Advertisement
E-Paper

এখনও অনিশ্চিত গ্রিসের ভবিষ্যৎ

সততার সঙ্গে রফা। গ্রিসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ধরে রাখার শেষ চেষ্টায় রবিবার ব্রাসেল্‌সে নতুন করে বৈঠক শুরুর ঠিক আগে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি নিজের দেশের আর্থিক সঙ্কটকে ট্র্যাজেডির দিকে নিয়ে যেতে চান না।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৯
বৈঠকে ঢুকছেন সিপ্রাস। ছবি: এএফপি।

বৈঠকে ঢুকছেন সিপ্রাস। ছবি: এএফপি।

সততার সঙ্গে রফা।

গ্রিসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ধরে রাখার শেষ চেষ্টায় রবিবার ব্রাসেল্‌সে নতুন করে বৈঠক শুরুর ঠিক আগে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি নিজের দেশের আর্থিক সঙ্কটকে ট্র্যাজেডির দিকে নিয়ে যেতে চান না। কিন্তু বাদ সাধল মূলত জার্মানি। ভারতীয় সময় রাত ২টো পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, কোনও ভাবেই সুর নরম করে গ্রিসের সঙ্গে নতুন শর্তে রফায় আসতে নারাজ জার্মান চান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল। একই সুরে আপত্তি জানিয়েছে স্লোভাকিয়া এবং ফিনল্যান্ড। ফলে ইউরোপ, আইএমএফ ও ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের (ইসিবি) ঋণ পেয়ে গ্রিস তার প্রায় দেউলিয়া অর্থনীতিকে বাঁচাতে পারবে কি না, এ দিন সে প্রশ্ন রয়েই গেল।

জার্মানি এ দিন জানিয়েছে, তারা চায় গ্রিস আরও বেশি করে খরচ কমানো, কর বাড়ানোর পথে হাঁটুক। উপরন্তু তাকে ৫ হাজার কোটি ইউরো সরিয়ে রাখতে হবে ঋণ শোধ খাতে। তা না-পারলে আপাতত পাঁচ বছরের জন্য ইউরো মুদ্রা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে তাদের।

বৈঠকের আগে সিপ্রাস বলেছিলেন, ‘‘মানুষ অখণ্ড ইউরোপকেই দেখতে চান। আর সেখানেই তাঁদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। সব পক্ষ চাইলে রফা হবেই।’’ এই ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে জরুরি শীর্ষ বৈঠক শুরু করেন বামপন্থী নেতা সিপ্রাস। পেশ করেন চার পৃষ্ঠার খসড়া প্রস্তাব। সেখানেই ইউরোপীয় নেতাদের দাবি মেনে বুধবারের মধ্যে পার্লামেন্টে আর্থিক সংস্কার নিয়ে নতুন আইন পাশ করানোর ব্যাপারেও কথা েদন তিনি। কিন্তু জার্মানি-সহ কিছু দেশের একগুঁয়ে মনোভাবে বিষয়টি ঝুলেই রইল। ফলে বৈঠক আগামী কাল পর্যন্ত গড়াবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।

ঋণদাতাদের শর্ত মেনে কর বাড়ানো ও সরকারি খরচ আরও কমানোয় আপত্তির কারণেই গণভোট নিয়েছিল গ্রিস, যাতে কৃচ্ছ্রসাধনের বিপক্ষেই রায় দেন গ্রিক জনগণ। ফলে আরও কড়া শর্ত মানা সিপ্রাসের পক্ষে মুশকিল। অথচ এর জেরে ইউরো ছেড়ে বেরোতে হতে পারে গ্রিসকে। এই উভয়সঙ্কটের মধ্যেই কথা চালাচ্ছেন সিপ্রাস, যাতে যোগ দিয়েছেন গ্রিসের নতুন অর্থমন্ত্রী ইউক্লিড সাকালোটস।

ইতিমধ্যেই মার্কিন অর্থ সচিব জ্যাকব লিউ বলেছেন, তিনি গ্রিসের সম্মানজনক শর্তে ঋণ পাওয়ার পক্ষে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সিপ্রাসের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া গ্রিসকে জ্বালানি জোগাতেও রাজি হয়েছে। কিন্তু স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী কড়া ভাষায় বলেছেন, গ্রিসকে বাড়তি দয়া দেখানো যুক্তিহীন। তাঁদেরও অনেক টানাটানির মধ্যে সংস্কারের পথে হাঁটতে হয়েছে। ফলে গ্রিসকে ঋণে ছাড় দেওয়ার বিপক্ষে তাঁরা। যদিও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ ক্লদ জুঙ্কার বলেছেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি গ্রিসকে ধরে রাখতে লড়াই চালাবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ-ও বলেন, তাঁর পক্ষ থেকে রফার জন্য যথাসাধ্য করা হবে। এর আগে আপাতত গ্রিসকে ইউরো অঞ্চলের বাইরে রাখার যে প্রস্তাব উঠেছিল, তা খারিজ করেন তিনি। তবে এঞ্জেলা মার্কেল গ্রিসের সঙ্গে রফায় আসতে বরাবরই যে কড়া মনোভাব নিয়েছেন, তার সমালোচনা করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিট্‌জ।

গ্রিসকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে টিকে থাকতে হলে সিপ্রাসকে অবশ্য ফিরে পেতে হবে সকলের আস্থা। আর তা ফিরে পাওয়ার মূল শর্ত হল সংস্কারের পথে হেঁটে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে নির্দিষ্ট রফা প্রস্তাব দেওয়া।

greece future greece crisis uncertain future greece problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy