকে ‘বিতাড়িত’ টাটা মোটরস যখন ন্যানো-র নতুন ঘর খুঁজতে ব্যস্ত, গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি রতন টাটাকে এসএমএস করে বলেছিলেন, “গুজরাতে আপনারা স্বাগত’। বলা বাহুল্য, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কয়েক দিনের মধ্যেই আমদাবাদের অদূরে সানন্দে নতুন কারখানা গড়ার জায়গা দিয়েছিল গুজরাত সরকার। সেই ন্যানো কারখানার পাশেই আজ, ফোর্ড ইন্ডিয়া-র নতুন কারখানা উদ্বোধন করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেল বললেন, “ন্যানোর পরে একে একে এখানে আসছে আরও গাড়ি সংস্থা। ক্রমশ গাড়ি শিল্পে দেশের ডেট্রয়েট হয়ে উঠছে গুজরাতের এই অঞ্চল।” অন্য দিকে সিঙ্গুর এখনও সেই জমি জটেই আটকে।

২০০৮-এর অক্টোবরে সানন্দে প্রায় ১১০০ একর জমি পাওয়ার পরে ২০১০-এ এখান থেকেই ন্যানো গাড়ি তৈরি করা শুরু করে টাটা মোটরস। তাদের ঠিক পাশেই ৪৬০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে ফোর্ডের কারখানা। তাদের সহযোগী যন্ত্রাংশ কারখানার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় ৩০০ একর জমি দিয়েছেন গুজরাত শিল্প নিগমকে। কারখানাটি গড়তে ২০১১-র জুলাইতে গুজরাত সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে মার্কিন বহুজাতিকটি। লগ্নির অঙ্ক ১০০ কোটি ডলার বা ৬৩০০ কোটি টাকা। বার্ষিক ২.৪০ লক্ষ গাড়ি তৈরির ব্যবস্থার পাশাপাশি বছরে ২.৭০ লক্ষ ইঞ্জিনও তৈরি হবে কারখানায়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে এই কারখানা প্রায় চার হাজার এবং সহযোগী যন্ত্রাংশ কারখানাগুলি আরও দু’হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে বলে দাবি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। এখানকার বোলেগাঁও-এর বাসিন্দা দিলীপ সিংহ ও প্রবীণভাই জানালেন, ফোর্ডের জন্য তাঁরা জমি দিয়েছেন গুজরাত শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই যেমন কারখানায় চাকরি পেয়েছেন, তেমনই বাকিরা এখানকার জমির টাকায় অন্যত্র জমি কিনছেন। এক কথায় এলাকার বাসিন্দাদের আয় বেড়েছে।

রফতানির বাজার বাড়ানোর লক্ষ্যেই যে এই কারখানা গড়ার পরিকল্পনা, তা এ দিন স্পষ্ট করে দেন ফোর্ডের শীর্ষ কর্তারা। সংস্থার প্রেসিডেন্ট তথা সিইও মার্ক ফিল্ডস-এর আশা, আগামী দিনে ভারত থেকে তাদের রফতানি বাড়বে তিন গুণ। ভারতে সংস্থার শীর্ষ কর্তা নাইজেল হ্যারিস জানান, এখানে তৈরি গাড়ির অর্ধেক ভারতে বিক্রি হবে ও বাকিটা রফতানি হবে। চেন্নাই ও সানন্দের কারখানা মিলিয়ে সংস্থার বার্ষিক গাড়ি উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হবে ৪.৪০ লক্ষ। তেমনই এই কারখানায় তাদের নতুন সেডান ‘ফিগো অ্যাস্পায়ার’ তৈরি হবে। এ দিন সেটি প্রদর্শন করে তারা। এ বছর দেশের বাজারে আসবে সেটি।

বস্তুত, গুজরাতের নজর সানন্দ-বিঠলপুর-হানসালপুর ঘিরে ১২৫ কিমি এলাকা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, যা ভবিষ্যতের ডেট্রয়েট। আর এর পিছনে চালিকাশক্তি সেই ন্যানো প্রকল্প।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE