মোদী সরকার জিএসটি চালু করেছিল ২০১৭-র ১ জুলাই। তার আট বছর পরেও বন্ধ হয়নি এই অভিন্ন পরোক্ষ কর ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্র ও বিরোধী-সহ বিভিন্ন পক্ষের চাপানউতোর। মঙ্গলবার কেন্দ্রের দাবি, এটি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে সফল পদক্ষেপ। তবে ব্যবসায়ীদের বড় অংশের অভিযোগ, জিএসটি নিয়ে শেষ হয়নি হয়রানি। বিশেষত ছোট ব্যবসায়ীদের। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর তোপ, আর্থিক অবিচার ও ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের নির্মম হাতিয়ার এটি। ১৮ লক্ষ ছোট সংস্থা বন্ধ হয়েছে। জিএসটি আইনের ধারাগুলি অ-বিজেপি রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুন্ন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মঙ্গলবারই সরকারি তথ্যে প্রকাশ, জুনের জিএসটি আদায় তার আগের মাসের ২.০১ লক্ষ কোটি থেকে কমে হয়েছে ১.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা। তবে ২০২৪-এর জুনের ১.৭৩ লক্ষ কোটি থেকে বেড়েছে। গত এপ্রিলে তা ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়ে নজির গড়েছিল।
এ দিন জিএসটিকে ‘ঐতিহাসিক সংস্কার’ তকমা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, বিশেষত উপকৃত হয়েছেন ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীরা। অর্থ মন্ত্রক জানায়, এটির লক্ষ্য ব্যবসার পরিবেশকে আরও সহজ করা এবং দেশের আর্থিক উন্নয়নে গতি আনা।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সুশীল পোদ্দারের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘জিএসটি মানতে গিয়ে সবচেয়ে বিপাকে ছোট শিল্প। জটিল আইন ব্যবসায়ীদের পক্ষে বোঝা কঠিন। হিসাববিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে গিয়ে ব্যয় বাড়ছে। আগে মেটানো করের টাকা ফেরত নিয়েও সমস্যা রয়েছে। কম্পোজিট প্রকল্পে তিন মাস অন্তর রিটার্ন জমা হয়। বাকিরা দেন এক মাস অন্তর। এই দুই শ্রেণির ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা করতে পারছেন না। বহু ক্ষেত্রে একই পণ্যে একাধিক কর বসে।’’ কর বিশেষজ্ঞ এবং ট্যাক্স কনেক্ট অ্যাডভাইসারি সার্ভিসেস-এর পার্টনার বিবেক জালানের দাবি, ‘‘পপকর্নেই তিনটি হারে কর নেওয়া হয়। সাধারণ পপকর্নে ৫%, সল্টেড ১২%, ক্যারামেল ১৮%। জটিলতা এড়াতে বহু ব্যবসায়ী সর্বোচ্চ হারে কর নিচ্ছেন। চাপে ক্রেতারা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)