প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
দেশের অর্থনীতিতে ঝিমুনি ভাব বছরখানেক ধরে প্রকট হলেও গোড়ায় মোদী সরকার তাতে কান দিতে চায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। এর মধ্যে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাস, বৃদ্ধিতে গতি আসবে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ ভারত, সৌদি আরবের মতো বড় উন্নয়নশীল দেশগুলির দেখানো পথের উপরেই নির্ভর করবে। মঙ্গলবার সৌদি আরবের যে বার্ষিক বিনিয়োগ সম্মেলনে এই বার্তা মোদী দিয়েছেন, সেখানেই রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্ণধার মুকেশ অম্বানী অবশ্য মেনেছেন ভারতের অর্থনীতিতে ‘সামান্য’ ঝিমুনির কথা।
সম্মেলনে মোদী বলেন, ‘‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার আরও বাড়বে। এর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ পাঁচ বছরে দেশের অর্থনীতিকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রার কথা মনে করিয়ে তিনি জানান, ভারত সহজে ব্যবসার পরিবেশের ক্রমতালিকায় উন্নতি করেছে। রাজনৈতিক স্থায়িত্ব, বাজারের আয়তনের জন্যই লগ্নির পক্ষে ভারত আদর্শ জায়গা।
আর মুকেশের কথায়, ‘‘হ্যাঁ, (ভারতের) অর্থনীতির গতি সামান্য কমেছে। কিন্তু আমার মতে, তা সাময়িক। আমি নিশ্চিত, গত কয়েক মাসে যে সব সংস্কারমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে তার ফল মিলবে।’’ অনেকের মতে সাম্প্রতিক কালে সম্ভবত এই প্রথম শ্লথ অর্থনীতি নিয়ে মুখ খুললেন রিলায়্যান্স কর্ণধার।
ভারতের মতোই সারা বিশ্বের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছে আইএমএফ। অনেকে বলছেন, শুল্ক যুদ্ধ-সহ নানা দ্বন্দ্বে ২০০৮ সালের মন্দার চেয়েও এ বারের ধাক্কা হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী। মোদীর দাবি,
বহুপাক্ষিক বাণিজ্যে অসাম্যের পরিণাম হল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। এই প্রেক্ষিতেই ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘সকলের বৃদ্ধির জন্য সমষ্টিগত পদক্ষেপ জরুরি।’’ মোদী জানান, পরিকাঠামোয় এশিয়ার দরকার বছরে অন্তত ৭০,০০০ কোটি ডলার লগ্নি। আর আগামী কয়েক বছরে ভারতে ঢালা হবে ১.৫ কোটি। পাশাপাশি, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে ২০২৪ সালের মধ্যে লগ্নি হবে ১০,০০০ কোটি। ব্যবসার পরিবেশের উন্নতির লক্ষ্যে মেক ইন ইন্ডিয়া, স্কিল ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচির কথাও তোলেন তিনি।
বৃদ্ধির পালে গতি নিয়ে ভারত ও সৌদি আরবের কথা বলতে গিয়ে মোদী এবং সৌদি আরবের রাজা সলমন বিন আব্দুলআজিজ ও তার পুত্র মহম্মদ বিন সলমন বিন আব্দুলআজিজের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন মুকেশ। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় হল নেতৃত্ব। দুই দেশই ভাগ্যবান যে তাদের নেতৃত্ব এই মুহূর্তে বিশ্বে অনন্য।’’ উল্লেখ্য, মাস দুয়েক আগে সৌদির অ্যারামকোকে তাঁর তেল ব্যবসার একাংশ বিক্রির কথা ঘোষণা করেছে রিলায়্যান্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy