Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বৃদ্ধির হিসেবেও রাজনীতির রং, প্রশ্নে পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতাই

মোদী সরকারের জিডিপি মাপার ফিতেয় শুধু ছাঁটাই হয়েছে মনমোহন সিংহের জমানার বৃদ্ধির হারই।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২০
Share: Save:

মোদী সরকারের জিডিপি মাপার ফিতেয় শুধু ছাঁটাই হয়েছে মনমোহন সিংহের জমানার বৃদ্ধির হারই। লোকসভা ভোটের আগে এই পরিসংখ্যানের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। এ বার সেই একই প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন আর্থিক উপদেষ্টারাও। এমনকি, এর পরে এই পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু থাকবে, তা নিয়েও কেন্দ্রকে বিঁধলেন তাঁরা।

অর্থ মন্ত্রকের প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা অশোক ভি দেশাই অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘জাতীয় আয় সংক্রান্ত পরিসংখ্যানের রাজনীতিকরণের রাস্তা দেখিয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার।’’ নীতি আয়োগের মতো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ যে ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য প্রকাশ করেছেন, এক নিবন্ধে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। দেশাইয়ের এই মন্তব্য তুলে ধরে প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু টুইট করেছেন, ‘‘দেশাইয়ের নিবন্ধ অনুযায়ী, এই সাম্প্রতিক হিসেব ভারতের সুখ্যাতিতে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে।’’ তাঁর মতে, শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে নয়, গোটা বিশ্বেই অর্থনীতির পরিসংখ্যান ও তার হিসেবের প্রক্রিয়ার জন্য ভারত সকলের থেকে আলাদা ছিল।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আগেই দাবি তুলেছিলেন, এত দিন এই হিসেবের কাজ করত জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশন। এখন নীতি আয়োগ যখন সে দায়িত্ব নিয়েছে, তখন কমিশন তুলে দেওয়া হোক। আজ এক ধাপ এগিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি দাবি তুলেছেন, ওই পরিসংখ্যান প্রত্যাহার করা হোক। তাঁর যুক্তি, ‘‘মোদী সরকার ভারতের পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতাই নষ্ট করে দিয়েছে।’’

মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১৫ সালে জিডিপি হিসেবের পদ্ধতি বদলে দেয়। ২০০৪-০৫-এর বদলে ২০১১-১২-র বাজার দরকে ভিত্তিবর্ষ ধরে হিসেব কষা শুরু হয়। সেই পদ্ধতি প্রয়োগ করেই মনমোহন জমানার আর্থিক বৃদ্ধির হিসেব প্রকাশ করেছে তারা। তাতে মনমোহন জমানার অধিকাংশ বছরেই বৃদ্ধির হার ১ থেকে ২ শতাংশ অঙ্ক কমে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: মোদী-অমিত জমানায় গুজরাতে ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষ ফের সিঁদুরে মেঘ!

কিন্তু এই পরিসংখ্যান তৈরিতে নীতি আয়োগের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের মতে, ‘‘নীতি আয়োগ আগের যোজনা কমিশনের মতোই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এটা আসলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বর্ধিত অংশ। ’’

নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের যুক্তি, পরিসংখ্যান মন্ত্রক ওই হিসেব প্রকাশ করার আগে তাঁদের তা দেখতে বলা হয়েছিল। কে বলেছিল, তা অবশ্য জানাননি তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘আগে তো পরিসংখ্যান দফতর যোজনা কমিশনেরই অংশ ছিল।’’ বিরোধীদের কটাক্ষ, এখন যোজনা কমিশনও নেই। পরিসংখ্যান দফতরও নীতি আয়োগের অধীন নয়। কাজেই রাজীবের যুক্তি খাটছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GDP Narendra Modi Former Financial Advisors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE