পয়লা বৈশাখের আগে স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের জন্য সুখবর। তিন দিনে কলকাতায় আড়াই হাজার টাকা কমল হলুদ ধাতুর দাম। সামনেই রয়েছে বিয়ের মরসুম। সোনার দর কমায় অলঙ্কারের বিক্রি বাড়বে বলে আশাবাদী গয়না ব্যবসায়ীরা। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, চলতি বছরে আরও কমবে হলুদ ধাতুর দাম। নামতে নামতে সেটি ১০ গ্রাম প্রতি ৫৬ হাজারে আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা।
বিশুদ্ধতার নিরিখে সোনার রকমফের রয়েছে। তবে গয়না তৈরিতে মূলত ২২ ক্যারেটের হলুদ ধাতুই বেশি ব্যবহার করা হয়। এতে খাঁটি সোনার পরিমাণ থাকে ৯১ শতাংশ। এ বছরের ৫ এপ্রিল কলকাতায় ১০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার দর ছিল ৮৬ হাজার ৫০ টাকা। ওই তারিখে ১,২৫০ টাকা হ্রাস পায় হলুদ ধাতুর দাম।
আরও পড়ুন:
এর পর ৬ এবং ৯ এপ্রিল ফের পড়ে যায় সোনার দর। ওই দু’দিনে ১০ গ্রাম গয়না সোনার (২২ ক্যারেট) দর হ্রাস পায় যথাক্রমে ৯৫০ এবং ৫৫০ টাকা। সব মিলিয়ে তিন দিনে মোট দাম কমেছে ২,৭৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে হলুদ ধাতুর দর। এ দিন ১০ গ্রাম গয়না সোনার দর ১,৪৫০ টাকা বৃদ্ধি পায়। ফলে হলুদ ধাতুর দর দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার টাকা।
কলকাতার বাজারে একই ছবি দেখা গিয়েছে খুচরো পাকা সোনার (২৪ ক্যারেট) ক্ষেত্রে। ৫ থেকে ৯ এপ্রিলের মধ্যে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট হলুদ ধাতুর দাম কমেছে ২,৯০০ টাকা। এ দিন লক্ষ্মীবারে এই শ্রেণির সোনার দর ১,৫০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকা সোনার বাটের ক্ষেত্রেও দামের একই রকমের হ্রাস-বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে।
তবে কলকাতার তুলনায় দিল্লিতে বেশি কমেছে সোনার দাম। রাজধানীতে চার দিনে ৪,১৫০ টাকা সস্তা হয়েছে হলুদ ধাতুর দর। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, আগামী কয়েক বছরে সোনার দাম ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে। এর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করছেন তাঁরা। ইউরোপ, এশিয়া-সহ বিশ্বের একাধিক দেশের সঙ্গে ওয়াশিংটন শুল্কযুদ্ধে নামায় যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এর জেরেই সোনা সস্তা হবে বলে দাবি করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
তবে এর উল্টো যুক্তিও রয়েছে। হলুদ ধাতুকে বরাবরই নিরাপদ বিনিয়োগ বলে মনে করা হয়। বিশ্ব অর্থনীতি বা রাজনীতিতে যখনই কোনও সমস্যা হয়েছে, তখনই হলুদ ধাতুতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন লগ্নিকারীরা। ফলে দাম কমলেও তা ৫৬ হাজারে নেমে আসবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা খুবই কঠিন।