প্রতীকী চিত্র।
গত ২০১৯ সালে অর্থনীতি ঝিমোচ্ছিল, সোনার দাম ছিল চড়া। ২০২০-তে কামড় বসায় কোভিড। ফলে টানা দু’টি ধনতেরসে গয়নার বিক্রি মার খেয়েছে। বড় দোকানগুলি কিছু খদ্দের পেলেও, ছোটগুলি কার্যত মাছি তাড়িয়েছে। অতিমারির চোখরাঙানি এ বারও আছে। তবু আগামিকাল ধনতেরস ভাল কাটবে বলে আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘বড়, ছোট, মাঝারি— সব দোকানই ক্রেতা পাবে এ বার। সেই লক্ষণ চোখে পড়ছে। খোঁজ নেওয়ার হিড়িক অনেক বেশি। সব থেকে ভাল খবর, লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে। গয়নার ক্রেতাদের বড়
অংশ মফস্সলের। অনেকেই আসতে পারবেন।’’ অনেক ছোট ব্যবসায়ীর দাবি, ২০১৯ সালে সোনার দাম আগের বছরের থেকে অনেকটা বেশি ছিল। তার উপরে মানুষ হাতে থাকা যে বাড়তি নগদের একাংশ দিয়ে গয়না কেনেন, তাতেও টান পড়েছিল। ফলে ক্রেতার অভাবে কার্যত অন্ধকারেই কাটে ঝলমলে আলোয় সাজানো ছোট-মাঝারি দোকানগুলির। আর ২০২০ তলিয়ে যায় করোনার গ্রাসে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আগুন দরের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, চড়া তেলের দাম, হাতে বাড়তি টাকার অভাব, অতিমারির তৃতীয় ঢেউ— সমস্যা তো এ বারও কম নেই। তা হলে আশা বাড়ছে কোন ভরসায়?
বাবলুবাবু বলছেন জমে থাকা চাহিদার কথা। তাঁর দাবি, ‘‘যাঁরা গত দু’বছর এই দিনে গয়না কিনতে পারেননি, এ বার সম্ভবত আসবেন। কারণ, যাতায়াত বা রাতের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়েছে। ধনতেরসে রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলে।’’ পিসি চন্দ্র জুয়ালার্স গোষ্ঠীর ডিরেক্টর উদয় চন্দ্রও বলছেন, ‘‘কোভিড বিধি মেনে বেরোচ্ছেন অনেকেই। তাই মনে হচ্ছে, গত বছরের থেকে এ বার বিক্রিবাটা ভাল হবে।’’
শিল্পকে বাড়তি আশা জোগাচ্ছে, এক বছরের একটু বেশি সময়ের মধ্যে ১০ গ্রাম পাকা সোনার প্রায় ১০,০০০ টাকা দাম কমা। তা এখন ৪৮,০০০ টাকার কিছু বেশি (জিএসটি বাদে), গয়নার সোনা প্রায় ৪৬,০০০ টাকা। বনগাঁর মাঝারি মাপের গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ বলেন, ‘‘দাম কমায় স্বস্তি পেয়েছি। ধনতেরসে সুফল পাব নিশ্চয়ই। সোনা কিনলে ভবিষ্যতে কত লাভ হতে পারে মানুষ ফের বুঝেছেন।’’
তবে সন্দিহান ছোট গয়না ব্যবসায়ী টগর পোদ্দার। বলছেন, ‘‘আমাদের ক্রেতাদের পুঁজি কম। গত বছরের থেকে দাম কমলেও, দুর্গাপুজোর সময় থেকে এর মধ্যেই ১০০০ টাকা বেড়েছে সোনা। আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। করোনা খরচ করার ক্ষমতা কেড়েছে অনেকের। হয়তো আগের বছরের থেকে বিক্রি একটু বেশি হবে।’’ জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আশিস পেথের অবশ্য আশা, ‘‘কোভিডের কারণে যাঁরা বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই ধনতেরসে গয়না কিনবেন। আশা, কাল থেকেই অনেকে বিয়ের কেনাকাটা করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy