Advertisement
E-Paper

গণভোটে হারলে ইস্তফা, ইঙ্গিত গ্রিস সরকারের

সরকারি খরচ কমানো, কর বাড়ানোর শর্তে ত্রাণ প্রকল্প মেনে নেওয়ার বিপক্ষেই এককাট্টা গ্রিস। এ ব্যাপারে জনগণের মতামত জানতে রবিবারের গণভোটের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর, তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার গ্রিসের বামপন্থী সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, জনগণের রায় আর্থিক সংস্কারের পক্ষে গেলে তারা ইস্তফা দিতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০২:১৫
দেওয়াল জুড়ে। আথেন্সে পোস্টার পড়েছে ‘না’ ভোটের পক্ষে। ছবি: এএফপি।

দেওয়াল জুড়ে। আথেন্সে পোস্টার পড়েছে ‘না’ ভোটের পক্ষে। ছবি: এএফপি।

সরকারি খরচ কমানো, কর বাড়ানোর শর্তে ত্রাণ প্রকল্প মেনে নেওয়ার বিপক্ষেই এককাট্টা গ্রিস। এ ব্যাপারে জনগণের মতামত জানতে রবিবারের গণভোটের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর, তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার গ্রিসের বামপন্থী সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, জনগণের রায় আর্থিক সংস্কারের পক্ষে গেলে তারা ইস্তফা দিতে পারে। অন্য দিকে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন বলেছেন, গ্রিসের সঙ্কটের বিরূপ প্রভাব সরাসরি এ দেশে না-পড়লেও টাকার দামে কিছুটা ছাপ ফেলতে পারে ইউরোর পতন। পাশাপাশি, দুনিয়া জুড়েই শেয়ার বাজারে এ দিন কার্যত গ্রিস কাণ্ডের তেমন প্রভাব পড়েনি।

গ্রিসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারুফাকিস এ দিন বেতারে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আন্তর্জাতিক ত্রাণ পেতে ব্যয় সঙ্কোচের পক্ষে মানুষ রায় দিলে তাঁদের সরকার ‘পদত্যাগ করতে পারে’। সে ক্ষেত্রে তদারকি সরকারের হাতে দায়িত্ব দিয়ে তাঁরা সরে যাবেন। আলাদা ভাবে ভারুফাকিস নিজেও অর্থমন্ত্রীর পদে থাকবেন না। পাশাপাশি, তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে আপত্তি সত্ত্বেও আমরা ইউরো মুদ্রা চালু রাখতেই আন্তরিক আগ্রহী।’’

এ দিকে, আইএমএফের ১৬০ কোটি ডলার শোধ করতে না-পেরে ঋণখেলাপি দেশের তালিকায় নাম ওঠা গ্রিসের সঙ্কটকে আরও ঘোরালো করে তুলতে পারে ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক (ইসিবি)-র ৩৫০ কোটি ইউরো বা ২৪,৫০০ কোটি টাকার ঋণ, যা মেটানোর কথা ২০ জুলাই। ইসিবি-র পরিচালন পর্ষদ আরও জানিয়ে দিয়েছে, জরুরি তহবিল হিসেবে যেটুকু অর্থ জুগিয়ে তারা গ্রিসকে বাঁচিয়ে রেখেছে, তার সীমাও বাড়ছে না। আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে মন্তব্য করেছেন, সংস্কারের পথে না-হাঁটলে গ্রিসকে ঋণ শোধে বাড়তি সময় দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। আইএমএফের একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে আগামী ৩ বছরে অর্থনীতির হাল ফেরাতে গ্রিসের ৫৫০০ কোটি ডলার ঋণের প্রয়োজন হবে।

প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের নেতৃত্বাধীন সরকার অবশ্য এই মুহূর্তে দাবি করছে, শর্ত মানতে রাজি না-হয়ে ত্রাণ ফিরিয়ে দিলে ঋণদাতাদের সঙ্গে আরও জোরের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারবে গ্রিস। সেই কারণেই সিপ্রাস আগাগোড়াই শর্ত মানার বিপক্ষে সম্মতি দিয়ে ‘না’ ভোট দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন জনগণকে। তবে নগদ খরচে রাশ টানতে সপ্তাহ জুড়ে ব্যাঙ্ক বন্ধের জেরে সাধারণ মানুষ ও পেনশনপ্রাপকদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে। তাই ‘না’ ভোটে সায় দেওয়া নিয়ে গ্রিকরা এখন আগের চেয়ে অনেকটাই দ্বিধায়।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন এ দিন বলেন, বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি এই সঙ্কটের জেরে ভারতের শেয়ার বাজার থেকে দূরে থাকে কি না, তার উপরই নির্ভর করছে ভারতে এর কতটা ছাপ পড়বে। উপরন্তু, ইউরোর দাম পড়লে তার তুলনায় টাকার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেলে মার খেতে পারে ইউরোপে ভারতের রফতানি।

এ দিকে, গ্রিস নিয়ে লগ্নিকারীদের মনে যে-শঙ্কা রয়েছে, তার জন্য এখন ভারতের শেয়ার বাজারে দীর্ঘ মেয়াদি লগ্নির সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে। ভারতের শেয়ার বাজারের রমরমার পিছনে যাদের প্রধান ভূমিকা, সেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি কিন্তু গ্রিসের সমস্যা নিয়ে বিশেষ ভাবে শঙ্কিত। যার ফলে তারা আপাতত লগ্নি থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে। উল্টে তাদের দেখা যাচ্ছে প্রধান বিক্রেতার ভূমিকায়। তবে গ্রিসের সমস্যা ক্রমশ গা সওয়া হয়ে যাচ্ছে বলেও শেয়ার বাজার মহল মনে করছে। যার ফলে এই দিন ইউরোপ-আমেরিকার বেশ কিছু সূচক উঠেছে। এশিয়ায় চিন ছাড়া বাকি সব দেশের সূচকের মুখ উপরের দিকেই ছিল। দু’দিন ওঠার পর এ দিন অবশ্য মুনাফার টাকা ঘরে তোলার জেরে সেনসেক্স পড়েছে ৭৫.০৭ পয়েন্ট।

Greece Referendum Alexis Tsipras Greece Prime minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy